রাকিব হোসেন, শরীয়তপুর জেলা প্রতিনিধঃ শরীয়তপুর জেলার জাজিরা উপজেলার জয়নগর ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা (তহশিলদার) মোঃ আলী আকবর ও তার অফিস সহায়ক রাজ্জাক ঘুষ ছাড়া কোনো প্রকার কাজ করতে অনিচ্ছুক বলে ০১ টি অভিযোগ উঠেছে। অনিয়ম, ঘুষ, দুর্নীতি, হয়রানিসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে ওই তহশিলদার ও তার অফিস সহায়কের বিরুদ্ধে। ভূমি অফিসের চৌকাঠ পেরুলেই তহশিলদারের নিজের মনের মত বানানো আইন মানতে হয় ভূমিসেবা নিতে আসা সাধারণ জনগণকে। সেবা নিতে আসা লোকজন কেউ প্রতিবাদ করলেই ভূমি কর্মকর্তা মোঃ আলী আকবর মামলা দিয়ে হয়রানি করেন প্রতিবাদ কারী সাধারণ জনগণকে।
জয়নগর এলাকার বাবুল হাওলাদার জানান, সম্প্রতি স্থানীয় ব্যবসায়ী বাসার মোল্লা জয়নগর বাজারে দোকান ঘর তুলতে গেলে বাঁধা দেয় তহশিলদার মোঃ আলী আকবর। পরে তার কাছ থেকে টাকাও চায় তহশিলদার। এ বিষয় নিয়ে আলী আকবরের সঙ্গে বাসার মোল্লার বাকবিতন্ডা হয়। এই বাকবিতন্ডা কে কেন্দ্র করে তহশিলদার মোঃ আলী আকবর গোপালপুর এলাকার মোহাম্মদ মাদবর, জয়নগর ইউনিয়নের মোল্লাকান্দি গ্রামের বাসার মোল্লা, আলী আকবর মোল্লা, খানকান্দি গ্রামের বাবুল হাওলাদারের বিরুদ্ধে শরীয়তপুর আদালতে ০৪ জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন। সেই মালায় চারজন বর্তমানে জামিনে আছেন। তুচ্ছ ঘটনা কে কেন্দ্র করে এভাবেই মামলা দিয়ে জনগণকে হয়রানি করছে বলে জানান তিনি।
এবং কৃষক সেলিম ব্যাপারী বলেন, জমির খাজনা (দাখিলা) বাবদ আমার কাছ থেকে নগদ ২ হাজার টাকা নিয়ে ১ হাজার টাকার একটি রশিদ হাতে ধরিয়ে দেয় তহশিলদার ও তার অফিস সহায়ক। পর্চা বাবদ ৫০০ টাকা নেয় যার কোন রশিদ দেননি তারা। তিনি বলেন, কাগজপত্র সম্পর্কে আমার ধারনা নেই। আমি খাজনা কেটে ও পর্চা নিয়ে বাড়িতে গেলে আমার ভাই বলেন, খাজনা কাটতেতো ১ হাজার টাকাই লাগে না। ২ হাজার টাকা দিছ কেন?
জয়নগর মোল্লাকান্দি গ্রামের বাসিন্দা আবু বকর সহ আরো অনেকেই বলেন, আমরা জয়নগর ইউনিয়নের সাধারণ মানুষ। আমি সোমবার (২৮ ডিসেম্বর) দুপুরে ভূমি অফিসে একটি কাগজের জন্য গেলে তহসিলদার আমার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে। কোন কথা বলার সুযোগই দেয়নি। আমাদের এলাকার সহজ-সরল লোকজন জমির বিভিন্ন কাজে যায় তহশিলদার আলী আকবরের কাছে। আমি দেখেছি, সহজ-সরল লোকজনদের ২৫০ টাকার রশিদের বিনিময়ে নগদ ৪ হাজার টাকা করে নিচ্ছে তহশিলদার।
এদের মতো একই অভিযোগ ওই ভূমি অফিসে সেবা নিতে আসা বেশির ভাগ মানুষের। নাম খারিজের বেলায় সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ফি ১ হাজার ১৫০ টাকা হলেও অতিরিক্ত হিসেবে ৪ হাজার থেকে ৮ হাজার টাকা পর্যন্ত নেন ওই তহশিলদার।
জয়নগর ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা (তহশিলদার) মোঃ আলী আকবর বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, আমি জমির খাজনা (দাখিলা) বাবদ কারো কাছ থেকে কোন টাকা নেই না। আমি তো কোন পর্চা দেইনা। আমার স্পষ্ট কথা।
জাজিরা উপজেলা সহকারী (ভূমি) কমিশনার রেনু দাস বলেন, আমরা কোন লিখিত অভিযোগ পাইনি। তদন্ত করবো, অভিযোগ প্রমানিত হলে আইনগত ব্যবস্থা করা হবে।
শরীয়তপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আসমাউল হুসনা লিজা মুঠোফোনে বলেন, আমরা এখনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply