টায়্গাইল প্রতিনিধিঃ টাঙ্গাইলের এলেংজানী নদীতে ‘বাংলা ড্রেজার’ বসিয়ে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। নিজ গ্রামের একটি খাল ভরাট করতে কুচিয়ামারী গ্রামে নদী থেকে বালু তুলতে ড্রেজারটি বসিয়েছেন চেয়ারম্যান। তিনি রূপসী গ্রামে আরও একটি ড্রেজার বসাতে তৎপরতা চালাচ্ছেন।
এনিয়ে স্থানীয়রা ক্ষোভ জানিয়েছেন। তাদের আশঙ্কা, অবৈধভাবে নদীর যত্রতত্র থেকে বালু তুললে ভাঙনের কবলে পড়ে গ্রামটি বিলীন হয়ে যাবে।
স্থানীয়দের অভিযোগ- টাঙ্গাইল সদর উপজেলার ছিলিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সাদেক আলী নদীতে ড্রেজারটি বসিয়েছেন। একইভাবে সূবর্ণতলীর নয়াপাড়া ধলেশ্বরী নদীতে আরও তিনটি ড্রেজার দিয়ে বালু তোলা হচ্ছে। পুলিশকে হাত করেই অবৈধভাবে বালু তুলছেন ব্যবসায়ীরা।
তবে অভিযুক্ত চেয়ারম্যান সাদেক আলীর দাবি- গ্রামবাসীর চলাচলের জন্য রাস্তা নির্মাণ করতেই তিনি বালু তুলছেন। তিনি জানান, পাকুল্লা বৌলিপাড়ায় একটি রাস্তা নির্মাণের জন্য এমপি তাকে ২০ টন টিআর দিয়েছেন। তবে কোথাও মাটি না পেয়ে রাস্তাটি নির্মাণের স্বার্থে তাকে নদীতে ড্রেজার বসাতে হয়েছে।
আর পুলিশ বলছে- গ্রামগুলো প্রত্যন্ত অঞ্চলে হওয়ায় নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা সম্ভব হয়না। সন্তোষ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. মোশাররফ হোসেন, বেশ কয়েকবার অভিযান পরিচালনা করে তারা বালু তোলা বন্ধ করেছেন। তবে ড্রেজার জব্দ বা জরিমানা করার এখতিয়ার না থাকায় পুলিশ চলে আসলেই তারা আবার কার্যক্রম শুরু করে। তবে আগামীতে ওই এলাকায় অভিযান বাড়ানো হবে।
সরেজমিন দেখা যায়, ছিলিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সাদেক আলী তার নিজ গ্রাম পাকুল্লা বৌলিপাড়া গ্রামের একটি খাল ভরাটের জন্য কুচিয়ামারী গ্রামের এলেংজানী নদীতে ড্রেজার বসিয়েছেন। গ্রামের দয়াল নামের আরেক বালু ব্যবসায়ী বেলচা দিয়ে বালু তলে ট্রাক্টরে করে দেদারসে তা বিক্রি করছেন। একইভাবে ওই ইউনিয়নের সূবর্ণতলীর নয়াপাড়া ধলেশ্বরী নদীতে চলছে শহিদুল, জাহাঙ্গীর ও রসুলদি নামে তিন বালু ব্যবসায়ীর তিনটি বাংলা ড্রেজার।
কুচিয়ামারী গ্রামের বাসিন্দা মনিরুল ইসলাম বলেন, তিন শতাধিক ব্যক্তির বসবাস এই গ্রামে। সম্প্রতি বন্যায় গ্রামটির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ভাঙন ঠেকাতে এলেংজানী নদীর পাড়ে ব্লক স্থাপনের আশ্বাস দিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ড। তবে আশ্বাসের প্রায় ছয় মাস পার হলেও এখন সেই ব্লক বসানো হয়নি। এখন চেয়ারম্যানের লোকজন ড্রেজার বসিয়ে বালু তোলার চেষ্টা করছেন। তিনি দাবি করছেন- পানি উন্নয়ন বোর্ড, এলজিইডি ও এমপির অনুমতি নিয়ে তিনি এটা করছেন। তবে স্থানীয়দের বাঁধার মুখে এখনও বালু তুলতে পারেন নি তিনি।
নদীতে বসানো ড্রেজার পরিচালনাকারী মশিউর বলেন, সাদেক চেয়ারম্যানের কথায় তারা নদীতে ড্রেজার বসিয়েছেন। নদীতে ড্রেজার চালানো জন্য এমপি এবং ইউএনও’র অনুমতি নিয়েছেন তারা।
জানতে চাইলে সদর উপজেলার সহকারি কমিশনার (ভূমি) মো. খায়রুল ইসলাম বলেন, স্থানীয়রা বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ করেছেন। দ্রুতই এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেয়া হবে।
তবে এ ব্যাপারে টাঙ্গাইল-৫ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্জ্ব ছানোয়ার হোসেনের বক্তব্য পাওয়া যায়নি
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply