নিজস্ব প্রতিবেদকঃ সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলার আসামি পুলিশের ৪ সদস্যকে রোববার দ্বিতীয় দফায় রিমান্ডে নেওয়া হচ্ছে। তারা হচ্ছেন উপপরিদর্শক লিটন মিয়া, কনস্টেবল সাফানুর করিম, কামাল হোসেন ও আবদুল্লাহ আল মামুন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা র্যাবের সিনিয়র এএসপি খাইরুল ইসলাম জানান, এই পুলিশ সদস্যদের অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দ্বিতীয় দফায় ২৪ আগস্ট রিমান্ডের আবেদন করা হয়। আদালত ৪ দিন রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। রোববার তাদের রিমান্ডে নেওয়ার পরিকল্পনা করছে র্যাব।
এর আগে পুলিশের অপর ৩ সদস্য ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, পরিদর্শক লিয়াকত ও এএসআই নন্দ দুলালকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তাদের মধ্যে প্রদীপকে চার দফায় ১৫ দিন এবং লিয়াকত ও নন্দ দুলাল রক্ষিতকে ৩ দফায় ১৪ দিন করে রিমান্ডে নেওয়া হয়। লিয়াকত ও নন্দ দুলাল ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিলেও প্রদীপ রাজি হননি। তারা সবাই এখন কারাগারে রয়েছেন। এ পর্যন্ত ৮ জন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তদন্ত কর্মকর্তা জানান, এই ঘটনায় প্রত্যক্ষদর্শী এবং স্বাক্ষীদের জবানবন্দিও ১৬১ ধারায় রেকর্ড করা হবে।
এদিকে ওসি প্রদীপ এবং পরিদর্শক লিয়াকতের একটি ভিডিও ক্লিপ ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। ওই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে প্রদীপ ও লিয়াকত প্রিজন ভ্যানে বসে মোবাইল ফোনে কথা বলছেন। তারা ঊর্ধ্বতন কোনো কর্মকর্তাকে জানাচ্ছেন রিমান্ডে তাদের ওপর অমানবিক নির্যাতন করা হয়েছে। র্যাবের ৩ কর্মকর্তার নামও জানিয়েছেন প্রদীপ। যিনি ভিডিওটি ধারণ করেছেন তাকে উদ্দেশ্য করে নির্যাতনের কিছু চিহ্নও দেখিয়েছেন তারা। তাদের ওপর নির্যাতনের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা এবং শক্তভাবে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধও জানিয়েছেন ওসি প্রদীপ।
এই বিষয়ে তদন্ত কর্মকর্তার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, মামলার আসামিরা অনেক কথা বলতে পারেন। অভিযোগও করতে পারেন। স্বাভাবিক নিয়মে এবং আইন-কানুন মেনে মামলার তদন্ত কার্যক্রম এগিয়ে চলছে। এখানে মামলার স্বাক্ষী এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের জবানবন্দিও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
র্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ বলেন, আসামিদের এই ধরনের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। রিমান্ডে নেওয়ার আগে ও পরে আসামিদের হাসপাতালে নিয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। সেখানে ডাক্তাররা তাদের ভালোভাবে পরীক্ষা করেছেন।
কক্সবাজারে র্যাব-১৫ এর একজন কর্মকর্তা সমকালকে বলেছেন, প্রদীপ ও লিয়াকতের ওই ভিডিও ক্লিপ তাদের নজরে এসেছে। এখানে র্যাবের ৩ জন কর্মকর্তার নাম উল্লেখ করে অভিযোগ করা হয়েছে। কীভাবে ২ জন আসামি প্রিজন ভ্যানে বসে ভিডিওবার্তা ফেসবুকে দিতে পারেন বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
ওসি প্রদীপ ও লিয়াকতকে কক্সবাজার কারাগারে ডিভিশন দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন জেলসুপার মোকাম্মেল হোসেন। তিনি বলেন, কারাবিধি মতে প্রথম শ্রেণির সরকারি কর্মকর্তা ডিভিশন পেয়ে থাকেন। তবে এই বিষয়ে ওসি প্রদীপ ও লিয়াকতের পক্ষে আদালতের কোনো নির্দেশনা এখনও কারাগারে আসেনি।
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply