লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে ইউপি সদস্য বাদশা’র বাড়িতেই অবৈধ ফেন্সিডিলের আসর বসে বলে অভিযোগ উঠেছে। সেই ‘বারে’ ফেন্সিডিল পরিবেশন করেন তারই স্ত্রী স্বপ্না বেগম।
বাদশা মিয়া কালীগঞ্জ উপজেলার গোড়ল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৪ নং ওয়ার্ডের সদস্য। তিনি ওই ওয়ার্ডের মালগাড়া গ্রামের বাসিন্দা।
স্থানীয়রা জানান, ভারতীয় সীমান্ত ঘেঁষা গ্রাম মালগাড়া চোরাচালানের আখড়া। এ পথে সবচেয়ে বেশি মাদক পাচার হচ্ছে।
বিভিন্ন ধরনের মাদকের মধ্যে স্থানীয় মাদকসেবীদের কাছে বেশি পছন্দ ফেন্সিডিল। সীমান্তের নিকটবর্তী হওয়ায় দীর্ঘ দিন ধরে এ ব্যবসায় জড়িত বাদশা মিয়া। ব্যবসা ঠিক রাখতে এবার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে গোড়ল ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ড সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। জনপ্রতিনিধির লেবাসে চলছে মাদক ব্যবসা। খুচরা-পাইকারি দুই রকম ব্যবসাই রয়েছে তার। ভারতীয় ব্যবসায়ীরা বড় চালান পাচার করে সোজা বাদশার বাড়িতে পাঠায়। সেখান থেকে অন্যান্য ব্যবসায়ীদের হাতে চলেযায় এসব মাদক।
দীর্ঘদিন এ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকায় স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে চলেন বাদশা মিয়া। মাদক বিক্রেতা ও পরিবহনকারীরা প্রশাসনের হাতে আটক হলেও মূল ব্যবসায়ী বাদশা মিয়া রয়েছে ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। অবৈধ কোনো সুবিধার বিনিময়ে স্থানীয় প্রশাসন বিষয়টি জেনেও না জানার ভান করছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।
চাহিদা বিবেচনায় স্থানীয় মাদকসেবীদের জন্য নিজ বাড়িতেই ফেন্সিডিলের বার খুলেছেন ইউপি সদস্য বাদশা মিয়া। তার বিশাল বাড়ির বারান্দায় বসার ও বিশ্রামের ব্যবস্থাও রয়েছে। প্রতিনিয়ত মাদকসেবীরা তার বাড়িতেই ভিড় জমান। হাতের কাছে নিরাপদ মাদক সেবনের ব্যবস্থা পেয়ে উঠতি স্কুল-কলেজ পড়ুয়া কিশোর-তরুণ ছুটছে বাদশা মিয়ার ফেন্সিডিলের বারে। যারফলে মাদকাসক্ত হয়েপড়ছে এলাকার যুবক ও তরুণ সমাজ। যুবসমাজকে ভয়াল মাদকের হাত থেকে রক্ষায় অবৈধ এ বার বন্ধ করতে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন স্থানীয় সুশীল সমাজ।
ইউপি সদস্য বাদশার স্ত্রী স্বপ্না বেগম নিজেই তার বাড়ির ফেন্সিডিল বারে চাহিদামত ফেন্সিডিল পরিবেশন করেন, গ্লাসে ঢেলে দেন ফেন্সিডিল। ফেন্সিডিল সেবনে যা প্রয়োজন সবই রয়েছে তাদের টেবিলে। ১০০ মিলিগ্রাম এক বোতল ফেন্সিডিলের খুচরা দাম ধরা হয় এক হাজার থেকে ১১শ’ টাকা। যার যত গ্রাম দরকার, তাকে তত গ্রাম গ্লাসে ঢেলে দিয়ে টাকা নেন।
ইউপি সদস্যের বাড়িতে মাদক সেবনে প্রশাসনের ঝামেলা নেই, এটা ভেবে মাদকসেবীদের বর্তমান নিরাপদ বার ইউপি সদস্য বাদশার বাড়ি। স্থানীয়দের এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে এর সত্যতা মিলে।
জানাযায়, ইউপি সদস্য বাদশার স্ত্রী স্বপ্না বেগম টাকা নিয়ে নিজেই পাশের রুম থেকে ফেন্সিডিল এনে টেবিলের গ্লাসে পরিবেশন করছেন। পুরো বোতল নয়, বোতলের অর্ধেক বা এক চতুর্থাংশ ফেন্সিডিল সেবন করারও ব্যবস্থা রয়েছে। যত টাকা, ততটুকুই। ফেন্সিডিল গ্লাসে পরিবেশন করা হয়।
জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, মাদক নিয়ন্ত্রণে জেলা পুলিশ নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে। অনেককেই গ্রেফতার করা হচ্ছে। তবে ইউপি সদস্যের বাসায় ফেন্সিডিল সেবনের সুব্যবস্থা রয়েছে এমন কোনো তথ্য আমাদের জানা নেই। এখন জানলাম, অবশ্যই দ্রুত অভিযান চালানো হবে।
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply