রিজেন্ট ও জেকেজির মতো কভিড-১৯ রোগীদের ভুয়া রিপোর্ট দিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক মেডিকেল টেকনোলজিস্ট। তার নাম রাজিব মিয়া। রোগীদের ভুয়া রিপোর্ট দেওয়ার বিষয়টি জানাজানি হলে অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। রাজিব সম্প্রতি বিশেষ বিবেচনায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে নিয়োগ পেয়েছেন। এর আগে তিনি আইইডিসিআরে অস্থায়ী ভিত্তিতে নমুনা সংগ্রহের কাজ করতেন। সেখানে তিনি রোগীদের নমুনা সংগ্রহের সময় টাকা নেওয়াসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়েন বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কভিড-১৯ সংক্রান্ত ১০টি পৃথক টেকনিক্যাল কমিটির সদস্য সচিব ডা. রেজওয়ানুল হক শামীম বলেন, রাজিব নামে টেকনোলজিস্ট অপরাধ করেছে। তার বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালককে (আইন) সভাপতি করে তিন সদস্যবিশিষ্ট ওই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ইতোমধ্যে কমিটি কাজ শুরু করেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সম্প্রতি রাজধানী ধানমন্ডির একটি বাসার ৫ থেকে ৬ জনের নমুনা সংগ্রহ করেন এই রাজিব। এরপর নমুনাগুলো অধিদপ্তরে জমা দেন। অধিদপ্তর থেকে নমুনাগুলো আইইডিসিআরে পাঠানো হয়। কয়েক দিন পরে ওই পরিবারের একজন ছাড়া বাকিদের নমুনা পরীক্ষার ফল আইইডিসিআর থেকে পাঠানো হয়। পরিবারের এক সদস্যের ফল না পেয়ে তারা রাজিবের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। রাজিব নিজে থেকে একটি ফল তৈরি করে নিজের ই-মেইল থেকে পাঠিয়ে দেন। পরবর্তী সময় আইইডিসিআর থেকে ফল পাঠানো হলে দেখা যায়, সেই ব্যক্তির শরীরে কভিড-১৯ ভাইরাস পাওয়া যায়নি। অর্থাৎ নেগেটিভ। অথচ রাজিবের পাঠানো ফলে লেখা পজিটিভ।
আইইডিসিআর থেকে ফল পাওয়ার পরে ওই পরিবারের পক্ষ থেকে রাজিবের পাঠানো ফলের বিষয়টি কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিতে আনা হয়। আইইডিসিআর কর্তৃপক্ষ নিরীক্ষা করে দেখে রাজিবের ফলাফলটি ভিত্তিহীন। তারা বিষয়টি অধিদপ্তরের নজরে আনে। এরপরই বিষয়টি নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
আইইডিসিআর ও অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, রাজিব মিয়া সম্প্রতি নিয়োগপ্রাপ্ত ১৪৫ জনের একজন। অধিদপ্তরের নিয়োগ তালিকায় যার নাম ১৯ নম্বরে। নিয়োগের জন্য অধিদপ্তরের পরিচালকের (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) তালিকায় তাকে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করা হয়। ওই তালিকা নিয়ে নিয়োগ বাণিজ্যেরও অভিযোগ ওঠে। তালিকা তৈরিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কতিপয় কর্মকর্তা এবং বঙ্গবন্ধু মেডিকেল টেকনোলজিস্ট পরিষদের কয়েকজন জড়িত থেকে জনপ্রতি ১০ থেকে ১২ লাখ করে টাকা লেনদেনের অডিও ভাইরাল হয়। রাজিব মিয়া বঙ্গবন্ধু মেডিকেল টেকনোলজিস্ট পরিষদের শেরপুর জেলা শাখার প্রচার সম্পাদক বলে জানা গেছে।
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply