এম শহিদুর ইসলাম, টাঙ্গাইল প্রতিনিধিঃ টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার চৌরাস্তায় নাগরপুর-সলিমাবাদ সড়কে ব্রিজের নির্মানের জন্য ঠাকাদারকে বেধে দেওয়া সময় সীমা শেষ হলেও শুরুই হয়নি নির্মান কাজ। ফলে যাতায়াতে চরম দূর্ভোগে রয়েছে এলাকার জনসাধারন।
জানা যায় কাজ উদ্বোধনের ১০ মাস পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত শুরুই হয়নি ব্রিজটির নির্মান কাজ। ফলে চরম দূর্ভোগে পোহাচ্ছেন এ রাস্তা দিয়ে চলাচলকারী হাজার হাজার ভুক্তভোগির। চলতি বছরের ১৫ নভেম্বর কাজটি শেষ হওয়ার কথা। অথচ কাজটি শুরু না করেই পূরাতন ব্রিজটি ভেঙ্গে নিয়ে যায় ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। মানুষ ও যান চলাচলের জন্য মানসম্মত বিকল্প ডাইভারশনের রাস্তা না করায় দূর্ভোগ যেন আরও বেড়েছে।
ডাইভারশনের অভাবে বাঁশের সাকোর উপর দিয়ে জীবনের ঝঁুকি নিয়ে চলাচল করছে বেকড়া, সলিমাবাদ ও পার্শ্ববর্তী চৌহালী উপজেলার জনগণ। চুক্তি অনুযায়ী কাজ চলাকালীন সময়ের জন্য একটি ৪০ মিটার ইট সোলিং এর ডাইভারশন তৈরী করে কাজটি শুরুর কথা থাকলেও সরেজমিনে গিয়ে বাঁশের সাকো ছাড়া আর কিছুই দৃশ্যমান হয়নি।
জানা যায়, ২০১৯ সালের ১৬ ডিসেম্বর টাঙ্গাইলের আমঘাট রোডের মেসার্স আলিফ এন্টারপ্রাইজ ১ কোটি ৭ লাখ ২৭ হাজার ৯ শত ৫৭ টাকা ৯৬ পয়সায় ৫৪ মিঃ চেইনইনএজ ১৫ মিঃ দীর্ঘ আরসিসি গার্ডার ব্রীজটির কার্যাদেশ পায়।
চুক্তি অনুযায়ী ২০২০ সালের ১৫ নভেম্বর কাজটি শেষ করার কথা। কিন্তু চুক্তির মেয়াদ শেষ হতে আর মাত্র একমাস হাতে থাকলেও এখন পর্যন্ত ব্রিজের কোন কাজই শুরু করতে পারেনি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।
এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি কাজটি পেয়েই কোন ডাইভারশন নির্মান না করেই, ঐ স্থানের পুরাতন ব্রিজটি ভেঙ্গে বিক্রি করে দেয়। পরে এলাকাবাসীর চাপের মুখে তারা কিছু মাটি ফেলে পায়ে হাটার ব্যবস্থা করে দেয়। সেটিও বন্যার সময় ভেঙ্গে গেছে।
এ সড়ক দিয়ে প্রতিনিয়ত চলাচলকারী আবু বকর বলেন, আমরা অসুস্থ রোগী নিয়ে সব সময় চিন্তায় থাকি। বিকল্প রাস্তা না করেই পুরাতন ব্রিজটি ভেঙ্গে ফেলায় আমরা চরম ভোগান্তির মধ্যে আছি। এই সমস্যা থেকে দ্রুত পরিত্রাণ চাই আমরা।
অপর পথচারী জুয়েল মিয়া বলেন, কাজটি আগামী দেড় মাসে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখনো শুরুই হয়নি। আদৌ ব্রিজের নির্মাণ কাজ নির্দিষ্ট সময়ে শেষ হবে কিনা তা নিয়ে আমরা শংকিত।
পরিবহন শ্রমিকরা বলেন, ব্রিজটির কাজ শেষ না হওয়ায় এবং ডাইভারশন না থাকায় আমরা সরাসরি চলাচল করতে পারি না ফলে আমাদের আয় কমে গেছে, যাত্রীদের খরচ বেড়েছে। মালামাল পরিবহন ও রোগী নিয়ে দূর্ভোগের শেষ নেই। দ্রুত ডাইভারশন করে যথা সময়ে ব্রিজের কাজটি শেষ হলে আমাদের সকলের উপকার হয়।
ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মেসার্স আলিফ এন্টারপ্রাইজের সত্বাধিকারী মনিরুজ্জামান খান মিন্টু এর সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ব্রিজের পাশের বিদ্যুতের খুঁটি সরাতেই আমাদের ৩ মাস সময় লেগেছে। এছাড়া করোনা মহামারী ও বন্যার কারনে কাজটি শুরু করতে আমাদের বিলম্ব হয়েছে। আমরা ডাইভারশন করার জন্য মাটি ফেলে ছিলাম কিন্তু বন্যায় ক্ষতি হয়েছে। বন্যার পানি কমলেই আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজটি শেষ করে দিব।
এ বিষয়ে নাগরপুর উপজেলার নির্বাহী প্রকৌশলী মাহাবুব আলমকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি গতানুগতিক বক্তব্য দিয়ে বন্যার উপর দায় চাপিয়ে বলেন আমরা ঠিকাদারকে কাজটি দ্রুত শেষ করার জন্য চাপ দিচ্ছি। বর্তমানে বন্যার কারনে পাইলিং করা সম্ভব হচ্ছেনা। তাছাড়াও বন্যার আগে নির্ধারিত পাথর না পাওয়ায় এবং যথা সময়ে পাইলিং করতে না পারায় কাজটি পিছিয়ে গেছে। তবে আশাকরি দ্রুতই কাজটি শেষ হবে।
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply