November 21, 2024, 6:21 am

তথ্য ও সংবাদ শিরোনামঃ
রাজধানীতে কলেজ ও সিটি কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ। ১৫ বোতল ফেন্সিডিল সহ ০১ জন আসামী গ্রেফতার। যশোর পর্যটন খাতেও ব্যাপক ভূমিকা রাখতে পারে বাস্তবায়নে উদ্যোগ নেয়া হবে। উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ বেনাপোল বন্দর দিয়ে শুল্কমুক্ত সুবিধায় ভারত থেকে চাল আমদানি শুরু। বেনাপোলের শহীদ আব্দুল্লাহর কবর জিয়ারত করলেন উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করার দাবিতে মহাখালীতে সড়ক ও রেলপথ অবরোধ। প্রধান উপদেষ্টার ভাষণে নির্বাচনের রূপরেখা না থাকায় আশাহত হয়েছে বিএনপি। ভালুকায় দ্রব্যমূল্য স্বাভাবিক রাখতে বাজার মনিটরিং ধনবাড়ী উপজেলার নব নিযুক্ত নির্বাহী অফিসারের সাথে ধনবাড়ী উপজেলা মডেল প্রেসক্লাবের সদস্যদের সৌজন্য সাক্ষাৎ। নওগাঁ পত্নীতলার ডিগ্রি চতুর্থ বর্ষের ছাত্র সুমন হোসেন কে হত্যা করে গলায় ফাঁসি দিয়ে কাঁঠাল গাছের ঝুলিয়ে রহস্য জনক মৃত্যু। শার্শায় ৪ যুগ ধরে খবরের কাগজের ফেরিওয়ালা সিরাজ আর নেই। রাজনৈতিক গুরু হিসেবে মওলানা ভাসানীকে স্বীকৃতি দিতে হবে …… অধ্যক্ষ এম শরিফুল ইসলাম বেনাপোল হ্যান্ডলিং শ্রমিক ইউনিয়ন ৯২৫ এর বিশেষ সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত। যশোর যৌনকর্মী প্রেমিকাকে নিয়ে দ্বন্ধে হেলপার বাপ্পি খুন। মওলানা ভাসানীকে অপমান করায় আওয়ামী লীগ বিলুপ্ত প্রায় বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে সাহিত্য ও সংস্কৃতির সংস্কার চাই – রেজাবুদ্দৌলা চৌধুরী। ভালুকায় জমি দখল ও খেতের ধান কেটে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ মওলানা ভাসানীকে স্বাধীনতার স্বপ্নদ্রষ্টা হিসেবে অন্তর্ভূক্ত করার দাবি …. বীর মুক্তিযোদ্ধা মোয়াজ্জেম হোসেন খান মজলিস। দেশপ্রেমিক লোকদের সঠিক প্রক্রিয়ায় যাচাই বাছাই করে নিয়োগ দিতে হবে …… অধ্যাপক ড. সায়েদা ওবায়েদ যশোর বেনাপোল পোর্ট থানা পুলিশের কর্তৃক ৩০ বোতল ফেন্সিডিল ও ১ কেজি গাঁজা সহ ০১ জন আটক। ওষুধের দাম কমানোর আহ্বান ……এম এ আলীম সরকার গাজীপুর কোনাবাড়ীতে আবাসিক হোটেলে চলছে নারী ও মাদকের রমরমা ব্যবসা যশোর যাত্রীবাহী বাসের ভেতর থেকে রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার। সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন ঢাকাই সিনেমার একসময়ের জনপ্রিয় চিত্রনায়ক রুবেল। কোটায় চাকরিপ্রাপ্তদের তালিকা যাচাই-বাছাই করছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। গলি থেকে রাজপথ শ্যামবাজারের রক থেকে উঠে প্রাসাদে মিঠুন চক্রবর্তী জাতীয় যুব দিবস উপলক্ষে ডিএনডি খাল পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা অভিযান কোটা আন্দোলনে মাথায় গুলিবিদ্ধ আবদুল্লাহর মৃত্যুঃ চিরনিদ্রায় শায়িত। পুরুষের কাজের প্রেরণা তার প্রিয়তমা …….লায়ন মোঃ গনি মিয়া বাবুল টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীতে ব্রি ধান ১০৩ এর মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত

গলি থেকে রাজপথ শ্যামবাজারের রক থেকে উঠে প্রাসাদে মিঠুন চক্রবর্তী

গলি থেকে রাজপথ শ্যামবাজারের রক থেকে উঠে প্রাসাদে মিঠুন চক্রবর্তী

ঋতম্ভরা বন্দ্যোপাধ্যায়কলকাতা: আমরা বাংলার এপারে বসে দেখেছি বাংলাদেশের রাজ্জাক, জসীম,আলমগীর প্রমুখ বাংলা সিনেমার জনপ্রিয় ও দক্ষ অভিনেতাদের ছবি। এমনকি ববিতা সহ অনেক নায়িকা এপারে এসে বাংলা ছবিতে অভিনয় করেছেন। খুব গর্ব বোধ করেছি। এপারের এক বাঙালি সর্বভারতীয় নায়ক মিঠুন চক্রবর্তীর জীবন নিয়ে লিখছি। কী ভাবে উত্তর কলকাতার একেবারে অবহেলিত একটি পল্লী থেকে উঠে এসে সর্ব ভারতীয় সিনেমা জগতে একেবারে শীর্ষ স্থানে উঠে এলেন, তারই কাহিনী।সেই সময় বাংলায় মহানায়ক উত্তম কুমার ছাড়া কাউকেই মন থেকে গ্রহন করা একেবারেই অসম্ভব ছিল।

গল্পটা যিনি বলেছিলেন তিনি এক বিখ্যাত ভারতীয় ক্রিকেটার। তাঁরা একটি মাঠে প্র্যাকটিস করতেন। ওরা একদিন দেখলেন ছয় ফুট লম্বা একটি ছেলে পাঁচিল টপকে একটি বাড়িতে ঢুকছে। ছেলেটির মতলব নিশ্চয় সুবিধের নয়। তাঁরা ছেলেটিকে পাকরাও করেন। পরে জানা যায় সে বাড়িভাড়া দিতে পারতো না বলে গোপনে সেই বাড়িতে ঢুকতো। আবার পাঁচিল টপকে বাইরে আসতো।

৭০ দশকের আগুনঝরা দিন। দিন বদলের স্বপ্ন নিয়ে কত জোয়ান ছেলে হারিয়ে যাচ্ছে। নকশাল আন্দোলন তখন মধ্য গগনে। হাতে বোমা আর পাইপগান নিয়ে ছুটছে উত্তর কলকাতার অলিগলি পাকস্থলীর ভেতর। পিছু নিয়েছে রাগী গোখরোর মতন পুলিশ, হাতে ঝুলছে কর্ড ঝোলানো খুনি রিভলবার, লক্ষ্য কোনো তাজা জোয়ানের পিঠ। এরকম টালমাটাল সময় স্কটিশ চার্চের স্টুডেন্ট গৌরাঙ্গ জড়িয়ে পড়েছিল রাজনীতিতে । তারপর পালিয়ে গিয়ে কোন এক আত্মীয়ের বাড়ি। সেখানে নিজের নকশাল তথা রাজনৈতিক পরিচয় জানাজানি হতেই বিদায়। তারপর কলকাতা থেকে পালিয়ে পুনের ফিল্ম ইনস্টিটিউট। তখন পশ্চিমবঙ্গে নকশাল আন্দোলন চলছে। বহু তাজা প্রাণ হারিয়ে গেছে। গৌরাঙ্গ ধরা পড়লেন নকশাল করার অভিযোগে আবার ছাড়াও পেলেন কিছুদিনের মধ্যে। সেই সময় পরিচালক মৃণাল সেন মৃগয়া ছবির জন্য অভিনেতা খুঁজছেন। চরিত্রটা হবে একদম সাপাট, লজ্জাহীন। মনে পড়ে গেলো ফিল্ম ইন্সটিটিউটের এক দুষ্টু ছেলের কথা। এভাবেই গৌরাঙ্গ চক্রবর্তী হয়ে গেলো মিঠুন চক্রবর্তী।

না, এরপরের রাস্তা ভয়ংকর কঠিন। মুম্বাই বড় হৃদয়হীন শহর। কত সচল পয়সা অচল হয়ে হারিয়ে গেছে সেই খোঁজ কেউ রাখেনা। মিঠুনের কাছে খাওয়ার টাকা নেই। একবেলা খেয়ে চলছে। ভালো হিন্দি বলতে পারতেন না। শিখে নিলেন। একজনের সঙ্গে রুম শেয়ার করে থাকতেন। পয়সা কম দিতেন বলে মেঝেতে শুতেন। একদিন খাটে শুয়েছিলেন বলে সেই রুমমেট প্রচুর খিস্তি মেরে অপমান করে। রাস্তা অনেক অনেক কঠিন । লবি, পলিটিক্স অদৃশ্য মাইনের মতন অপেক্ষা করছে বিস্ফোরণের জন্য।

বাঙালি নায়করা নাকি দুটি জিনিস পারতো না, নাচ এবং মারপিট। এই মিথ ভেঙে দেবার মতন কেউ আসেনি। ৭০ দশক মানেই হল ওয়ান ম্যান ইন্ডাস্ট্রি অমিতাভ বচ্চনের উত্থান। গোটা দেশ যার হেয়ার স্টাইল নকল করতো। ছয় ফুট লম্বা মিঠুন একবার চন্দননগরে জগদ্ধাত্রী ঠাকুর দেখতে গেছেন । কানঢাকা চুল আর বেলবটম প্যান্ট পরা মিঠুনকে দেখে পাড়ার দুষ্টু ছেলেরা বচ্চন বচ্চন বলে আওয়াজ দিচ্ছিল। ওরা জানতো না একদিন এই ছেলেটার উত্থানে অমিতাভ বচ্চন নিজেই ভয় পেয়ে যাবেন।

কিছু মানুষ কষ্টের প্লাবনে ভেসে যায়, কিছু মানুষ টিকে থাকে। মিঠুন টিকেছিলেন। স্পটবয়ের কাজ করেছেন , বি গ্রেড এর সিনেমা করেছেন । একবার অমিতাভ দেখেন মিঠুন অন্যান্য টেকনিশিয়ানদের সঙ্গে একই গাড়িতে যাচ্ছে। অথচ সে নিজে ওই সিনেমার হিরো। নিজের গাড়িতেই তিনি লিফট দিয়েছিলেন। জিতেন্দ্র খিল্লি করে মিঠুনকে বলেন, এই কালিয়া আবার অভিনয় করছে! মৌসুমী চ্যাটার্জি চরম অনিচ্ছা ব্যক্ত করেন মিঠুন এর সঙ্গে অভিনয় করতে গিয়ে। অপমানের পর অপমান। সব গিলেছেন তিনি। অমিতাভকেও এককালে কম অপমান সহ্য করতে হয়নি। যাইহোক, অমিতাভের দো আনজানে ছবিতে মিঠুন একটা ছোট্ট চরিত্র করলেন। কেউ ভাবতে পারেনি এই ছেলেটা হিরো হবে!

১৯৭৯ সালে সুরক্ষা ছবিতে বাপ্পী লাহিড়ী ডিস্কোর বিট শোনালেন। তারপর ১৯৮২ সালে ডিস্কো ড্যান্সার। ওই যে বাঙালি নায়কেরা নাকি নাচ আর মারপিট পারেনা! এলভিস প্রেসলির প্রভাব মিঠুনের নাচে সুস্পষ্ট। এতদিন ছিল অমিতাভ জমানা। কুলির দুর্ঘটনার পর অমিতাভ ছবি কমিয়ে দিলেন তারপর রাজনীতি। এদিকে হিন্দি ছবিতে অনেক পরিবর্তন হচ্ছিলো। এবার মিঠুনের রাজত্ব শুরু হয়ে গেলো। বচ্চনের কান ঢাকা চুল, লম্বা জুলপি স্টাইল পাল্টে গেলো । মিঠুন জুলফি কামিয়ে কানের সাইড দিয়ে কোনাকুনি চুলের লাইন নেমে এলো আর ঘাড়ের দিকে বেশ লম্বা। এলো স্কিন টাইট সাদা প্যান্ট, হাত কাটা গেঞ্জি, গলায় মাফলার। আর সর্বোপরি ডিস্কো বুট। লম্বা হিলের চেন টানা বুট, সাদা জুতো । একটার পর একটা হিট সুপারহিট ছবি । সঙ্গে ফ্লপ ছিল। কিন্তু এত ছবি রিলিজ হচ্ছিলো যে ম্যাটার করে না। রাশিয়ায় ডিস্কো ড্যান্সার জিমি বিরাট পপুলার।

হ্যাঁ, যাকে চন্দননগরের ছেলেরা বচ্চন বলে খিল্লি করেছিল সেই মিঠুন অমিতাভের সঙ্গে করলেন গঙ্গা যমুনা সরস্বতী। কিন্তু , সত্যি মিথ্যে জানি না , পলিটিক্স করে মিঠুনকে ওই সিনেমায় মেরে দেওয়া হয় সিনেমা শেষ হবার অনেক আগে। সিনেমাটি সুপার ফ্লপ হয়।
মিঠুনের উত্থান আসলে এক রূপকথা ছাড়া আর কিছু নয়। কারণ যে পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে মিঠুনকে যেতে হয়েছে সেটা গল্পের জন্যও কল্পনা করা মুশকিল। তিনবার জাতীয় পুরস্কার পেয়েছেন। মিঠুনের ছবি ছিল মাস মুভি, সমাজের এলিট ক্লাসকে টার্গেট করে বানানো নয়। আমার যদিও ওইসব ছবি যে খুব ভালো লাগে এমনটা বলবো না, কিন্তু কোটি কোটি মানুষ দেখেছেন । একদিক থেকে সিনেমার অর্থই তো বিনোদন।

সেই মিঠুন চক্রবর্তী দাদা সাহেব ফালকে পুরস্কার পেলেন। আমার ছোটবেলায় অমিতাভ,মিঠুন এরা ছিল । আমি আশেপাশের লোককে দেখেছি মিঠুনের স্ট্যাইলে চুল রাখতে। বাড়িতে শ্বেত পাথরের থালার সঙ্গে মিঠুনের ঘর জামাই সিনেমার ক্যাসেট এসেছিল। দেখেছি।

অনুপম খেরের একটা অনুষ্ঠানে একবার ওম পুরী বলেছিলেন, কে জানতো একদা ক্লাস সিক্সে পড়া যে ছেলেটা চায়ের দোকানে কাপ ডিস ধুয়েছে সে একদিন ওম পুরী হবে! কে জানতো, যে ছেলেটা হোটেলের শো এর পর পকেট থেকে খুচরো বার করে মিলিয়ে দেখছিল সেদিনের খাবার জোগাড় হবে কিনা সে একদিন বব ডিলান হবে আর নোবেল পুরস্কার পাবে, ট্রাক ড্রাইভার ছেলেটি কিং অফ পপ এলভিস হবে কে জানতো, কলকাতায় রাস্তায় বার্ড কোম্পানীর চাকরি করতে করতে ঘুরে বেড়ানো ছেলেটা একদিন অমিতাভ বচ্চন হবে কেউই ভাবেনি। ওই অনুপম খেরের শো তেই একটা দারুন কথা বলেছিল – লাইফ মে কুছ ভি হো সকতা হে। উত্তর কলকাতার গৌরাঙ্গ চক্রবর্তী এভাবেই একদিন মিঠুন চক্রবর্তী হয়ে যায়। রূপকথা নয়, বাস্তবে। এই মিঠুনের এখন মুম্বাইতে বিশাল প্রাসাদ। মস্ত বড় পাঁচতারা হোটেল। তবে মিঠুন কিন্তু অতীতকে ভুলে যান নি। পরিচিত শ্যামবাজারের রকের অনেক বন্ধুকে সিনেমা জগতে টেকনিশিয়ান এর কাজ শিখিয়েছেন। গরীব দুঃখীদের উজাড় করে সাহায্য করেছেন। থ্যালাসেমিয়া এক মারাত্মক ব্যাধি। বহু শিশু এই রোগের শিকার। মিঠুন এই ক্ষেত্রে লক্ষ লক্ষ টাকা দিয়ে অনেক শিশুকে রক্ষা করেছেন। এখনো করছেন। কিছুকাল আগে পুরোপুরিভাবে রাজনীতিতে প্রবেশ। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাকে তৃণমূল কংগ্রেসের হয়ে দিল্লিতে পার্লামেন্টে রাজ্যসভার সদস্য করেছিলেন। পরবর্তীকালে তৃণমূল পার্টি ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। প্রতিটি নির্বাচনী প্রচারে সিনেমার সংলাপ ব্যবহার করে জনসভায় আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন।

বাংলাদেশ সম্পর্কে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন,বাংলাদেশে অনেক স্বনামধন্য ও প্রতিষ্ঠিত নায়ক ,নায়িকা রয়েছেন। অসাধারণ তাদের অভিনয় প্রতিভা। তাদের জন্য অগাধ ভালোবাসা, শ্রদ্ধা জানালেন তিনি। নিজেও বেশ কয়েকবার ঢাকা গিয়েছেন। প্রচুর ভালবাসা পেয়েছেন বলে জানান।

আমাদের প্রকাশিত তথ্য ও সংবাদ আপনার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)

Design by Raytahost.com