এম শহিদুল ইসলাম, টাঙ্গাইল প্রতিনিধিঃ টাঙ্গাইলের বাসাইলে কয়েক দফার বন্যার দুর্ভোগ কাটতে না কাটতেই নতুন করে আবাও প্রায় ৩০ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। ফলে নতুন করে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন এসব এলাকার মানুষ।
এদিকে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় নতুন করে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ কারণে আতঙ্কে রয়েছেন নিম্নাঞ্চলের মানুষগুলো।
কয়েক দফার বন্যার দুর্ভোগ কাটতে না কাটতেই আবাও নতুন করে যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়ে জেলার পৌংলী, বংশাই, লাঙ্গুলিয়া ও ঝিনাই নদীর বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে পানি প্রবেশ করে জেলার অপেক্ষাকৃত নিচু এলাকা বাসাইল উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে করে উপজেলার ফুলকী, কাশিল, কাউলজানী, কাঞ্চনপুর, বাসাইল সদর, হাবলা ইউনিয়ন ও বাসাইল পৌরসভার প্রায় ৩০ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়েছে পড়েছে। ভেঙে পড়েছে রাস্তা-ঘাট, ব্রিজ, কালভার্ট। ফলে উপজেলা সদরের সঙ্গে ৬টি ইউনিয়নের সড়কপথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে এসব এলাকার মানুষ চরম দুর্ভোগে রয়েছে।
উপজেলার বন্যা দুর্গত এলাকার মধ্যে রয়েছে-কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের কাঞ্চনপুর, আদাজান, পূর্বপৌলী, সিঙ্গারডাক, সৈদামপুরসহ প্রায় ১৫টি গ্রাম, ফুলকী ইউনিয়নের ময়থা, করটিয়াপাড়া, আইসড়া, একঢালা, বালিয়া, তিরঞ্চসহ প্রায় ২০টি গ্রাম, বাসাইল পৌরসভার মাইজখারা, বর্ণিকিশোরী, বাসাইল দক্ষিণপাড়া, কাউলজানী ইউনিয়নের বাদিয়াজান, ডুমনীবাড়ী, বার্থা, কল্যাণপুর, কাউলজানী, সেহরাইল, কাশিল ইউনিয়নের বাথুলীসাদী, বাঘিল-ফুলবাড়ী, বাসইল সদর ইউনিয়নের রাশড়া, মিরিকপুর, নাইকানীবাড়ী ও হাবলা ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন কাঁচা-পাকা সড়কও ডুবে গেছে। ফলে একটি পৌরসভা ও ৬টি ইউনিয়নের প্রায় ৩০ হাজার পরিবার নতুন করে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। চরম বিপাকে পড়েছেন এসব এলাকার পানিবন্দি মানুষগুলো।
কাঞ্চনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মামুনুর রশিদ খান বলেন, ‘বাসাইল সদরের সঙ্গে কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের যোগাযোগ একেবারেই বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। নৌকা ছাড়া যাতায়াতের বিকল্প কোনও পথ নেই। ফলে এই ২২টি গ্রামের মানুষগুলো চরম বিপাকে পড়েছেন।’
উপজেলা প্রকৌশলী রোজদিদ আহমেদ বলেন, ‘এবারের বন্যায় বাসাইলে ২টি সেতু ভেঙে গেছে। এছাড়াও ৪-৫টি সেতু ও বিভিন্ন কাঁচা-পাকা সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আর নতুন করে পানি ঢুকে পড়ায় আরও একটি কালভার্ট ভেঙে গেছে। এছাড়াও প্রায় ৭০ কিলোমিটার কাঁচা ও প্রায় ২০ কিলোমিটার পাকা সড়ক ইতোমধ্যেই বন্যার পানিতে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় নতুন করে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানদের কাছে ক্ষয়ক্ষতির তালিকা চাওয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত কি পরিমাণ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন সেটি বলা যাচ্ছে না। বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন করা হবে।’
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী অলিদ ইসলাম বলেন, ‘বাসাইল নিচু এলাকা। নতুন করে পানি প্রবেশ করে বাসাইল সদরের সঙ্গে সকল ইউনিয়নের সড়কপথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রায় এক লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে দুর্ভোগে রয়েছে। ইতোমধ্যেই আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। পানি আরও বৃদ্ধি পেলে মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে নেয়া হবে।’
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply