আনোয়ার হোসেন নিজস্বপ্রতিনিধিঃ কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় মাথায় গুলিবিদ্ধ আবদুল্লাহ (২৩) তিন মাস পর বৃহস্পতিবার (১৪ই নভেম্বর) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। সকাল ৮টা৩০মিঃ দিকে। এর আগে (১৪ই নভেম্বর) ঢাকা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সন্ধ্যা ৭টার দিকে জানাযা শেষে আবদুল্লাহর মরদেহ গ্রামের বাড়ি যশোরের বেনাপোল নিয়ে আসা হয়। তার দাফন শুক্রবার (১৫ই নভেম্বর) সকাল ১১টার দিকে সম্পন্ন হয়েছে
শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টা ৩০মিঃদিকে যশোরের বেনাপোল হাইস্কুল বলফিল্ড মাঠে তার জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। জানাযায় হাজারো মানুষ অংশ নেয়। উপজেলা প্রশাসন তাকে গার্ড অব অনার প্রদান করে। পরে বড় আচড়াঁ গ্রামে তার নানাবাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে নানা-নানির কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন আবদুল্লাহ।
নামেজে জানাযায় ইমামতি করেন মাওলানা সায়্যেদুল বাসার। এ সময় উপস্থিত ছিলেন শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী নাজিব হাসান, উপজেলা বিএনপির আহবায়ক খায়রুজ্জামান মধু,বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামির কেন্দ্রীয় কমিটির কর্মপরিষদের সদস্য মাওলানা আজিজুর রহমান, জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা হাবীবুর রহমান, থানা আমির রেজাউল ইসলাম, থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হাসান জহির, বেনাপোল পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবু তাহের ভারত বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শামসুর রহমান
শুক্রবার রাত ২টার দিকে আবদুল্লাহর মরদেহ ঢাকা থেকে গ্রামে পৌঁছালে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। আত্মীয়-স্বজনদের আহাজারি আর শোকে এলাকার পরিবেশ ভারী হয়ে উঠে।
আবদুল্লাহর বাবা আব্দুল জব্বার পেশায় একজন শ্রমিক। অর্থাভাবে তেমন কোনও ছেলে-মেয়েকে লেখাপড়া করাতে পারেননি তিনি। চার ভাই-বোনের মধ্যে সবার ছোট ছিলেন আবদুল্লাহ। বাবার সহযোগিতায় আর নিজ চেষ্টায় লেখাপড়া করেন তিনি। ঢাকায় বোনের বাসায় থাকতেন। শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র ছিলেন। আন্দোলনের শুরু থেকেই আবদুল্লাহ সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন।
গত ৫ই আগস্ট সন্ধ্যা ৭টার দিকে রাজধানীর তাঁতীবাজার মোড়ে বংশাল থানার সামনে গুলিবিদ্ধ হয় আবদুল্লাহ। তার কপালের ঠিক মাঝ বরাবর গুলি লাগে। এমন অবস্থায় প্রায় দুই থেকে তিন ঘণ্টা তিনি রাস্তায় পড়ে থাকেন।
প্রথমে তাকে মিটফোর্ড পরে ঢাকা মেডিক্যালে নেওয়া হয়। সেখানে অস্ত্রেপচার করে তার মাথা থেকে গুলি বের করা হয়। তবে অবস্থা আশঙ্কাজনক থাকলেও তাকে হাসপাতাল থেকে ১০ই আগস্ট ছাড়পত্র দেওয়া হয়।
তাকে বেনাপোল নিয়ে আসেন স্বজনরা। বাড়িতে তার অবস্থার অবনতি হতে থাকলে তাকে ১১ই আগস্ট রাতে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার অবস্থার আরও অবনতি হওয়ায় ডাক্তাররা দ্রুত আবারও ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন।
গত ১২ই আগস্ট সকাল ৭টায় তাকে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকরা মাথার ভেতরে ইনফেকশন দেখতে পান যাহা তরল প্লাজমার মতো গলে গলে পড়তে থাকে। আবারও তার অপারেশন করা হয়। অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় গত ২২শে আগস্ট তাকে সিএমএইচে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে দীর্ঘদিন চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা ৩০মিঃ দিকে সে মারা যায়।
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply