April 30, 2024, 7:02 pm

তথ্য ও সংবাদ শিরোনামঃ
রাজশাহী মহানগরীর কুখ্যাত মাদক সম্রাট রাব্বি খাঁ আটক ভালুকায় বৃষ্টির জন্য ইসতিসকার নামাজ আদায়। পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার নিজকাটা খালে ভাসছে টর্পেডোর আকৃতির একটি বস্তু। জার্নালিস্ট ইউনিটি সোসাইটি (জেইউএস) এর প্রকাশিত “ত্রিমোহনা” সহ নিজের লিখা ও সম্পাদিত বেশকিছু ব‌ই মাননীয় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রীকে উপহার দিলেন। ত্রিশালে ডাকাত দলের তিন সদস্য আটক। বেইলি রোড অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের স্মরণসভা ওঅসচ্ছল পরিবারের মধ্যে আর্থিক সহায়তা বিতরণ। টংগিবাড়ী বাজারের পাশে ময়লার ভাগার ঝুঁকিতে পরিবেশ ও জনসাস্থ্য। টংগিবাড়ী উপজেলা প্রশাসন কতৃক তীব্র তাপদাহে সুপেয় পানির ব্যাবস্থা। বেনাপোল বন্দরে খালাসের অপেক্ষায় ভারত থেকে আমদানিকৃত ৩৭০ টন আলু পচন ধরতে শুরু করেছে। ভালুকায় তীব্র তাপদাহে সর্বসাধারণের মাঝে পানি ও খাবার সেলাইন বিতরণ। ভালুকায় দ্বিতীয় বিয়ে করায় ছেলের আঘাতে বাবার মৃত্যু। তীব্র গরমে খেটে খাওয়া মানুষের মাঝে খাবার সেলাইন বিতরণ করলেন ওসি কামাল। ভালুকায় ইউপি চেয়ারম্যানের বিচার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন স্মারক লিপি প্রদান। ঈদগািঁও উপজেলা নির্বাচনে তিনটি পদে মনোনয়ন পত্র দাখিল করেছেন ১৭ জন প্রার্থী। ময়মনসিংহে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ভালুকা মডেল থানা শ্রেষ্ঠত্ব। ভালুকায় ল্যান্ডমার্ক সিটি পার্টি সেন্টার উদ্বোধন। যশোরে ইরি (বোরো)ধানের বাম্পার ফলন, কৃষকের মুখে হাসি। ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের কার্যক্রমে অপরাধজনক কোন ঘটনা ঘটেনি ময়মনসিংহ শিল্প এলাকায়। ছবি তোলার অপরাধে সাংবাদিক গ্রেফতার, অত:পর মুক্তি রংপুরের গঙ্গাচড়ায় অবৈধ ব্যবসায় বাধা দেওয়ায় প্রতিবেশীর উপর হামলা আহত ৩ রমেকে ভর্তি। দেশব্যাপী তিন দিনের সতর্কতামূলক হিট অ্যালার্ট জারি করেছে আবহাওয়া অফিস। ভাবির ছবি এডিট করে নগ্ন ভাবে প্রচার করায় আটক দেবর। যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামির মৃত্যু। ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর সীমান্ত থেকে ৪০ পিস স্বর্ণের বারসহ ২ জনকে আটক করেছে বিজিবি। সংবাদ প্রকাশের জের ধরে সাংবাদিক ও তার পরিবারের সদস্যদের উপর হামলা। নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) এর ১০ম মহাসমাবেশ উদযাপন কমিটি গঠন। শরীয়তপুরে স্কুলছাত্রীকে আটকে রেখে গণধর্ষণ; আটক ৪ ভালুকায় দিনব্যাপী প্রাণী সম্পদ প্রদর্শনী মেলার উদ্বোধন। ভালুকায় মুজিব নগর দিবস উদযাপন। স্বামীকে ভিডিও কলে রেখে নিজ ঘরে আত্মহত্যা।

টাঙ্গাইলে গোপনে বাল্য বিয়ের বলি হলো অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী নুরনাহার!

টাঙ্গাইলে গোপনে বাল্য বিয়ের বলি হলো অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী নুরনাহার!

এম শহিদুল ইসলাম,টাঙ্গাইল প্রতিনিধিঃ টাঙ্গাইলে অষ্টম শ্রেণির মেধাবী ছাত্রী নুর নাহার। বয়স ১৪ পেরোয়নি। সহপাঠিদের সাথে যখন উচ্ছ্বল প্রজাপতির মতো ছুটুছুটি খেলা করার কথা। এর মধ্যেই তাকে বসতে হয়েছে বিয়ের পিড়িতে। মাস খানেক আগেই লাল শাড়ি আর মেহেদী পড়ে বিয়ের সাঁজে সেজে শ্বশুর বাড়ি যায় নুরনাহার। বয়স যাই হোক সে দিকে ভ্রুক্ষেপ না করেই অসচ্ছল বাবা-মা ও নানা অনেকটা গোপনেই বিয়ে দেন প্রবাস ফেরত ৩৫ বছর বয়সী রাজিবের সাথে। ফুলসজ্জা আর বাসর রজনী কি তাও বুঝেনা নুরনাহার। তার পরও স্বামীর সাথে তাকে কাটাতে হয়েছে বাসর রাত।

নুরনাহারের স্বজনদের দাবি স্বাস্থ্য ঝুঁকির কথা না ভেবেই ওই কিশুরির উপর চালিয়েছে স্বামীর অধিকার। আর এমন স্বাদের বাসর রজনীই হয়েছে নুরনাহারের চরম কষ্টের আর বিষাদের। হয়েছে প্রচন্ড রক্তক্ষরণ। ক্রমান্বয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে নুরনাহার।

নব বিবাহিত বধুর উপর ভূতের আছর হয়েছে এমন কুসংস্কারে ওই কিশুরীকে খাওয়ানো হয়েছে কবিরাজী ঔষধ। থেমে নেই এখানেই, খাওয়ানো হয়েছে মাত্রাতিরিক্ত জন্ম নিরোধক পিল। এমন অবস্থাতেও থেমে নেই স্বামীর যৌন কার্যক্রম।

নিরুপায় ওই কিশোরির অনিচ্ছা সত্যেও চলছে স্বামীর যৌন নিপিড়ন। বিয়ের পর থেকেই প্র্রতিনিযত স্বামীর এমন নির্দয় যৌন ক্ষদা মেটাতে প্রচুর রক্ত ক্ষরনে ক্রমেই মেয়েটির অসুস্থতা মারাত্মক রূপ ধারন করে। অবশেষে নুর নাহার যখন মৃত্যুুর দ্বার প্রান্তে তখন তাকে নিয়ে যাওয়া হয় টাঙ্গাইলের একটি ক্লিনিকে।

সেখানে রোগির অবস্থা বেগতিক দেখেই রেফার্ট করেন দেন ডাক্তার। ভর্তি করান মির্জাপুরের কুমুদিনী হাসপাতালে। সেখান থেকেও পাঠিয়ে দেন ঢাকা মেডিক্যালে। আর সেখানেই পরিসমাপ্তি ঘটে বাল্যবিয়ের শিকার নুরনাহারে জীবনের। লাল মেহেদীর রং শুকায় নাই, এমন সময় লাল শড়ি ছেড়ে সাদা কাফন পরে বিদায় নিতে হলো নুরনাহারকে।আর এমনই ভাবে নিষিদ্ধ একটি বাল্য বিয়ের বলি হলো টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার কলিয়া গ্রামের নানার বাড়ি থেকে পড়াশোনা করা নুরনাহার।

ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার (২৪ অক্টোবর) রাতে নুর নাহারের মৃত্যু হয়। পরদিন রবিবার (২৫ অক্টোবর) ময়নাতদন্ত শেষে তাকে তার নানার বাড়ির কবরস্থানে দাফন করা হয়।

কিশোরী গৃহবধূর সঙ্গে তার স্বামীর অস্বাভাবিক শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের কারণেই নুুরনাাহারের এমন পরিনতি হয়েছে বলে দাবি কিশোরির স্বজনদের। তারা জানান অস্বাভাবিক যৌনমিলনে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়ে মেয়েটির মৃত্যু হযেছে।

বিয়ের ৩৪ দিনের মাথায় টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার ফুলকি পশ্চিমপাড়া গ্রামে ঘটনাটি ঘটে।

জানা যায় নিহত নুর নাহারের স্বামীর বাড়ির পক্ষ থেকে গ্রাম্য সালিশের মাথ্যমে বিষয়টি মীমাংসার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

আইনি প্রক্রিয়ায় এর বিচার না হলে বাল্যবিয়ের বলি অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী নুর নাহারের পরিবার ন্যায়বিচার পাবে না বলে দাবি এলাকার সচেতন মহলের।

নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, নুর নাহারের বাবা রিকশাচালক, মা গার্মেন্টসকর্মী। অভাবের সংসারে তাদের মধ্যে ঝগড়া লেগেই থাকতো। এ কারণে দিনমজুর নানা উপজেলার কাউলজানী ইউনিয়নের কলিয়া গ্রামের বাসিন্দা লাল খান পাশের উপজেলার নলুয়া কলাবাগান গ্রাম থেকে চার বছর বয়সে নুর নাহারকে তার বাড়িতে নিয়ে আসেন। এরপর তাকে স্কুলে ভর্তি করান। এ বছর নুর নাহার কলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ছিল।

বাবা মা ও নানার পরিবারের দারিদ্রতার কারনে গত ২০ সেপ্টেম্বর নুর নাহারকে উপজেলার ফুলকি পশ্চিমপাড়া গ্রামের আব্দুর রশিদের ছেলে প্রবাসী রাজিব খানের (৩৫) সঙ্গে বিয়ে দেন। বিয়ের সময় লাল খানের প্রায় ৩০ হাজার টাকা খরচ হয়। এই টাকার জোগান দেন তার আত্মীয়-স্বজনরা।

অপ্রাপ্ত বয়সে বিয়ে হওয়ায় রক্তক্ষরণ শুরু হয় নুর নাহারের। তারপরও স্বামীর পাশবিকতা বিন্দুমাত্র কমেনি। রক্তক্ষরণ বন্ধ না হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে নুর নাহার ও রাজিবের পরিবারে আলোচনা হয়। পরে রাজিবের পরিবারের পক্ষ থেকে গ্রাম্য করিবাজ দিয়ে চিকিৎসা করানো হয়। পরে গত ২২ অক্টোবর নুর নাহারকে ভর্তি করা হয় টাঙ্গাইলের একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে। ওই ক্লিনিকে নুর নাহারকে তার পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দিয়ে স্বামী রাজিব ও তার পরিবার কৌশলে সেখান থেকে কেটে পড়ে। পরে অবস্থার অবনতি হলে নুর নাহারের পরিবার তাকে মির্জাপুর কুমুদিনী হাসপাতালে ভর্তি করে।

জানা যায় মেয়েটিকে চিকিৎসা করানোর মতো টাকাও তখন ছিল না গরিব পরিবারটির হাতে। এমন পরিস্থিতিতে স্থানীয় গ্রামবাসী প্রায় ৬০ হাজার তুলে দিলে উন্নত চিকিৎসার জন্য নুর নাহারকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসে তার পরিবার। মেয়েটির এমন দুঃসময়ে শ্বশুরবাড়ির কোন লোকই ছিলোনা পাশে।অবশেষে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার (২৪ অক্টোবর) রাতে তার মৃত্যু হয়।

নুর নাহারের নানা লাল খান বলেন, মেয়ের জামাইর অভাবের কারণে নুর নাহারকে ছোটবেলাতেই আমার বাড়িতে নিয়ে আসি। দিনমজুরি করেই তাকে লেখাপড়া করাচ্ছিলাম। ছেলে প্রবাসী ও ধনী হওয়ায় মেয়েটির সুখের কথা ভেবে আমরা নুর নাহারকে বিয়ে দেই। বিয়ের কয়েকদিন পর থেকে তার রক্তক্ষরণ শুরু হয়। এ জন্য নুর নাহারের শাশুড়ি তাকে গ্রাম্য কবিরাজের ওষুধ খাওয়াচ্ছিল। পরে রক্তক্ষরণ বেশি হলে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ডাক্তাররা বলেছেন, অপ্রাপ্ত বয়সে বিয়ে ও অস্বাভাবিক যৌন সম্পর্ক স্থাপনের কারনে নুর নাহারের রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত আমরা তাকে আর বাঁচাতে পারলাম না। মৃত্যুর পর নুর নাহারের স্বামী রাজিব তার লাশ পর্যন্ত দেখতে আসেনি। মূলত স্বামীর কারণেই আমার নাতনির মৃত্যু হয়েছে।

এদিকে নুর নাহারের শ্বশুর, শ্বাশুরি ও স্বামীসহ বাড়ির লোক জনের দাবি আগে থেকেই মেয়েটির জরায়ুতে (টিউমার) সমস্যা ছিলো। মেয়ের অসুস্থতা ঘোপন করে বিয়ে দিয়েছে। তার পরেও আমরা চিকিৎসার কোন কৃপনতা করি নাই। ক্লিনিকের ডাক্তার যখন ঢাকা রেফার্ট করলেন। তখন নুরনাহারের পরিবারকে জানানো হয়। তারা এসে ঢাকা নিয়ে যায়,। পরে ঢাকা যেতে চাইলে তারা নিশেধ করে। পরে মৃত্যুর সংবাদ শুনে কলিয়ে গেলে ওই বাড়ির লোকজন আমাদের সাথে অত্যন্ত খারাপ আচরণ করেন।এমনকি আমার ছেলে (নুরনাহারের স্বামী) রাজিবকে মারধোর করে বাড়ি থেকে তারিয়ে দেয়। ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যানে নিকট ঘটনা চানালে ্চেয়ারম্যন সাব আমাদের বাড়িতে চলে আসতে বললে আমরা বাড়ি চলে আসি।

নুর নাহারের মামা লুৎফর খান বলেন, বিষয়টি থানা পুলিশকে জানানো হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

কলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জাকির হোসেন বলেন, আমরা নিয়মিতই শিক্ষার্থীদের খোঁজ-খবর নিয়ে থাকি। কিন্তু হঠাৎ করেই গোপনে নুর নাহারকে তার পরিবার বিয়ে দিয়ে দেয়। নুর নাহার মেধাবী ছাত্রী ছিল। অষ্টম শ্রেণিতে তার রোল নম্বর ছিল ২। বিষয়টি অত্যান্ত দুঃখজনক। আমরা একজন মেধাবী ছাত্রীকে হারালাম। এমন আর কোন নুরনাহার যেন বাল্য বিয়ের বলি না হয়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শামছুন নাহার স্বপ্না বলেন, বাল্যবিয়ের শিকার হয়ে অষ্টম শ্রেণির একজন ছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। শুধু আইন দিয়ে নয়, সামাজিকভাবে বাল্যবিয়ে নির্মূল করতে হবে।

বাসাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হারুনুর রশিদ বলেন, এ ঘটনায় কোনও লিখিত অভিযোগ পাইনি। তবে বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ ও ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আমাদের প্রকাশিত তথ্য ও সংবাদ আপনার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)

Design by Raytahost.com