নিজস্ব প্রতিবেদকঃ যশোর থেকে।
বেনাপোল পৌরসভর ট্রাক টার্মিনাল ঘিরে চাঁদাবাজি চলছে বলে জোর অভিযোগ উঠেছে। চালকদের অভিযোগ, সেখানে ট্রাক রাখলেও চাঁদার টাকা আর না রাখলেও চাঁদার টাকা দিতে হবে। সেখানে সম্পুর্ণ অনৈতিকভাবে ট্রাক প্রতি ১০০ টাকা করে নেয়া হচ্ছে। ফায়ার সার্ভিস অফিসের পাশে দিয়ে বন্দরের বাইপাস সড়কে ট্রাক নিতে বাধ্য করা হচ্ছে। পৌরসভার ট্রাক টার্মিনালে সামনে যেতেই চাঁদা আদায় করা হচ্ছে বলে ট্রাক চালকদের অভিযোগে প্রকাশ। এ অবৈধ চাঁদাবাজির প্রতিবাদে বেনাপোল স্থলবন্দর ব্যবহারকারী সকল সংগঠন কঠোর আন্দোলনের হুমকি দিয়েছে।
ট্রাক চালকদের অভিযোগ, ফায়ার সার্ভিস অফিসের সামনে বাই পাস মহাসড়কের মোড়ে। পৌরসভার জ্যাকেট গায়ে বন্দরের বাইপাস সড়ক পথে পণ্যবাহী ট্রাক নিতে চালকদের বাধ্য করা হচ্ছে। ওই ট্রাকগুলো বেনাপোল পৌর ট্রাক টার্মিনালে সামনে যেতেই চক্রের সদস্যরা গতিরোধ করছে। এরপর ট্রাকগুলো টার্মিনালে ঢুকানোর জন্য বলছেন চাঁদা বাজরা। চালকরা ট্রাক রাখতে রাজি না হলেও ট্রাক প্রতি ১০০ টাকা করে চাঁদা দিতে হচ্ছে। চাঁদার টাকা না দিলেই চালকদের মারপিটসহ নানা ধরণের হুমকি ধামকি দেয়া হচ্ছে।
ঢাকা মেট্রো-ট ১৫-৫২৪০ নম্বর ট্রাকের চালক বশির উদ্দিন জানায়। বন্দরের বাইপাস সড়কের মোড়ে জোর করে ট্রাক নিতে বাধ্য করা হচ্ছে। টার্মিনালের সামনে যেতেই গতিরোধ করিয়ে ১০০টাকার স্লিপ ধরিয়ে দেয়া হচ্ছে। বলা জানায় টার্মিনালে ট্রাক রাখলেও টাকা, না রাখলেও টাকা দিতে হবে।
ঢাকা মেট্রো-ট ১৫-৫২৩৫ নম্বর ট্রাকের চালক সাইফুল ইসলাম জানায়। এক্সপোর্টের মাল লোড করা হয়েছে। কোথাও ট্রাক রাখার নিয়ম নেই। সরাসরি বন্দরে আসতে হবে। তারপরেও টার্মিনালে ট্রাক রাখার জন্য চাপাচাপি করা হয়েছে। তিনি রাখতে রাজি হননি, তারপরেও ১০০ টাকা দিতে হয়েছে। টাকা না দিলেই খারাপ ব্যবহার করা হচ্ছে।
ঢাকা মেট্রো-ট ১৫ ১৫ ৯৩, ঢাকা মেট্রো-ট ১৩-১২ ৪৪,ঢাকা মেট্রো-ট ১১-৩০০৯ নম্বরের চালকসহ আরও অনেক ট্রাকের চালক একই ধরণের অভিযোগ করেন।
সূত্র জানায়, দুই দেশের মধ্যে আমদানি-রফতানি ও বন্দর থেকে পণ্য খালাস প্রক্রিয়া সচল রয়েছে। এপথ দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ১৫০ ট্রাক পণ্য ভারতে রফতানি করা হয়, আমদানি পণ্য নিতে আসে প্রায় ৪০০ ট্রাক। রফতানি পন্য বেনাপোলে প্রবেশ করে এ বন্দরের ট্রাক টার্মিনালে ঢোকে। বন্দরের টার্মিনাল চার্জ দিয়ে চলে যায় ভারতে। যে সব ট্রাক বন্দরে আসে সব ট্রাকই ভারতে ঢুকে যায়। কিন্তু হঠাৎ আমদানি-রফতানিমুখী পণ্যবাহী ট্রাক মহা সড়ক থেকে ধরে নিয়ে ঢোকানো হচ্ছে পৌরসভার ট্রাক টার্মিনালে। পরে ট্রাক প্রতি ১০০ টাকা চাঁদা আদায় করে ছাড়পত্র দিচ্ছে। এতে দুই বার টার্মিনালে প্রবেশ করতে যেয়ে দীর্ঘ সময় দেরি ও মারাত্মকভাবে আমদানি-রফতানি বাণিজ্যে ব্যহত হচ্ছে।
এই চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে রীতিমতো ফুঁসে উঠেছে বেনাপোল স্থলবন্দর ব্যবহারকারী সংগঠনগুলো। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য ট্রাক মালিক সমিতি, ট্রান্সপোর্ট মালিক সমিতি, সিএন্ডএফ স্টাফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন বন্দর হ্যান্ডলিং শ্রমিক ইউনিয়ন ৯২৫ ও ৮৯১, বেনোপোল সিএন্ডএফ এজেন্ট অ্যাাসোসিয়েশন, বেনাপোল শার্শা নাভারণ মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন, ঝিকরগাছা নাভারণ বেনোপোল ট্রাক মালিক সমিতি উল্লেখযোগ্য। চক্রের চাঁদাবাজি বন্ধ না হলে আজ থেকে তারা আন্দোলনে নামবেন বলে জানান।
বেনাপোল ট্রান্সপোর্ট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আজিম উদ্দিন গাজী জানান, পৌরসভার এলাকাতে যানজটমুক্ত করতে ট্রাক টার্মিনাল গড়ে তোলা অবশ্যই ভালো একটি উদ্যোগ। কিন্তু এই টার্মিনালকে ঘিরে বেশুমার চাঁদাবাজি করা খুবই দুঃখজনক। চালকদের জিম্মি করে টাকা আদায় কখনো মেনে নেয়া যায়না।
তবে পৌর ট্রাক টার্মিনালের টোল ইজারাদার মোহাম্মাদ আলী জানিয়েছেন, কোন চালককে আমরা জিম্মি করে চাঁদা নেয়া হয়না। ট্রাক রাখতেও জোর করা হয়না। টার্মিনালের সামনে রাস্তা থেকে চাঁদা আদায়ের বিষয়টিও মিথ্যা।
এ বিষয়ে বেনাপোল পোর্ট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মামুন খান জানিয়েছেন, পৌর ট্রাক টার্মিনালকে ঘিরে চাঁদাবাজি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি এই ধরণের কর্মকান্ড থেকে বিরত থাকার নির্দেশনা দেয়া আছে ।
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply