রাকিব হোসেন, শরীয়তপুর জেলা প্রতিনিধিঃ শরীয়তপুর জেলার সদর উপজেলায় সিফাত (১৮) নামের এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পালং থানা পুলিশ। বৃহস্পতিবার (১অক্টাবর) রাত ৯ টার দিকে চিতলিয়া ইউনিয়নের ঝাউচর গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে মরদেহটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। সিফাত ওই গ্রামের মফিজ মালের ছেলে। সিফাত মাদারীপুরের খাসেরহাটে একটি হোটেলের কর্মচারী ছিলেন। সিফাতের মৃত্যু নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্য ও রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে।
সিফাতের মা সেলিনা বেগম দুসস কে জানান, সিফাত গতকাল মাদারীপুর খাসের হাট কর্মস্থল থেকে বাড়ি আসে। আজ দুপুরের খাবারের জন্য ডাকডাকি করলেও সে খাবার খায়নি। বিকাল তিনটার দিকে সিফাত তাদের ঘরের বারান্দার খাটের ওপর শুয়ে ছিলো। সাড়ে তিনটার দিকে মা সেলিনা বেগম সিফাতকে ডাকতে গিয়ে দেখে সিফাত কোন সাড়াশব্দ করছেনা। অচেতন অবস্থায় পড়ে রয়েছে।
সিফাতের মা সেলিনা বেগমের দাবি সিফাত স্টক করে মারা গেছে। তবে সিফাতের মায়ের এমন দাবিকে অনেকেই সন্দেহের চোখে দেখছেন। ডাক্তার ও পুলিশ বলছেন, ময়না তদন্ত হলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।
স্থানীয়রা জানান, সিফাত বাড়ি এসে তার পরিবারের কাছে দশ হাজার টাকা দাবী করেন। পরিবার তাকে টাকা দিতে রাজি হয়নি। টাকা না পেয়ে সিফাত তার বড় ভাই আল আমিনের মোবাইল ফোন বিক্রি করবে বলে নিয়ে যেতে চাইলে আল আমিন ও তার চাচতো ভাইয়েরা মিলে সিফাতকে দৌড়ে ধরে মোবাইল ফোন উদ্ধার করে এবং সিফাতকে মারধর করে। পরে ঘরের মধ্য থেকে সিফাতকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। স্থানীয়রা সন্দেহ করছেন, হয় মারধর করার কারনে সিফাত মারা গেছেন অথবা মারধর করায় সিফাত নিজেই গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।
শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের সুত্রে জানা যায়, বিকাল ৫টার দিকে সিফাতকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে যান তার স্বজনরা। এসময় দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. সাইয়েদা নাসরিন সিফাতকে মৃত ঘোষনা করেন। পরে সিফাতের মরদেহ তার স্বজনরা বাড়ি নিয়ে যান।
খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এসএম মিজানুর রহমান, পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম উদ্দিন সহ পুলিশের একটি দল রাত ৭টার দিকে সিফাতের বাড়িতে যান। তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন, পরিবারের লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ ও আশপাশের লোকজনের কাছ থেকে বিস্তারিত জানার পর রাত ৯টার দিকে সিফাতের মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠান।
পালং মডেল থানার (তদন্ত) ওসি আশ্রাফুল বলেন, সুরতহাল রিপোর্টে সিফাতের শরিরে কোন আঘাতের চিন্হ পাওয়া যায়নি। মৃত্যুর বিষয়টি স্থানিয়দের মধ্যে রহস্য বিরাজমান তাই ময়না তদন্তের জন্য মরদেহ শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়না তদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী পরবর্তীতে যদি কোনো তথ্য পাওয়া যায় তাহলে সেখানে ভুক্তভোগীদের আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply