টাঙ্গাইল প্রতিনিধিঃ টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের অবহেলায় বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্ব প্রান্তে যমুনা নদীর ভাঙনে প্রধান মন্ত্রীর দেওয়া উপহার এক মুক্তিযোদ্ধার বীরনিবাসসহ ২৩টি বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়া আরও ছয়টি বাড়ি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, সময়মতো পানি উন্নয়ন বোর্ড ভাঙন রোধে কাজ করলে এ অবস্থা হতো না। দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয়রা পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষকে ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানালেও গুরুত্বহীন ভাবে ব্যবস্থা নেবার আশ্বাস দিয়েই পার করেছে সময়।
আর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের গরিমসির কারনে গত শনিবার (৪ জুলাই) রাতে কালিহাতী উপজেলার গোহালিয়াবাড়ি ইউনিয়নের বেলটিয়া উত্তরপাড়ার বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব রক্ষাবাঁধ এলাকায় ভাঙন শুরু হয়।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের বঙ্গবন্ধু সেতু সাইট অফিস সূত্রে জানা যায়, সেতু কর্তৃপক্ষ বঙ্গবন্ধু সেতুপূর্ব প্রান্তে গোরিলাবাড়ি থেকে বেলটিয়া পর্যন্ত ৫০০ মিটার এলাকায় সেতু রক্ষা গাইড বাঁধের কাজ শেষ করা হয়েছে। এই বাঁধের শেষ প্রান্ত থেকেই ভাঙন শুরু হয়েছে। সেই সঙ্গে শনিবার মধ্য রাত থেকে রোববার ভোর পর্যন্ত ২৩টি বাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। আরও ছয়টি বাড়ি কিছু অংশ ভাঙন কবলিত হয়েছে।
বেলটিয়া উত্তরপাড়ার নুরুল ইসলাম, আব্দুস সামাদ জানান, মধ্য রাতে হঠাৎ ভাঙন শুরু হয়। নিমিষেই বাড়িগুলো নদী গর্ভে চলে যায়। অনেকে ঘরের আসবাবপত্র সরানোর সময়ও পায়নি।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের বঙ্গবন্ধু সেতু সাইট অফিসের সহকারী প্রকৌশলী এহসানুল কবীর পাভেল জানান, সম্প্রতি ৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে বঙ্গবন্ধু সেতু রক্ষা গাইড বাঁধের নির্মাণ কাজ শেষ করা হয়। বাকি অংশটুকু পানি উন্নয়ন বোর্ড কাজ করার কথা ছিল। কিন্তু তারা তা না করে কালক্ষেপণ করেছেন।
টাঙ্গাইলের পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সিরাজুল ইসলাম জানান, ভাঙন রোধে প্রাথমিকভাবে জিও ব্যাগ ফেলা হবে।
কালিহাতী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা শামীম আরা নিপা জানান, ভাঙনে ২৯টি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রত্যেক পরিবারকে নগদ দুই হাজার টাকা ও ২০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হয়েছে।
টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক মো. শহীদুল ইসলাম জানান, শুরুতেই পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিলে এ ভাঙন রোধ করা সম্ভব হতো। তবে ক্ষতিগ্রস্ত ২৩টি বাড়ির পরিবারদের সার্বক্ষণিক সরকারের পক্ষ থেকে সহায়তা করা হবে। আর এই ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে দ্রুতই নতুন করে ঘর তৈরি করার জন্য ঢেউটিন বিতরণ করা হবে। একই সঙ্গে যাদের ঘর বা জমি সব বিলীন হয়ে গেছে তাদের জন্য ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে।
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply