বরিশালে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে তরুণীদের সঙ্গে আপত্তিকর ছবি তুলে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার ভয়ভীতি দেখিয়ে এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার ঘটনায় তিন নারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
এই চক্র দীর্ঘদিন ধরে উচ্চপদস্থ সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের বিভিন্ন কৌশলে ফাঁদে ফেলে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছিল বলে জানায় পুলিশ। তবে লোকলজ্জায় অনেকেই বিষয়টি গোপন রাখতেন।
রোববার (১২ জুলাই) দুপুরে নগরীর লুৎফর রহমান সড়কে মেট্রোপলিটন পুলিশের উত্তর জোন কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানিয়েছেন উপ-কমিশনার (উত্তর) মো. খায়রুল আলম।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- সদর উপজেলার চরবাড়িয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ লামছড়ি এলাকার মাহিনুর বেগম (৪৫), নগরীর ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ভাটিখানা এলাকার ফেরদৌসি আক্তার রুমা (৩৩) ও বাকেরগঞ্জ উপজেলার নলুয়া এলাকার স্বর্ণা হালদার (২৮)। তিন নারীর বাড়ি বিভিন্ন এলাকায় হলেও বর্তমানে তারা ভাটিখানার কবির মঞ্জিলে ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে থাকতেন।
এ ঘটনায় ওই তিন নারীসহ চারজনের বিরুদ্ধে প্রতারণা অভিযোগে কাউনিয়া থানায় মামলা করা হয়েছে। মামলার পর বিকেলে আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
কাউনিয়া থানা পুলিশের ওসি আজিমুল করিম বলেন, ওই তিন নারী প্রতারক চক্রের সদস্য। তারা যাকে ফাঁদে ফেলবেন, তার সম্পর্কে আগে থেকেই খোঁজখবর নেন। এরপর তাকে ফাঁদে ফেলে কৌশলে টাকা হাতিয়ে নেন। এরই ধারাবাহিকতায় চক্রটি নগরীর ভাটিখানা এলাকার ফল ব্যবসায়ী হাসান খানকে ফাঁদে ফেলার পরিকল্পনা করে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী ১০ জুলাই হাসান খানের কাছ থেকে মাহিনুর বেগম এক কেজি আম কেনেন। এ সময় কৌশলে হাসান খানের ফোন নম্বর জেনে নেন তিনি। কিছুক্ষণ পর মাহিনুর বেগম ফোন দিয়ে হাসান খানকে বলেন, তার বিক্রিত আম পচা এবং তার আরও তিন কেজি আম প্রয়োজন। তিন কেজি আম নিয়ে ব্যবসায়ী হাসানকে ফ্ল্যাটে আসতে বলেন তিনি।
ওসি আজিমুল করিম বলেন, ব্যবসায়ী আম নিয়ে ফ্ল্যাটে যাওয়ার পর দরজা আটকে দেন মাহিনুর বেগম। সেখানে আগে থেকে অবস্থান করছিলেন স্বর্ণা, ফেরদৌসি ও নাদিম নামে এক যুবক। এরপর তারা হাসানকে ভয়ভীতি দেখিয়ে বিবস্ত্র করে মুঠোফোনে ছবি ধারণ করেন। ওই ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে হাসান খানের কাছে কাছে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন তারা। হাসান খান তাদের ১১ হাজার টাকা দেন। পরে বাকি টাকা পরিশোধের আশ্বাস দিয়ে সেখান থেকে মুক্ত হন হাসান খান। এ ঘটনা কাউনিয়া থানা পুলিশকে জানালে চক্রটিকে ধরতে তৎপরতা শুরু হয়।
ওসি আজিমুল করিম আরও বলেন, শনিবার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে প্রতারক চক্রের তিন নারীকে গ্রেফতার করা হয়। তবে ঘটনার দিন ফ্ল্যাটে থাকা সদর উপজেলার চরহোগলা গ্রামের নাদিম (২২) পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। নাদিমসহ প্রতারক চক্রের অন্যান্য সদস্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply