ভালুকা (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি: ভালুকা উপজেলার মল্লিকবাড়ী বিট অফিসের বন প্রহরী পলাশ মিয়ার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে। সে বিগত ২ বছর যাবত এ বিটে দায়িত্বে থাকার পর হতেই এ চাঁদা আদায় করছেন। এতে অতিষ্ট হয়ে পড়েছে এলাকাবাসী। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে অভিযোগ করেও কোন পরিত্রাণ পাইনি স্থানীয়রা।
জানাযায়, দুই বছর আগে আঙ্গারগাড়া বিট অফিস হতে সাব অফিস হিসেবে মল্লিকবাড়ী বিট অফিসের নামে একটি ভাড়া বাসা রাখা হয়। তারপর থেকেই সেখানে স্বপরিবারে থাকেন বন প্রহরী পলাশ মিয়া। পলাশ এই বিটে আসার পর হতেই ভালুকা টু সখিপুর রোডে চলাচল করা লাকড়ীর গাড়ী, বাঁশের গাড়ী ও ফার্ণিচারের গাড়ী হতে ২শত থেকে এক হাজার টাকা চাঁদা আদায় করার নিয়ম করে। কোন গাড়ী চাঁদা না দিলে ওই গাড়ী আটকিয়ে রাখা হয়। তার এ কাজে সহায়তা করার জন্য স্থানীয় কয়েকজনকে নিয়োগ দেয় সে। পলাশ মিয়া উপস্থিত না থাকলে তারা টাকা উত্তোলন করেন। পলাশের এই টাকা তুলা এখন অনেকটা ওপেন সিক্রেট। বাজারের অনেক ব্যবসায়ী এই প্রতিবেদকের সাথে কথা বলে এ তথ্য জানিয়েছে। এই অফিসে অন্য কোন কর্মকর্তা থাকেন না। তাই পলাশ একাই এখানে থেকে এই রাজত্ব করছে।
এ দিকে মল্লিকবাড়ী, নয়নপুর, গোবুদীয়া ও ভায়াবহ এলাকায় স্থানীয়রা বাড়ী করলে সেখান হতে টাকা নিয়ে বাড়ী করার অনুমতি দেয় এই পলাশ । কেউ টাকা দিতে না চাইলে তাঁকে মামলা সহ বিভিন্ন হয়রানী করার হুমকি দেয়।
এ বিষয়ে ফার্নিচার ব্যবসায়ী শামীম মিয়া মোবাইলে জানায়, ‘আমি সখিপুর এলাকা হতে ফার্নিচার কিনে এনে এলাকায় ব্যবস্ াকরি। মল্লিকবাড়ী বাজার পার হতে পলাশ কে ৫শত থেকে এক হাজার টাকা দিতে হয়। টাকা না দিলে সে গাড়ী আটকিয়ে রাখে।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে মল্লিকবাড়ী বাজারের একজন হোমিও চিকিৎসক মুঠোফোনে জানায়, ‘আমি আমার জমিতে বাড়ী করার সময় পলাশ মিয়া এই জমি বন গেজেটেট বলে বাধাঁ দেয়। আমি তার কাছে গেলে সে অনেক টাকা চায়। আমি প্রথমে তাকে ৫ হাজার টাকা দেই। পরে আরও টাকার জন্য আমার কাছে সে একাধিকবার আসে। টাকা না দেওয়ায় নানারকম হুমকি দিয়েছে সে।
মল্লিকবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এস এম আকরাম হোসেন মুঠোফোনে জানান, ‘গত ৪/৫মাস আগে স্থানীয় কয়েকজন আমার আগে এই টাকা তুলার ব্যাপারে অভিযোগ দিলে আমি খোঁজ নিয়ে জানতে পারি পলাশ নামের একজন বন প্রহরী টাকা তুলে। পরে আমি বন্ধ করার ব্যাপারে বন বিভাগের অনেকের সাথে কথা বলছিলাম। কয়েকদিন মনে হয় বন্ধ ছিলো। এখন আবার চালু হয়েছে কিনা আমার জানা নাই।’
বন প্রহরী পলাশ মিয়ার সাথে এ ব্যাপারে কথা বললে তিনি জানান, ‘আমি কোন বক্তব্য দিবোনা আপনি যা পারেন করেন।’
মানুষকে মামলা দেওয়ার হুমকি দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এখনো কোন মামলা দেই নাই। আমি চলে যাওয়ার পর টের পাবেন পলাশ মিয়া কি জিনিস।’
মল্লিকবাড়ী বিট অফিসের বিট অফিসার মোস্তাফিজুর রহমান মুঠোফোনে জানান, ‘পলাশের টাকা তুলার ব্যাপারে আমরা জানি না। যাদের কাছ থেকে টাকা নেই তাদেরকে আমাদের কাছে লিখিত অভিযোগ করতে বলেন আমরা ব্যবস্থা নিব। আর ওখানে আমাদের কোন বিট অফিস নাই। একটা রুম ভাড়া করে সে থাকে। আর ও বিটে আমাদের কোন বনভূমি নাই।’
ভালুকা রেঞ্জের রেঞ্জ অফিসার মোজাম্মেল হক জানান, ‘আমি খোঁজ খবর নিয়ে ব্যবস্থা নিব।’
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply