টাঙ্গাইল প্রতিনিধিঃ জেলার বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্বপারের গোল চত্ত্বরে আজ এক সড়ক দুর্ঘটনায় একই পরিবারে দুই শিশু ও এক নারীসহ ছয়জন নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে একতা পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস ও একটি মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংর্ঘষে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন, নাটোর জেলার বড়াইগ্রাম উপজেলার আগ্রান গ্রামের আব্বাছ আলীর ছেলে তাহসিন (০৬), কুমিল্লা জেলার চান্দিনা উপজেলার কুটুম্বপুর গ্রামের জগল চন্দ্র শীলের ছেলে সুশীল চন্দ্র শীল, যশোর বিএডিসির যুগ্ম পরিচালক পাবনা জেলার বেড়া উপজেলার জোরদহ গ্রামের ইমতাজ আলী প্রামানিকের ছেলে মো. জহিরুল ইসলাম (৫৫), কুমিল্লা জেলার চান্দিনা উপজেলার কুটুম্বপুর গ্রামের মৃত ফজলুল হকের ছেলে মো. দুলাল হোসেন (৫০), বগুড়া জেলার জলেশ্বরী তলার (জজকোর্ট এলাকা) মো. হেলাল উদ্দিনের স্ত্রী মালিকা বানু রুবি (৬৫), একই জেলার (জলেশ্বরী তলার) হেলাল উদ্দিনের ছেলে রিফাত আল হাসান (৪০)। দুর্ঘটনার খবর শুনার সাথে সাথেই বঙ্গবন্ধু সেতু কর্তৃপক্ষ, ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ সদস্যরা উদ্ধার তৎপরতা চালিয়েছেন ।
বঙ্গবন্ধু সেতু কর্তৃপক্ষ, ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ সূত্রে জানাযায়, উত্তরবঙ্গের চাপাইনবাবগঞ্জ থেকে ঢাকাগামী একতা পরিবহনের যাত্রীবাহী একটি বাস বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কের বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্বপাড়ের গোল চত্তর এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের বিপরীত লেনে এসে পড়ে । এ সময় ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা উত্তরবঙ্গগামী একটি মাইক্রেবাসের উপরে উঠে যায় বাসটি। এতে ঘটনাস্থলেই তিনজন এবং হাসপাতালে নেয়ার পথে আরো তিনজন মারা যায়। নিহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা কর্তৃপক্ষের।
জানাগেছে,মাইক্রোবাসে থাকা চালক, একজন পুরুষ ও একজন নারী যাত্রী ঘটনাস্থলেই মারা যায়। আর বাস যাত্রীদের মধ্যে দুই শিশু ও একজন পুরুষ যাত্রী হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যায়।
বঙ্গবন্ধু সেতু কর্তৃপক্ষের সহকারী সিকিউরিটি অ্যান্ড সেফটি ম্যানেজার রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘দুর্ঘটনার খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আমরা ঘটনাস্থলে চলে আসি। এসে দেখি মাইক্রোবাস ও বাসের যাত্রীরা চিৎকার করছেন। আমাদের বিবিএর রেসকিউ টিম এসে উদ্ধার কাজ শুরু করে। এখানে যারা আহত ছিলেন আমাদের ও ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে করে তাদের দ্রুত হাসপাতালে পাঠিয়ে দেই। এছাড়া যারা ঘটনাস্থলে নিহত হয় তাদের মরদেহ থানায় পাঠিয়ে দেয়া হয়।’
ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা আতাউর রহমান বলেন, চাপাইনবাবগঞ্জ থেকে ঢাকাগামী বাসের সঙ্গে মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে তিনজন ঘটনাস্থলেই মারা যায়। এছাড়া ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি দিয়ে টাঙ্গাইল নেয়ার পথে দুইজন মারা যায় এবং হাসপাতালে নেয়ার পর আরও একজন মারা যায়। এ ঘটনায় প্রায় ২৫ জন আহত হয়েছেন।
টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার (এসপি) সরকার মোহাম্মদ কায়সার বলেন, দুর্ঘটনা তদন্তে একটি কমিটি গঠন করা হবে। নিহতদের মরদেহ পুলিশের তত্বাবধানে রয়েছে। ময়না তদন্ত শেষে পরিচয় নিশ্চিত হবার পর মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক আতাউল গনি ঘটনাস্থল বলেন, ঘটনাটি খুবই মর্মান্তিক। দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে জেলা পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশ, বিআরটিএ’র সমন্বয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।
তিনি বলেন, দুর্ঘটনায় নিহতের পরিবারকে মরদেহ দাফনের জন্য ২০ হাজার টাকা করে দেয়া হবে। আহতদের চিকিৎসার জন্য অতিরিক্ত ওষুধের প্রয়োজন হলে তা জেলা প্রশাসন বহন করবে।
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply