টাঙ্গাইল প্রতিনিধিঃ রাস্তা উন্নয়নের ঠিকাদার ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের যোগসাজসে তাদের স্বার্থ হাসিলে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার চারাবাড়ি ব্রীজের মাত্র ১০০ গজ দক্ষিনে অবৈধ ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে।ফলে মারত্মক ঝুঁকি ও হুমকির মুখে পড়ছে জনগুরুত্বপূর্ণ ব্রীজটি। এ অবস্থা দেখার যেন কেউ নেই।
যে ককোন সময় ব্রীজের গোড়ার মাটি সরে, ব্রীজটির পিলার ধ্বসে ভেঙ্গে গিয়ে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ার আশংকা করছে এলাকাবাসী।
এর আগে ইতোমধ্যে ১৮ জুলাই ব্রিজটির বাম তীরের অ্যাপ্রোচ ধ্বসে পশ্চিমাঞ্চলের সাথে যানচলাচল বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েন চরাঞ্চলের কাতুলী, হুগড়া, কাকুয়া, মাহমুদনগর আর নাগরপুরের ভাড়রা ইউনিয়নে লক্ষাধিক মানুষ।
জানা যায়, ২০০৬ সালের ১ জুন এলজিইডির তত্ত্বাবধানে নির্মিত হয় ১৭০.৬৪২ মিটার চারাবাড়ি তোরাপগঞ্জ সড়কে ধলেশ^রী নদীর উপর এই ব্রিজ। চলতি বছরের বন্যায় ব্রীজের ৫০ গজ পশ্চিম রাস্তা ভেঙ্গে ঝুঁকির মধ্যে চলাচল করছে ওই সড়কের পথচারী ও যানবাহন। এমতাবসস্থায় রাস্তার পাড় মেরামতের জন্য ৩০ লাখ ১৮ হাজার টাকা বরাদ্দ করে টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ড।
এই বরাদ্ধে সাত হাজার বস্তা ফেলে সড়কটি চলাচলের উপযোগি করা হবে। কাজটির দায়িত্ব দেওয়া হয় ওই এলাকার মেসার্স মিতু এন্টার প্রাইজের স্বত্তাধিকারী ইমরান হোসেনকে। এর আগে ওই ব্রীজের অ্যাপ্রোচ ভরাটের কাজটিও পেয়েছিলো এই একই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু সেই অ্যাপ্রোচ ভরাটেও প্রতারনা ও অনিয়মের প্রশ্রয় নিয়েছিলো ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ওই ব্রীজের ১০০ গজ দক্ষিন পাশ থেকে দুটি নৌকায় অবৈধ ড্রেজার বসিয়ে আরেকটি নৌকায় বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। সেখানে তিনজন শ্রমিক কাজ করছেন। ব্রীজের পশ্চিম পাশে প্রায় ৩০ জন শ্রমিক বালু বস্তা ভরাটের কাজ করছে। পাশেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের সার্ভেয়ার রুবেল মিয়া দাড়িয়ে তদারকি করছেন।
স্থানীয় শামসুল হক ও উজ্জল মিয়া জানান, ব্রীজের পাশ থেকে বালু উত্তোলন করে রাস্তার কাজ করা হচ্ছে। এক দিকে রাস্তার উন্নয়ন হলেও অন্যদিকে ব্রীজের জন্য চরম ক্ষতি হচ্ছে। যেকোন মুহুর্তেই ব্রীজ ভেঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হতে পারে। তারা প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।
সিএনজি যাত্রী আমিনুল ইসলাম বলেন, ঠিকাদারের লাভের জন্য ব্রীজের ক্ষতি করে রাস্তার উন্নয়ন করছেন। এমন উন্নয়ন আমরা চাইনা। অন্য কোন জায়গা থেকে বালু এনে রাস্তার পাশে বস্তা ফেলার দাবি করেন তিনি।
ট্রাক চালক আব্দুল হাই জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের যোগসাজসে যেভাবে ব্রীজের খুব কাছ থেকে অবৈধ ড্রেজারের মাধ্যমে বালু তোলা করায় হুমকির মুখে রয়েছে ব্রীজটি। যেকোন সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সার্ভেয়ার রুবেল মিয়া জানান, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কোথা থেকে বালু এনে ভরাট করবে সেটা তাদের ব্যাপার। ব্রীজ হুমকির মুখে থাকলেও তাদের কিছু করার নাই।
এ বিষয়ে মেসার্স মিতু এন্টার প্রাইজের স্বত্তাধিকারী ইমরান হোসেনের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।
টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সিরাজুল ইসলাম জানান, ব্রীজের দক্ষিন পাশে চর পড়ে আছে। চরটি কাটলে ব্রীজের জন্য ভাল হবে। এতে ব্রীজের কোন ক্ষতি হবে না বলে তিনি জানান।
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply