মাহমুদুল হাসান,যশোর প্রতিনিধি
জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সংক্রান রোধে যশোর জেলার শার্শা উপজেলায় চলছে সর্বাতœক লকলাউন ফলে কর্মবিমুখ হয়ে পড়েছে শতশত পরিবারের সদস্যরা।এরই মধ্যে বিভিন্ন এনজিও প্রতিষ্ঠানের কাছ হতে ঝন নিয়ে বিপাকে পড়েছে অনেকেই। সপ্তাহ গেলে কিস্তির টাকা পরিশোধ করতে হিমশিম খাচ্ছে ভুক্তভোগীরা।এনজিও অফিসারদের কিস্তির টাকার তাগিদে অনেকেই বাড়ী-ঘর ছেড়ে পালিয়ে থাকছেন।তারপরও ভবিষ্যত ঝৃন না পাওয়ার চিন্তায় অভিযোগ ও জানাতে পারছেনা ঝৃন গ্রহিতারা। এমন পরিস্থিতিতে বেনাপোল পৌর কর্তৃপক্ষের ঝটিকা অভিযানে সাময়িক বন্ধ হলো এনজিও প্রতিষ্ঠান গুলোর কিস্তি আদায় কার্যক্রম।ঘটনার তথ্য সুত্রে জানা যায়, বৃহষ্পতিবার ২৪ জুন সকালে বেনাপোল পৌরসভাধীন ছোঁটআচড়া গ্রামের সোহেলের বাড়ীর পাশেই লকডাউন অমান্য করে বিছানা পেতে কিস্তি আদায় করছিলো আশার এনজিও কর্মী।
এলাকাবাসীর দেওয়া খবরে বেনাপোল পৌর সভার স্বাস্থ্য সহকারী ও পৌর স্যানেটারি ইন্সেপেক্টর রাশিদা খাতুনের নেতৃত্বে একটি আভিযানিক দল তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থলে পৌঁছে ঝৃন আদায় কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়ে। এ বিষয়ে পৌর স্বাস্থ্য সহকারী কর্মকর্তা মোঃ হাফিজুর রহমান জানান,অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা ঘটনা স্থলে পৌঁছে আশা এনজিওর এক লোন অফিসারকে কিস্তি আদায় করতে দেখি।তাৎক্ষনিক বিষয়টি শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কে অবগতি করি। তাহার নিদের্শনা অনুযায়ী আমরা কিস্তি আদায় কার্যক্রম বন্ধ করে দিই এবং ঝৃন গ্রহিতাদের লকডাউন চলাকালীন সময়ে কিস্তি দেওয়া থেকে বিরত থাকতে বলি। কিস্তি আদায় বিষয়ে আশার লোন অফিসার তুহিন হাসান বলেন,আমাদের অফিসের উর্দ্ধতনরা ঝৃন গ্রহন বন্ধ করতে কোন নির্দেশনা দেননী তাই ফিল্ডে কাজ করছি। আশা ছাড়াও শার্শা উপজেলায় আরো ১৮ টি এনজিও সংস্থা কিস্তি আদায় করছে বলে আরো জানান তিনি। উপজেলাটির টেংরার সাফিয়া খাতুন, বাঁগআচড়ার ইমাদুল ইসলাম ও বেনাপোলের ই¯্রাফিল এনজিও অফিসার কর্তৃক কিস্তি আদায়ের জন্য ঝৃন গ্রহিতাকে চাপ প্রয়োগ করার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, লকডাউনে কাজ হারিয়ে আমরা যেখানে দুবেলা ভাত খেতে পারছিনা সেখানে কিস্তি দিবো কিভাবে।
এ বিষয়ে আশার(বেনাপোল-১) ব্রাঞ্চ ম্যানেজার কাজী রেজাউর রহমান জানান,করোনা পরিস্থিতিতে আমাদের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের দিক নির্দেশনা নিয়মিত গ্রাহকের সাথে যোগাযোগ রাখার ও কাউকে কিস্তির জন্য চাপ প্রয়োগ না করা।অফিস বন্ধ রাখা বা কিস্তি নেওয়া যাবেনা এমন ধরনের কোন নির্দেশনা নাই। কিস্তি আদায় প্রসঙ্গে ব্রাক অফিস, বেনাপোলের ফিল্ড অফিসার শিশির হালদার মুঠো ফোনে লকডাউনে মাঠ পর্যায়ে কিস্তি আদায় চলছে বলে জানিয়ে ব্রাঞ্চ ম্যানেজার এর সহিত তথ্য জানতে যোগাযোগ করতে বলেন।
এ বিষয়ে ঝৃন কার্যক্রম ব্রাকের বেনাপোলের ব্রাঞ্চ ম্যানেজার কাজী মোঃ নাসির উদ্দীন জানান,আমরা মাঠ পর্যায়ে গ্রাহকদের মাঝে ফ্রি মাস্ক বিতরণ করছি।আর কিস্তি আদায়ে কোন জোরাজুরি নেই। লকডাউনে মাঠে কাজ করা যাবেনা এমন কোন উপরের নির্দেশনা এখনো হাতে আসেনী।বরং কোভিড-১৯ প্রতিরোধে“ সামাজিক দূর্গ”নামক প্রকল্পের আওতায় ৩৫ টি জেলায় সরকারের সহযোগী হিসাবে কাজ করার জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তর,মহাখালী,ঢাকার অনুমোদন রয়েছে। এদিকে ২৪ জুন যশোর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ রফিকুল হাসান স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে সকল এনজিও প্রতিষ্ঠানের ক্ষুদ্র ঝনের কিস্তি আদায় কার্যক্রম সাময়িক বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মুঠো ফোনে কল করেও রিসিভ না করায় বক্তব্য জানা যাইনী।
উল্লেখ্য আশা,ব্রাক, আদ-দ্বীন, জাগরনী, একলাব, টি এম এসএস সহ বিভিন্ন এনজিও সংস্থার কাছ হতে এ অঞ্চলের হত-দরিদ্র জনগোষ্ঠি আর্থিক ভাবে সাবলম্বী হওয়ার আশায় নিরুপায় হয়ে উচ্চ সুদেই ঝৃন গ্রহন করে থাকেন। আর বিভিন্ন কৌশলে এ সমস্ত এনজিও সংস্থা ঝৃন গ্রহিতাদের কাছ হতে সুদ সহ মূলধনের টাকা আদায় করে থাকেন। করোনাকালীন পরিস্থিতি ১ বছরের ও বেশী সময় অতিবাহিত হওয়ায় এ সমস্ত বেসরকারী এনজিও সংস্থাগুলো সামাজিক সেবা বা অনুদান প্রদানের আড়ালে গ্রাহকদের ঘাড়ে তাদের ব্যবসায়ীক করাত চালাচ্ছে বলে এলাকার বিশিষ্টজনদের অভিমত।
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply