মনিরুল ইসলাম কুমিল্লাঃ
কুমিল্লার মুরাদনগরে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপন না পেয়ে আবদুর রহমান নামের পাঁচ বছরের এক শিশু হত্যা করে লুকিয়ে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে।গত ২০ ফেব্রুয়ারী দিবাগত রাতে নিজ ঘর থেকে ঘুমন্ত অবস্থায় অপহরণ হয় শিশু আবদুর রহমান। এ সময় ওই শিশুর বাবার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটিও নিয়ে যায় অপহরণ কারীরা। এ ঘটনায় বাবা ফারুক মিয়া পরদিন মুরাদনগর থানায় একটি জিডি করেন। ছদ্মবেশে মুক্তিপণের টাকা দিতে গিয়ে অপহরণকারীদের হামলায় ৩ পুলিশ আহত হয়। এ ঘটনায় ওই শিশুর আপন ফুফাসহ ৩ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
আসামীদের দেওয়া তথ্যমতে সোমবার রাতে উপজেলার ছালিয়াকান্দি ইউনিয়নের বোড়ারচর গ্রামের ফুফা ময়নাল মিয়ার ফসলি জমি থেকে ওই শিশুর অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
আটককৃতরা হলেন, ছালিয়াকান্দি ইউনিয়নের বোড়াচর গ্রামের আব্দুল বাতেন বেপারীর ছেলে ময়নাল মিয়া (৩৪), আবু মুসার ছেলে ও নিহত শিশু আবদুর রহমানের ফুফা নাজমুল হাসান (৩০) এবং একই গ্রামের মজিবুর রহমানের ছেলে রবিউল হাসান (২৭)। ঘটনার ৩৮দিন পর একটি মোবাইল কলের সূত্র ধরে মুক্তিপণের টাকা দিতে গেলে অপহরণ চক্রের সদস্যদের হাতে তিন পুলিশ আহত হন। আহতরা হলেন, এসআই হামিদুল ইসলাম, সাইফুল ইসলাম ও কনস্টেবল রুবেল মিয়া।পুলিশ ও পরিবারের লোকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, অপহরণের কিছুদিন পর শিশুটির পিতা ফারুক মিয়ার মোবাইল ফোন থেকে তার স্ত্রীর নাম্বারে ফোন করে ছেলের মুক্তিপণ হিসেবে পঞ্চাশ লাখ টাকা দাবি করেন অপহরণকারীরা।
তারই জের ধরে সোমবার দিবাগত রাত ৮টার দিকে মুরাদনগর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মীর আবিদুর রহমানের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ছদ্মবেশে মুক্তিপণের টাকা দিতে বাখরাবাদ এলাকায় অপহরণ চক্রের দেয়া ঠিকানায় যান। পরে সেখান থেকে মুক্তিপণের সর্বশেষ দাবিকৃত ৪ লাখ টাকা নিতে আসে অপহরণকারী চক্রের সদস্য ময়নাল মিয়া।
টাকা নিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশ ময়নালকে ধরে ফেললে অপহরণকারী চক্রের অন্য সদস্যরা লাঠি দিয়ে এসআই হামিদুল ইসলাম ও এসআই সাইফুল ইসলামকে আঘাত করেন। এ সময় হামিদুল ইসলামের ডান পা ভেঙ্গে যায়। তখন কনস্টেবল রুবেল মিয়া এগিয়ে আসলে তাকেও আঘাত করতে থাকে। অবস্থা বেগতিক দেখে পুলিশ সাথে থাকা বন্দুক দিয়ে অপহরণকারী ময়নাল মিয়ার পায়ে গুলি করেন।
গুলির শব্দ শুনে কিছুটা দুরে থাকা মুরাদনগর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মীর আবিদুর রহমান ঘটনাস্থলে গিয়ে আহত তিন পুলিশ ও অপহরণকারী চক্রের সদস্য ময়নাল মিয়াকে মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। অবস্থা খারাপ দেখে উন্নত চিকিৎসার জন্য এসআই হামিদুল ইসলামকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। পরে ময়নাল মিয়ার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী রাতেই অপহরণের পর হত্যার সাথে জড়িত নাজমুল হাসান ও রবিউল হাসানকে গ্রেফতার করা হয়।
মুরাদনগর থানার শিশু অপহরণের পর ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপন চেয়ে না পেয়ে হত্যার ঘটনায় তিন অপহরণকারীকে আটক করেএবং তাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী শিশু আবদুর রহমানের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছি। পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় এসআই সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে একটি মামলা করেন।
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply