রাকিব হোসেন, শরীয়তপুর জেলা প্রতিনিধঃ শরীয়তপুর জেলার ভেদরগঞ্জ উপজেলার সখিপুর ডিএমখালি ইউনিয়নে সরকারি ঘরের তালিকায় সচ্ছল পরিবারের নাম দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। অর্থের বিনিময়ে এসব নাম লিস্টে রয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়িত এই প্রকল্পে যার জমি আছে কিন্তু ঘর নেই, তার নিজ জমিতে গৃহনির্মাণ নীতিমালা রয়েছে। অতি দরিদ্রতা বিবেচনায় উপকার ভোগীদের তালিকা প্রস্তুত করে তাদের সেমি পাকাঘর নির্মাণ করে দিতে হবে। আর তালিকাভুক্তদের যাদের ১ থেকে ১০ শতাংশ জমি আছে, কিন্তু ঘর নেই বা ঘর থাকলেও তা বসবাসের অনুপযোগী, এ বিষয়ে নিশ্চিত হয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার অর্থ ছাড় করবেন।
সেই ঘরের তালিকায় এমনি একজনের নাম রয়েছে, যার জমি আছে ১ কানি (১৬০ শতাংশ) তার চেয়ে ও বেশী। বাড়ি রয়েছে ৪০ শতাংশের উপর। তিনি পেশায় গ্রাম পুলিশ। তিনি হলেন সখিপুর ডিএমখালি ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড দক্ষিণ চর পায়াতলি রাড়িকান্দি গ্রামের ডিএমখালী ইউনিয়ন পরিষদের চৌকিদার (গ্রাম পুলিশ) দেলোয়ার খান। কীভাবে এই পরিমাণ সম্পত্তি থাকার পরও ঘরের তালিকায় তার নাম রয়েছে- এ নিয়ে স্থানীয় সচেতন মহলের মনে নানা প্রশ্ন উঠেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্রে জানা যায়, সখিপুর ডিএমখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জসিম মাদবর মৃত্যুবরণ করায় প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ঘরের তালিকা তৈরির দায়িত্ব চলে যায় ডিএমখালী ইউনিয়ন সহকারী ভূমি অফিসের তহসিলদার হাবিব শিকদারের কাছে। তিনি সেই সুযোগে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে সর্বশেষ নামের তালিকায় গ্রাম পুলিশ দেলোয়ার খানের নাম বহাল রেখেছেন। এ দিকে স্থানীয়দের দাবি, যার কিছু নেই, সে পাবে ঘর। এই অঞ্চলে ঘর পাওয়ার অনেক যোগ্য লোক রয়েছে।
বিষয়টিতে অভিযুক্ত গ্রাম পুলিশ দেলোয়ার খান বলেন, ‘আমার বাড়ি ২৯ শতাংশের ভেতর আছে। মাঠে আমার নামে ১৪ শতাংশ জমি রয়েছে। খোঁজ নিয়ে দেখতে পারেন।’
এ ব্যাপারে ভূমি অফিসের তহসিলদার হাবিব শিকদার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার কাছে ইউএনও সাহেব একটা তালিকা চেয়েছিল। আমি ২৩ জনের নামের তালিকা দিয়েছিলাম। ইউএনও সাহেব সরেজমিনে এসে বাছাই করে ১৮ জনের ঘরের তালিকা করেছে। আমি কোন টাকা-পয়সা নেইনি। ইউএনও সাহেব তার নাম লিস্টে রেখেছেন।’
অন্যদিকে ভেদরগঞ্জ সহকারী কমিশনার (ভূমি) শংকর চন্দ্র বৈদ্য বলেন, ঘরের তালিকায় ৯ নম্বর ওয়ার্ডের চর পায়াতলি বাড়ির দেলোয়ার হোসেন নামে একজনের নাম আছে। যেহেতু আমি বিষয়টি জানলাম, এ ব্যাপারে খোঁজ নেব। সে ঘর পাওয়ার যোগ্য না হলে ঘর পাবে না। আর তহসিলদার এর সাথে টাকা লেনদেনের বিষয় আমার জানা নেই। তারপরেও বিষয়টি আমি দেখবো।
এ বিষয়ে ভেদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানভীর আল-নাসিফ বলেন, ‘ডিএমখালিতে আমি নিজে গিয়ে চেক করেছি। তার ঘর নাই। এখনো ঘর দেওয়া হয় নাই। দেলোয়ার হোসেন এর সম্পত্তির বিষয়টি যেহেতু জানলাম। যাচাই করে এই ব্যাপারে আমরা সিদ্ধান্ত নেব।
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply