মোঃ শাহিন আলম পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধি :
পটুয়াখালীর বাউফলে সমাজসেবা অধদপ্তরের নিবন্ধিত একটি এতিমখানার শিক্ষকের নির্যাতনের ভয়ে পালাতে গিয়ে ছাদ থেকে নিচে পরে গুরুতর আহত আরাফাত (৮) মারা গেছেন। বৃহস্পতিবার সকালে তার লাশ দাফন করা হয়েছে।
উপজেলার আধাবাড়িয়া ইউপির কাশিপুর আল ইয়াসিন শিশু সনদ ও এতিমখানায় হাফেজি পড়ছিল আরাফাত। ৮-৯ মাস আগে ওই মাদ্রাসায় তাকে ভর্তি করা হয়।
আদাবাড়িয়া ইউনিয়নের মহসেন উদ্দিন গ্রামের হাসান প্যাদার একমাত্র সন্তান। আরাফাতের দাদা নুর হোসেন প্যাদা জানান, ১৫ পাড়া পর্যন্ত কোরআন শরীফ মুখস্ত করেছিল সে।
ঘটনার দিন রবিবার বিকালে ওই মাদ্রাসার শিক্ষক জিকিরুল্লাহ আরাফাতকে পড়া মুখস্ত না হওয়ার কারণে মারধর করেন।
একপর্যায়ে আরাফাদ দৌঁড়ে মাদ্রাসার তিনতলার ছাদে উঠে যায়। ওই শিক্ষকও তার পিছনে পিছনে দৌঁড়ে ছাদে উঠেন। শিক্ষকের প্রহারের ভয়ে আরাফদ পালাতে গিয়ে একপর্যায়ে ছাদ থেকে নিচে পরে মাথায় ও ডান চোখে গুরুতর জখম হন।
তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসা না দিয়ে ওই অবস্থায় মাদ্রাসার দ্বিতীয় তলায় একটি কক্ষে ঘুমের ঔষধ দিয়ে অচেতন করে একাই রেখে দেওয়া হয়। তখন পর্যন্ত ঘটনাটি আরাফাতের বাবা ও মাকে জানানো হয়নি। পরে তার অবস্থা আরও খারাপ হলে বাবা ও মাকে খবর দেয়া হয়।
তারা ওই দিনই পটুয়াখালী থেকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। অবস্থার অবনতি হলে সেখান থেকে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
মঙ্গলবার রাত ৯টায় সে মারা যান। বুধবার পোস্টমর্টেম শেষে রাত ১১ টার দিকে লাশ বাউফলের গ্রামের বাড়ি নিয়ে আসা হয় এবং বৃহস্পতিবার সকাল ৭টায় আরাফাতকে দাফন করা হয়। এ ব্যাপারে ওই মাদ্রাসার শিক্ষক জিকিরুল্লাহর প্রতিষ্ঠানে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি।
তার ব্যবহৃত ০১৭৪৩৪২৯২৩৬ নম্বরের কল দেয়া হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তবে তার বাবা শাজাহান মল্লিক জানান, ছাদ থেকে পরার পরে তাকে ঝাড়ফুঁক দিয়ে ও আমার অপর ছেলের ফার্মেসি( কাওসার মেডিকেল হল) থেকে ঔষধ এনে চিকিৎস্যা দেয়া হয়েছে।
একাধিক শিশু শিক্ষার্থীরা জানান, আরাফাতকে রাতে ঘুমের ঔষধ দিয়ে ঘুম পরিয়ে রাখা হয়েছে। এ ব্যাপারে বাউফল থানার ওসি আল মামুন বলেন,‘ এসআই রুহুল আমিনকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে।
তিনি আমাকে জানিয়েছে, আরাফাত মাদ্রাসার সিঁড়ি থেকে পা ফসকে পরে গিয়ে আহত হন। পরে চিকিৎসাধিন অবস্থায় মারা যান। তবে আরাফাদের অভিভাবকরা এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ করলে আইগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply