মাত্র ২০(কুড়ি) মাস আগে মিয়ানমার থেকে নির্যাতিত হয়ে আসা প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়া হয়েছে বাংলাদেশে। সে সময়ে চরম অমানবিক পরিস্থিতির স্বীকার হয়ে আসা ঐসব জনগোষ্ঠীকে যতোটা সহজ সরল বা নিস্পাপ মনে হয়েছিলো, দিন গড়ানোর সাথে সাথে বাংলাদেশী মানুষের সে ধারণা পালটে দিয়েছে এই বাস্তুহারা রোহিঙ্গা নামের উগ্রবাদী উচ্ছৃঙ্খল জাতি।
বাংলাদেশে আশ্রয়, খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা এমনকি শিক্ষার ব্যবস্থা ও সম্পূর্ণ বিনামূল্যে, বিনা কষ্টে পাওয়ায় এই অসভ্য জাতির স্পর্ধা এবং লালসা দিন দিন বেড়েই চলছে। এই রোহিঙ্গারা যে কতো বড় বেঈমান জাতি তার অসংখ্য প্রমাণ দিয়েছে ওরা নিজেদের কর্মে। কলার মধ্যে ইয়াবা পাচার, পিয়াজের বস্তায় ইয়াবা পাচার এমনকি পবিত্র কোরআন শরিফ কেটে তার মধ্যেও ইয়াবা পাচার করতে গিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ধরা পরা, খুন, চুরি, ছিনতাইসহ অপরাধমূলক বিভিন্ন ঘটনা ঘটানোও রোহিঙ্গাদের জন্য নতুন নয়। জঙ্গিবাদ ও মাদক পাচারে রোহিঙ্গারা জড়িত সেই প্রথম থেকেই।
বাংলাদেশে আশ্রয় পাওয়ার পর সারা বাংলাদেশের মানুষ যখন ওদের জন্য বাড়ি বাড়ি ঘুরে ওদের পরিধানের সহায়তার জন্য বিভিন্ন পোশাক একত্রিত করে নিজেদের খরচে ট্রাক ভাড়া করে ওদের বিলিয়ে দিতে গিয়েছিলো তখন এই বেঈমান রোহিঙ্গারা মানুষের সেই ভালোবাসার দানকে ঘৃণা ভরে প্রত্যাখ্যান করে মাইলের পর মাইল ধরে রাস্তায় ফেলে দিয়েছিলো শুধুমাত্র অন্যের ব্যবহৃত কাপড় বলে। সেই ব্যবহৃত কাপড়ের সাথে মেশানো বাঙালির ভালোবাসা বা আবেগের কোন দামই ওদের কাছে ছিলোনা বা এখনো নেই।
কুতুপালং এর যে সব স্থানীয় বাসিন্দারা এই সব বেঈমান রোহিঙ্গা জাতিকে নিজের জমিতে ঘর তুলে থাকতে দিয়েছে সেই সব স্থানীয় বাংলাদেশী বাসিন্দাদের সাথে মারা মারি, মাদক সেবনে বাধা দেয়ায় স্থানীয় চিকিৎসকের চোখ তুলে ফেলা, মানুষ খুন করে টয়লেটের নোংরা গর্তে ফেলা সহ অসংখ্য অভিযোগ এবং প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে বিগত ২০(কুড়ি) মাস ধরেই। সেই সাথে এই সব বর্বর বেঈমান রোহিঙ্গারা শুধু কক্সবাজারের কুতুপালং এ সীমাবদ্ধ না থেকে ছড়িয়ে পরেছে সারা দেশেই। এমনকি কিছু অসাধু লোকজনের সহায়তায় বাংলাদেশের ভোটার লিস্টে ও নাম তুলে ফেলেছে। বানিয়ে ফেলেছে বাংলাদেশের ন্যাশনাল আইডি কার্ড। অনেকে পাসপোর্ট বানিয়ে বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে বিদেশে গিয়ে ওদের চারিত্রিক স্বভাব দেখিয়ে বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের সম্মান নষ্ট করছে।
এরা বাংলাদেশের পাহাড় বন সব ধ্বংস করে পরিবেশের ক্ষতিই করছেনা, বরং পুরো বাংলাদেশকেই এখন হুমকির মুখে ফেলে দিচ্ছে। তার উপর মাত্র ২০(কুড়ি) মাসে এই বর্বর রোহিঙ্গারা লক্ষাধিক সন্তান জন্ম দিয়েছে এবং আরো ৩৫ হাজারের মতো গর্ভবতী নারী সন্তান জন্মের প্রতিক্ষায় আছে। উদবাস্তুদের জন্মের এমন ভয়াবহ হাল হলে অচিরেই কক্সবাজার সহ সারা বাংলাদেশের উপর চরম দুর্বিপাক নেমে আসবে। এরা এদেশের সকল প্রকার আরাম আয়েস ভোগ করে এখন নিজেদের দেশে ফিরতে চায়না। বাংলাদেশেই চিরস্থায়ী ভাবে থেকে যাওয়ার বাহানা খুঁজছে। এবং যেহেতু রোহিঙ্গারা মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে এসেছে ২০(কুড়ি) মাস আগে সে কারণে কোন ভাবেই এই লক্ষাধিক শিশুদের সব গুলোকে যুদ্ধশিশুর তকমাও লাগানো যাবেনা। এবং অপেক্ষমান আরো ৩৫ হাজার শিশুকেও নয়। এখন ভাবনার বিষয় হচ্ছে রোহিঙ্গাদের জন্ম নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে কেন কোন রকম জোড়ালো পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছেনা ?
আমার জানামতে বিদেশ এবং বাংলাদেশের মিলিয়ে অর্ধশতাধিক এর বেশী এনজিও রোহিঙ্গাদের নিয়ে কাজ করছে। ওদের সার্বিক উন্নয়নের জন্য কোটি কোটি টাকা ডোনেশন পাচ্ছে সরকার সহ দেশী এবং বিদেশি দাতা সংস্থার কাছ থেকে। রোহিঙ্গাদের এমন অনিশ্চিত ঝুকিপূর্ণ জীবনে সন্তান জন্ম দিয়ে সেই সব নিস্পাপ শিশুদের পৃথিবীতে আনার ব্যাপারে কেন সে সব এনজিওর কর্মকর্তা বা কর্মীদের প্রতিবাদ দেখছি না ! নাকি ওসব এনজিও গুলোর প্রধান এজেন্ডা হচ্ছে বাংলাদেশ সহ সারা বিশ্ব থেকে রোহিঙ্গাদের নামে কোটি কোটি টাকা/ডলার এনে নিজেদের পকেট ভর্তি করা ! তাই যদি না হয় তাহলে রোহিঙ্গারা এতো সন্তান জন্মদানের উৎসাহ পায় কোত্থেকে ? যাদের নিজেদের স্থায়ী পরিচয়টুকু ও নেই তারা নতুন করে সন্তান প্রসবের সাহস পায় কি ভাবে ? এদের এখনি যে কোনো পদ্ধতিতে সম্ভব থামানো অতি জরুরী হয়ে দাঁড়িয়েছে। জন্মনিরোধক ওসুধ ব্যবহার বা নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা নিতে বাধ্য না করলে অচিরেই বাংলাদেশ অনেক ভয়ংকর সমস্যায় পতিত হবে।
এভাবে সহানুভূতি দেখিয়ে চুপ থাকলে এবং মিয়ানমার সরকারের উপর সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগ করে এসব রোহিঙ্গাদের ফেরত না পাঠালে ওদের মতো বর্বর জনসংখ্যার ভারে জন্মসূত্রে বাংগালীদের নিজ দেশে টিকে থাকা দুষ্কর হয়ে যাবে। রোহিঙ্গাদের আচার-আচরণ ধর্ম নিরপেক্ষ সাধারণ মুসলমানদের মতো নয়। ওরা হিংস্র এবং ধর্মের আড়ালে কট্টরপন্থী, তাই প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ার আগ্রহ ওদের নেই। নেই কৃতজ্ঞতা বোধ। এ অবস্থায় শুধুমাত্র মানবিকতার দোহাই দিয়ে এদের এভাবে আশ্রয় প্রশ্রয় দিয়ে আর কতো দিন চলবে ? সে প্রশ্নই এখন প্রতিটি সাধারণ মানুষের মনে। এবার ওদের নিজ ভূমে ফেরত পাঠিয়ে বাংলাদেশকে রোহিঙ্গা মুক্ত করার সময় এসেছে।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ কালীন সময়ে বাংলাদেশের মানুষ ও ইন্ডিয়ায় আশ্রয় নিয়েছিলো এবং যুদ্ধ শেষে তারা সবাই নিজ দেশে ফিরে এসেছে নিজ আগ্রহে। কারো মুখাপেক্ষী হয়ে থেকে যায়নি। নিজেদের আত্মসম্মান নিয়ে নিজ দেশে ফিরে আসার যে গৌরব সেটা বাঙালি খুব ভালো করে জানলেও রোহিঙ্গারা কিন্তু সেটা বোঝেনা বা বুঝতেও চায়না তার কারণ এদেশে তারা যা খুশী তাই করতে পারছে বলে। এতো গুলো সন্তান জন্মদেয়া তারই প্রমাণ।
এমতাবস্থায় রোহিঙ্গাদের মানবতার বাহানায় আরো বাড়তে দিলে বাংলাদেশের বিশেষ করে বৃহত্তর চট্টগ্রাম, কক্সবাজারের বাংলাদেশী প্রকৃত নাগরিকদের ভবিষ্যৎ চরম হুমকির মুখে ঠেলে দেয়া হবে। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর এই সন্তান জন্মদানের হিড়িক কোন সামান্য ব্যাপার ভাবার অবকাশ নেই। উন্নয়নের মডেল হিসেবে বাংলাদেশ বিশ্বের অনেক দেশের কাছেই এখন ঈর্ষার পাত্র, তাই বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের সন্তান জন্মদানে উৎসাহিত করা কোন বিদেশি ষড়যন্ত্রের অংশ কিনা সেটা গুরুত্বের সাথে ভাবার সময় এসেছে। আশ্রিত রোহিঙ্গাদের যে সন্তান বাংলাদেশের মাটিতে জন্ম নিচ্ছে ওরা বড় হয়ে জন্ম সূত্রে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব দাবী করবে, এবং এভাবেই ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা করে বড় ষড়যন্ত্রের ছক আঁকা হচ্ছে কিনা সেটা ভেবে এখনি ওদের ফেরত পাঠানো প্রয়োজন। অন্যথায় নিজ ভূমে পরবাসী হতে হবে কক্সবাজারবাসীকে।
রোহিঙ্গাদের সন্তান জন্মদানের এই অভাবনীয় উৎসাহ দেখে মনে হয় ওরা বাংলাদেশে বিপদে পরে আশ্রয়ের জন্য নয় বরং “অবকাশ যাপন” বা “মধু চন্দ্রিমায়” এসেছে। তাই এই বর্বর জনগোষ্ঠীকে আর কোন ভাবেই সহ্য করা উচিৎ হবেনা।
লেখক: সাংবাদিক
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply