এম শহিদুল ইসলাম, টাঙ্গাইল প্রতিনিধিঃ আসন্ন টাঙ্গাইল সদর উপজেলার ঘারিন্দা ইউনিয়ন পরিষদ উপনির্বাচনের ভোটযুদ্ধে নেমেছেন প্রয়াত দুই চেয়ারম্যানের ছেলে। আগামী ২০ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হবে ঘারিন্দা ইউনিয়ন পরিষদের উপনির্বাচন। ভোট দিলেও নৌকা, না দিলেও নৌকার জয়, এমন নানা অপপ্রচার, ভীতি-শঙ্কা আর দলীয় প্রতীকের নির্বাচন হওয়া সত্ত্বেও নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন চার প্রার্থী। অবাধ, সুষ্ঠু আর নিরপেক্ষ নির্বাচনই নির্বাচনে অংশগ্রহনকারী প্রার্থী ও ভোটারদের।
জেলা নির্বাচন অফিস জানায়, আগামী ২০ অক্টোবর সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত চলবে ভোটগ্রহণ। এ ইউনিয়নেভোটার সংখ্যা রয়েছে ২৮ হাজার।কেন্দ্রসংখ্যা ১০টি।
চলতি বছরের ২৮ জানুয়ারি অসুস্থতাজনিত কারণে মৃত্যুবরণ করেন ঘারিন্দা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি রুহুল আমীন খান খোকন। পরে ১৫ সেপ্টেম্বর চেয়ারম্যানশূন্য এ পরিষদের উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে জেলা নির্বাচন কমিশন। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকা প্রতীক নিয়ে মাঠে নেমেছেন ইউনিয়নের সদ্যপ্রয়াত তিনবারের চেয়ারম্যান রুহুল আমীন খান খোকনের ছেলে তোফায়েল আহাম্মেদ।
ঘোড়া প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন ইউনিয়নের আরেক প্রয়াত ও দুবারের চেয়ারম্যান এসএম আবুল কাশেমের ছেলে এসএম মারুফ হাসান সুমন, আনারস প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আবুল হোসেন সরকার আবু। এ ছাড়া বিএনপি মনোনীত ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী হয়েছেন সৈয়দ শাহীন।
সরেজমিন নির্বাচনী এলাকা ঘুরে ও স্থানীয় ভোটারদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ইউনিয়নের উপ-নির্বাচনকে ঘিরে ব্যাপক তৎপর চেয়ারম্যান প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা। কাকডাকা ভোর থেকে মধ্যরাত অবধি ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন প্রার্থীরা। প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এ নির্বাচনকে ঘিরে ভোটারদের দাবি অবাধ, সুষ্ঠু আর নিরপেক্ষ নির্বাচন। নির্বাচনী এলাকাজুড়ে প্রতিটি প্রার্থীর ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা দেখা গেলেও শুধু বিএনপির মনোনীত প্রার্থীর কিছু পোস্টার ঝোলানো ছাড়া নেতাকর্মীদের মাঠে তেমন কোন প্রচারণায় দেখা যায়নি।
এ নিয়ে পল্লী চিকিৎসক রমজান আলী, মজনু, খোদেজা বেগমসহ কয়েকজন ভোটার বলেন, উন্নয়ন আর গ্রামবাসীর বিপদে-আপদে যাকে সব সময় পাওয়া যাবে এমন প্রার্থীকেই নির্বাচিত করবেন তারা।
অভিযোগ করে স্বতন্ত্র প্রার্থী এসএম মারুফ হাসান সুমন বলেন, গত নির্বাচনে আমার বাবা প্রয়াত চেয়ারম্যান এসএম আবুল কাশেম বিজয়ী হওয়া সত্ত্বেও তাকে ফেল করানো হয়েছিল। বিজয়ী হলে তার বাবা ও ইউনিয়নের প্রয়াত চেয়ারম্যানের অসমাপ্ত কাজগুলো সমাপ্ত করবেন।
আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী আবুল হোসেন সরকার (আবু) বলেন, গত নির্বাচনেও আমি চেয়ারম্যান প্রার্থী ছিলাম। ওই নির্বাচনে আমাকে ১৮৬ ভোটে ফেল দেখানো হয়েছে। এবার আনারস প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছি। বিজয়ী হলে এলাকার উন্নয়নের পাশাপাশি সুদ, ঘুষ, ধর্ষণ, মাদক ও সন্ত্রাসমুক্ত একটি ইউনিয়ন উপহার দেব।
বিএনপি মনোনীত প্রার্থী সৈয়দ শাহীন নির্বাচনী মাঠে প্রচারণা না থাকায় তার বক্তব্য গ্রহণ করা যায়নি।
আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী তোফায়েল আহাম্মেদ বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে কারচুপির কোনো সুযোগ নেই। যারা এমন অপপ্রচার চালাচ্ছেন সেটি ভিত্তিহীন।
টাঙ্গাইল জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এএইচএম কামরুল হাসান বলেন, ভোটকেন্দ্রের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে দুই প্লাটুন বিজিবি, পুলিশ ও আনসার সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবে। পাশাপাশি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার জন্য থাকবে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রট।
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply