রাকিব হোসেন, শরীয়তপুর জেলা প্রতিনিধঃ শরীয়তপুর সদর উপজেলার আংগারিয়ায় ফসলী জমিতে মাছের ঘের করতে বাধা দেয়ায় ফসলী জমির মালিক ইমাম উদ্দিন (৪০) কে লোহার রড, হাতুড়ি এবং চায়নিজ কুড়াল দিয়ে দুই পা ও হাত ভেঙ্গে আহত করেন, সন্ত্রাসী আশরাফুল ইসলাম বাবু ও তার ০১ দল সন্ত্রাসী বাহিনী। শরিয়তপুর সদর উপজেলার পরাসর্দ্দি গ্রামের মৃত আব্দুর রব ছৈয়ালের পুত্র ইমাম উদ্দিনকে গত (১৬ ডিসেম্বর রোজ বুধবার) রাত আনুমানিক ৯টার দিকে শরীয়তপুর জেলা শহরের মনোহর বাজার মোড়ে হাতুড়ি পেটা করে আহত অবস্থায় ফেলে রেখে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা, আহত ইমাম উদ্দিনের ছোট ভাই মুক্তার হোসেন ছৈয়াল, পালং মডেল থানা ও স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালে শরীয়তপুর জেলার সদর উপজেলার আংগারিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম পরাসর্দ্দী-হাজত খোলা এলাকায় ৪০ জন ব্যবসায়ী ও কৃষকের প্রায় ১০ একর জমিতে জোরপূর্বক মাছ চাষ করে আসছে বিএনপি নেতা মাসুম সরদার ও নিকারী মোস্তফা বেপারী। গত বছর জমির মালিকদের আপত্তির মুখে প্রশাসনের মধ্যস্থতায় জমি ছেড়ে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়ার পরও জোরপূর্বক মাছ চাষ করে আসছে এ প্রভাবশালী চক্র। জমির মালিকদের যথা সময়ে টাকা পরিশোধ না করায় এবার তারা তাদের জমিতে ধান চাষের সিদ্ধান্ত নেন। তবে প্রবাবশালী কুচক্রী মহল জমি ছাড়তে না চাওয়ায় জমির মালিকরা শরীয়তপুর জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, ও ডিজিএফ আই বরাবরে লিখিত অভিযোগ দাখিল করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে গত (১৬ ডিসেম্বর রোজ বুধবার) রাত আনুমানিক ৯টার দিকে শরীয়তপুর-মাদরীপুর মহাসড়কের মনোহর বাজার মোড়ের কাছে ইমাম উদ্দন ছৈয়াল (৪০)কে ভাড়ায় চালিত মোটর সাইকেলে যাওয়ার পথে গতি রোধ করে শরীয়তপুর সদর উপজেলার আংগারিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক যুগ্ম-সাধারন সম্পাদক মাসুম সরদার তার ছেলে সন্ত্রাসী আশরাফুল ইসলাম বাবু সরদার, মুজাই সরদার, আনন্দ সরদার, সোহাগ সরদার, সোহেল সরদার ও তার লোকজন মিলে হাতুড়ি, চাইনিচ কুড়াল ও লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত ভেবে ফেলে রেখে চলে যায়। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে রাত আনুমানিক ১০ টার দিকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। বর্তমানে আহত ইমাম উদ্দিন শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে গুরুতর অবস্থায় চিকিৎসা দিন অবস্থায় রয়েছে। এই ঘটনায় আহত ইমাম উদ্দিনের ছোট ভাই মোক্তার হোসেন ছৈয়াল বাদী হয়ে ৭ জনকে আসামী করে পালং থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে।
আহত ইমাম উদ্দিন ছৈয়ালের বড় ভাই মনির হোসেন ছৈয়াল বলেন, অবৈধ মাছ ব্যাবসায়ী ও সন্ত্রাসী আংগারিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক যুগ্ম-সাধারন সম্পাদক মাসুম সরদার, তার ছেলে আশরাফুল ইসলাম বাবু সরদার, মুজাই সরদার, আনন্দ সরদার, সোহাগ সরদার, সোহেল সরদার ও তার লোকজন মিলে আমার ভাইকে হাতুড়ি, চাইনিজ কুড়াল ও লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত ভেবে ফেলে রেখে চলে যায়। তার গোংরানীতে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করেছে। ওর অবস্থা এখনো আশংকাজনক। আমাকেও তারা দেড় বছর আগে প্রকাশ্য দিবালোকে আংগারিয়া বাজারে আমার দোকানে ঢুকে আমাকে ও আমার ছোট ভাইকে কুপিয়ে জখম করে। আমরা সন্ত্রসীদের কাছে খুব অসহায়।
মাছ চাষী নিকারী মোস্তফা বেপারী বলেন, প্রথমে আমি এই ঘেরের মালিকানায় ছিলাম এখন আমি এটার সাথে জড়িত নই। মারধরের ব্যাপারে আমি কিছু জানি না। বিএনপি নেতা ও মাছ ব্যবসায়ী মাসুম সরদার ও তার ছেলে আশরাফুল ইসলাম বাবু সরদার কে বার বার ফোন করে ও পাওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম উদ্দিন বলেন, আংগারিয়ায় ফসলী জমির মালিক ইমাম উদ্দিন কে হাতুড়ি, চাইনিচ কুড়াল ও লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে হাত পা ভেঙ্গে আহত করায়, আহতের ছোট ভাই ৭ জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেছে। আমরা এবিষয়ে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবো।
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply