নিজস্ব প্রতিবেদকঃ নারায়ণগঞ্জ মহানগরীর সিদ্ধিরগঞ্জের গোদনাইল আট নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ এনায়েত নগর, চৌধুরী বাড়ি বউবাজার এলাকার মৃত রশিদ মিয়ার ছেলে হাজি মোঃ স্বপন মিয়া, সভাপতি, বায়তুল আমান জামে মসজিদ, তাতখানা, এর ভূমি দস্যুতা সহ নানা প্রকার অপকর্মের ফিরিস্তি ক্রমেই ভেসে উঠছে স্থানীয় অনেকের মাঝে। স্থানীয় জনশ্রুতি রয়েছে যে, তিনি বিভিন্ন পন্থায় জাল টাকার ব্যবসা ও জাল স্ট্যাম্প ও দলিল করার মাধ্যমে এখন কোটিপতি বনে গেছে। এরই মধ্যে তিনি নিজেকে স্থানীয় সমাজ সেবক ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যাক্তি হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করে নিয়েছেন। তার সকল দুর্নীতি ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের মদদদাতা স্থানীয় কাউন্সিলর রুহুল আমিন মোল্লা বলে জানায় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় অনেকেই।
প্রতিবেদনে উঠে আসে, বিগত কয়েকবছর আগে নাসিক আট নং ওয়ার্ড চৌধুরীবাড়ি বউবাজার এলাকায় স্বপনের বাড়ির নিচ তলা থেকে ৫ম তলা পর্যন্ত সিদ্ধিরগঞ্জ রেজিস্ট্রি অফিস ভাড়ায় ব্যবহার করতো। আর সেই সুবাদে শুরু হয় স্বপনের ব্যপোরোয়া ভূমি দস্যুতা। রেজিস্ট্রি এবং এসিল্যান্ড অফিসের কিছু অসাধু কর্মকর্তাদের সাথে সখ্যতা গড়ে তোলেন চতুর স্বপন। বিভিন্ন মানুষের জায়গা সংক্রান্ত জটিলতা নিয়ে তার কাছে দ্বারস্থ হলে তিনি অর্থের বিনিময়ে সমাধান করে থাকেন। বর্তমানে সিদ্ধিরগঞ্জে রেজিস্ট্রি অফিস না থাকলেও কিছু অসাধু কর্মকর্তার সাথে সখ্যতার কারণেই তিনি এখনও অনেক অসাধন কাজকে অর্থের বিনিময়ে সাধন করে থাকেন। রেজিস্ট্রি অফিসে স্বপন সারাদিনই বসে থাকেন। আর ঘুরে ঘুরে এসকল অবৈধ কাজগুলো করে থাকেন তিনি। সিদ্ধিরগঞ্জের কোন ব্যক্তি জায়গা সংক্রান্ত জটিলতার কাজ নিয়ে গেলেই রেজিস্ট্রি অফিস ও এসিল্যান্ড অফিস থেকে ধরিয়ে দেওয়া হয় স্বপনের মোবাইল নাম্বার। আর বলে দেওয়া হয় স্বপনের মাধ্যমেই হবে সমাধান।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকাবাসী জানান, কাউন্সিলর রহুল আমিন মোল্লার ঘনিষ্টজন স্বপন। আর সেই সুবাদে স্বপন দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। নিরীহ মানুষের জায়গা সংক্রান্ত জটিল কাজ সমাধান করে দিয়ে থাকেন। তবে তা প্রচুর অর্থের বিনিময়ে! অল্প অর্থের বিনিময়ে তিনি কোন কাজ করেন না। দীর্ঘদিন যাবৎ ভূমি দস্যু স্বপন বহাল তবিয়তে দুর্নীতি অপরাধ সহ বিভিন্ন অপকর্ম করে বেড়াচ্ছেন। স্থানীয় ভুক্তভোগী এলাকাবাসী তার এসকল অপরাধ অপকর্মের কারণে অতিষ্ঠ।
আরেকটি বিশেষ তথ্যসূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় হাসান মাষ্টার নামের এক আইনজীবিকে মারধর করে আটকে রেখেছিলো এই ভূমি দস্যু স্বপন। স্বপন ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা নগদ ১লক্ষ টাকা, স্বর্ণের আংটি ও মোবাইল ফোন নিয়ে যায়। এ ঘটনায় ৩০ জানুয়ারি সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় স্বপন ও সাঙ্গপাঙ্গদের নামে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিলেন আইনজীবি হাসান মাষ্টার।এছাড়াও বিভিন্ন ভাবে ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী শাহবুদ্দিন ভুমিদস্যু স্বপনের বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপা এসপি বরাবর অভিযোগ করেন।
আজিজ টেক্সটাইলের মালিক শিল্পপতি আবদুর রব বলেন, স্বপনের কাজই এইটা ভাই। কোন জায়গায় অংশ পাইলেই মামলা কইরা টাকা পয়সা নিয়ে থাকে। আগে জাল টাকার ব্যবসাও করছে। আর ওর বাড়িতে রেজিস্ট্রি অফিস থাকার আগে ও স্বপন জাল টাকার ব্যবসা করেছে।
এ বিষয়ে স্বপনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এগুলো সম্পুর্ন মিথ্যা। শাহাবুদ্দিনের সাথে কাউন্সিলরের বিবাদ। সেখানে আমাকে জড়িয়ে মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করছে। আমার বাড়িতে রেজিষ্ট্রি অফিস ভাড়া দিয়েছিলাম। কিন্তু জমি সংক্রান্ত বিষয়ে কোন কাজ করিনি। যদি কেউ প্রমান করতে পারে, তাহলে যেকোন সাজা মাথা পেতে নিবো। আইনজীবির সাথে দ্বন্দ্ব সর্ম্পকে তিনি বলেন, ও (হাসান মাষ্টার) আমার বন্ধু মানুষ। একটু মনমালিন্য হয়েছিলো, তা সমাধান হয়ে গেছে। ভাই আমি তিনবার হজ্জ্ব করেছি এবং মা-বাবাহীন একজন এতিম ছেলে।
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply