এম শহিদুল ইসলাম, টাঙ্গাইল প্রতিনিধিঃ পড়ার টেবিলে মল ত্যাগ করে মোরগ। তা দেখে বাড়ির মালিক মোরগটি জবাই করে। পরে মোরগটি মালিককে ডেকে এনে দিয়ে দেয়।
এ ঘটনায় সালিশি বৈঠকের মাধ্যমে মোরগের ক্ষতিপূরণ বাবদ ২০ হাজার টাকা জরিমানা ধার্য করা হয়েছে। ঘটনাটি এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার দপ্তিয়ার ইউনিয়নের ভুগোলহাট গ্রামে। এ ব্যাপারে আদালতে গেলো ২১ সেপ্টেম্বর একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, গেল ২৫ আগস্ট উপজেলার ভুগোলহাট গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক বাবুর একটি মোরগ প্রতিবেশী আব্দুল হালিমের ঘরে ঢুকে কলেজপড়ুয়া মো. রাকিবের পড়ার টেবিলে মল ত্যাগ করে। এ সময় রাকিব মোরগটির ওপর ঢিল ছুড়লে মোরগটি মারা যাওয়ার উপক্রম হয়। পরে মোগরটি মরে যেতে পারে এই ভেবে জবাই করে আব্দুর রাজ্জাক বাবুকে ডেকে মোরগটি দিয়ে দেন এবং তাদের মধ্যে এ নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। পরে আব্দুর রাজ্জাক বাবু সপরিবারে মোরগটি রান্না করে খান।
এ নিয়ে আব্দুর রাজ্জাক বাবু স্থানীয় মাতব্বরদের কাছে মোরগ মারার বিচার চান। পরে গেল ২৮ আগস্ট এলাকার মাতব্বররা সাত্তারের বাড়িতে আব্দুল কুদ্দুস মিয়ার সভাপতিত্বে সালিশি বৈঠক বসে। বৈঠকে নিজেদের প্রভাব খাটিয়ে একটি মোরগের দাম ধার্য করা হয় ২০ হাজার টাকা ও সেইসঙ্গে কলেজপড়ুয়া রাকিবকে দেয়া হয় শারীরিক শাস্তি। ওই সালিশি বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন আব্দুল হাই, ফজলু শেখ, মো. কফিল উদ্দিন ও জয়েদ আলী। জুড়ি বোর্ডের সদস্য ফজলু শেখ, আব্দুস সামাদ, সামিম, কোরবান আলী ও মোতালেবের সিদ্ধান্তে এই গুরুদণ্ড দেয়া হয়। ওই বৈঠকে রাকিবের বাবা আব্দুল হালিম নিরুপায় হয়ে নগদ পাঁচ হাজার টাকা দিয়ে মাতব্বরদের কাছে ক্ষমা চান। কিন্তু প্রভাবশালী মাতব্বররা ক্ষমা না করে বাকি টাকার জন্য তারিখ দেন। মাতব্বরদের চাপের কারণে কোনও উপায় না থাকায় গেল চার সেপ্টেম্বর ধারদেনা করে আরও তিন হাজার টাকা জয়েদ আলী ও কুদ্দুসের হাত দিয়ে পুনরায় আব্দুল হালিম তাদের কাছে ক্ষমা চান। মোট আট হাজার টাকা পেয়েও সন্তুষ্ট হন না মাতাব্বররা। বাকি ১২ হাজার টাকার জন্য হালিমের পরিবারকে চাপ প্রয়োগ এবং ভয়ভীতি দেখাতে শুরু করে। কোনও উপায় না পেয়ে আব্দুল হালিম গেলো ২১ সেপ্টেম্বর টাঙ্গাইল আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন।
মোরগের মালিক আব্দুর রাজ্জাক বাবু আরটিভি নিউজকে জানান, দুই দফায় জরিমানার আট হাজার টাকা তিনি পেয়েছেন। বাকি ১২ হাজার টাকা জন্য হালিমের পরিবারকে কোনও প্রকার চাপ প্রয়োগ করা হয়নি।
ভুক্তভোগী আব্দুল হালিম জানান, ছেলে ভুল করে প্রতিবেশী আব্দুর রাজ্জাকের একটি মোরগকে আঘাত করেছে। মালিককে ডেকে এনে তার মোরগটি বুঝিয়ে দেন। পরে মোরগ মালিক বাবু তার ছেলের বিরুদ্ধে মাতব্বরদের কাছে বিচার চান। বিচারে তার ২০ হাজার টাকা জরিমানা ও ছেলেকে শারীরিক শাস্তি দেয়া হয়। দুই দফায় আট হাজার টাকা দিয়ে ক্ষমা চেয়েও রেহাই পাননি। বাকি ১২ হাজার টাকার জন্য তাকে বিভিন্নভাবে চাপ দেয়া হচ্ছে।
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply