ভিজিডি কার্ডে পাঁচ মাসের বরাদ্দ প্রাপ্তির স্বাক্ষর নিয়ে স্থানীয় উপকারভোগী নারীদের চাল দেওয়া হচ্ছে মাত্র তিন মাসের। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ভিজিডির চাল বিতরণ না করে তা বিতরণ করা হয়েছে ইউপি সদস্যের বাড়ি থেকে। এ চাল বিতরণের বিষয়ে জানেন না স্থানীয় প্রশাসন, সংশ্লিষ্ট তদারকি কর্মকর্তা ও এনজিও কর্মী।
আজ বুধবার ভিজিডির চাল বিতরণে অনিয়মের ঘটনাটি ঘটে ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার ২ নম্বর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডে হিম্মতনগর এলাকায়।
ভিজিডির সুবিধাভোগী হিম্মতনগর গ্রামের হালিমা খাতুন (৩৩), খোদেজা খাতুন (৪৪), বেগম (৫৪), নাছিমা খাতুন (৩৬), ফাতেমা খাতুনসহ (৪৪) আরও কয়েকজন জানান, ভিজিডি বরাদ্দের চাল উপকারভোগীদের মাঝে প্রতিমাসে বিতরণের নিয়ম থাকলেও তাদের মাঝে চার-পাঁচ মাস একত্রে বিতরণ করা হয়ে থাকে। সর্বশেষ গত বছর অক্টোবর মাসে ভিজিডির বরাদ্দকৃত চাল পান তারা।
নারীরা জানান, গত সময়ে ভিজিডির চাল ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বিতরণ করা হলেও রহস্যজনক কারণে আজ তা বিতরণ করা হয় ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শ্রী রবেন বিশ্বাসের বাড়ি থেকে। চাল বিতরণকালে ভিজিডি কার্ডে পাঁচ মাসের বরাদ্দ প্রাপ্তির স্বাক্ষর নিয়ে উপকারভোগীদের মাঝে বিতরণ করা হয় তিন মাসের চাল।
এ বিষয়ে ইউপি সদস্য শ্রী রবেন বিশ্বাস জানান, করোনাভাইরাস বিস্তাররোধে ইউনিয়ন পরিষদে জনসমাগম ঠেকাতে ইউপি চেয়ারম্যানের নির্দেশে নিজ ওয়ার্ড থেকে ভিজিডি চাল বিতরণ করেন তিনি।
পাঁচ মাসের বরাদ্দ প্রাপ্তির স্বাক্ষর নিয়ে তিন মাসের চাল বিতরণ করলেন কেন, এ প্রশ্নের জবাবে এই ইউপি সদস্য জানান, বাকি দুই মাসের বরাদ্দের চাল এক সপ্তাহের মধ্যে ভিজিডি কার্ডধারীদের মাঝে বিতরণ করে দেবেন।
২ নম্বর গৌরীপুর ইউনিয়নে ভিজিডির তদারকি কর্মকর্তা উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রাশিদ ও সমন্বয়কারী এনজিও কর্মকর্তা কাকন সরকার জানান, ইউপি সদস্যের বাড়ি থেকে চাল বিতরণের বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান ও সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্য তাদের জানাননি।
উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা সুলতানা বেগম আকন্দ জানান, উল্লেখিত ইউনিয়নে ভিজিডি চাল উত্তোলনের ডিও যথাসময়ে দেওয়া হয়েছে। বারবার তাগিদ দেওয়া সত্ত্বেও চেয়ারম্যান সাহেব নিয়মিত ভিজিডির চাল বিতরণের ব্যবস্থা করেননি।
সুলতানা বেগম আকন্দ জানান, ইউপি সদস্যের বাড়ি থেকে চাল বিতরণের বিষয়ে তাকে জানানো হয়নি।
ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন জানান, করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় ইউনিয়ন পরিষদে জনসমাগম ঠেকাতে ওয়ার্ড থেকে ভিজিডির চাল বিতরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি ও পরিষদের সব মেম্বাররা। এ নিয়ে স্থানীয়ভাবে সমালোচনা শুরু হওয়ায় ভিজিডি’র বরাদ্দের বাকি চাল ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বিতরণ করা হবে।
এ সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে জবাবে অনোয়ার হোসেন বলেন, ‘বৃহস্পতিবার থেকে পর্যায়ক্রমে ওয়ার্ড ভিত্তিক ভিজিডি কার্ডধারীদের মাঝে পাঁচ মাসের বরাদ্দকৃত চাল বিতরণ করা হবে। যাদের দুই মাসের বরাদ্দ বাকি রয়েছে তাদের চাল দিয়ে দেওয়া হবে।‘
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সেঁজুতি ধর জানান, সুষ্ঠুভাবে ভিজিডির চাল বিতরণ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট তদারকি কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন।
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply