ইসলামের মূল ভিত্তি হলো ৫ টি। আর তাবলীগ জামাত বলছে তাদের উসুল বা ভিত্তি ৬ টি! সুতরাং তাবলীগ জামাতিরা রাসুল হজরত মোহাম্মদ (সঃ) কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত প্রকৃত ইসলামের বিকৃত করছে!
তাবলিগ জামাত একটি ভ্রান্ত আকিদা বা মতবাদ। তাবলিগীদের বয়কট করুন। রাসুল হজরত মোহাম্মদ (সঃ) এর প্রতিষ্ঠিত ইসলাম এর পঞ্চ ভিত গড়ে তুলুন। সত্যিকারের শান্তি প্রতিষ্ঠা করুন। মনে রাখবেন ইবলিস শয়তান কখনো শয়তানের নিজের সুরতে মানুষদের ধোকা দেয়না। কারণ মানুষ খুব সহজে ইবলিস শয়তানের শয়তানি ধরে ফেলে। আর বর্তমানে এই শেষ জামানায় মানুষ জ্ঞান বিজ্ঞানে আরো উন্নত অবস্থানে আছে। এমন সময়ে ইবলিস শয়তান মানুষদের বিজ্ঞ মৌলভী ওলামা সুরতে ধোকা দিবে। মানুষ ঘুনাক্ষরেও বুঝবেনা শয়তানের ধোকায় পরেছে। ইবলিস শয়তানের ধোকাবাজি এমন নিখুঁত হবে, সরল ধর্মভীরু মানুষ তা ধর্মের অংশ হিসেবেই মনে করবে।
ঠিক যেমনটি তাবলিগ জামাতের প্রতিষ্ঠাতা এবং তার অনুসারীরা করছে! আর ধর্মান্ধ ধর্মভীরু মানুষ সরল বিশ্বাসে তা নিজেদের ধর্মের অংশ মনে করে নিজ ধর্মের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত করে ফেলেছে!
সুতরাং আসুন রাসুল হজরত মোহাম্মদ (সঃ) এর প্রতিষ্ঠিত সত্যিকারের ইসলাম বা শান্তি প্রতিষ্ঠা করে জগতে শান্তির সু বাতাস ফিরিয়ে আনি। আল্লাহর রাসূল হজরত মোহাম্মদ (সাঃ) এর প্রচারিত ও প্রসারিত ইসলামের পাঁচ স্তম্ভের মধ্যে অটল থাকুন। ভ্রান্ত আকিদার তাবলীগ জামাতের ৬ উসুল বর্জন করুন।
আল্লাহর রাসুল হজরত মুহাম্মাদ (সঃ) বলেন, ইসলামের মূল ভিত্তি বা স্তম্ভ হচ্ছে পাঁচটি। যথা: ১.কালেমা বা পবিত্র বানি (আল্লাহ ব্যতীত অন্য কোন উপাস্য নেই এবং নিশ্চয়ই মুহাম্মাদ আল্লাহর রাসুল। এ কথার সাক্ষ্য প্রদান করা) ২.সালাত (সলাত বা নামাজ আদায় করা), ৩.যাকাত (যাকাত আদায় করা) ৪.হজ্ব (হজব্রত সম্পাদন করা) এবং ৫.রোজা (রমজান মাসে সিয়ামব্রত পালন করা বা রোজা রাখা)।
তাবলিগ জামাত এর মূল ভিত্তি হিসেবে ৬টি উসুল বা মূলনীতিকে ধারণ করা হয়। এগুলো হলো, যথা: ১.কালিমা, ২.নামায, ৩.ইলম ও যিকির, ৪.একরামুল মুসলিমিন (মুসলমানদের সহায়তা করা), ৫.সহিহ নিয়ত বা এখলাসে নিয়ত (বিশুদ্ধ মনোবাঞ্ছা), এবং ৬.দাওয়াত-ও-তাবলিগ (ধর্মপ্রচারের আহ্বান)।
সংক্ষিপ্ত তাবলীগ নামা।
বর্তমানে প্রচলিত যে তাবলীগ আমরা দেখতে পাই, তাহার উদ্ভাবক ও প্রবক্তা হলো ভারতের মেওয়াত নামক স্থানের জনৈক ল্যাংড়া মৌলভী ইলিয়াছ মেওয়াতী। তার বাবা মৌলভী ইসমাইল চিশতীয়া তরিকার অনুসারী ছিলেন বলে জানা যায়। কিছু বর্ণনা মতে ইলিয়াছের পিতা চিশতীয়া তরিকার একজন পীর ছিলেন। তাই পীরের ছেলে হিসেবে সবাই তাকে সম্মান করতো। পিতার ইন্তেকালের পরে সে সুযোগ বুঝে নতুন দল তথা তাবলীগ জামাত সৃষ্টি আরম্ভ করতে থাকে।
কোনলোভে বা কিসের তাড়নায় সে ইসলাম বা শান্তির সঠিক পথ পরিহার করে ভ্রান্ত পথের আবিস্কার করল ? জানা যায়,ইহা একটি ব্রিটিশ চক্রান্ত। কেননা ব্রিটিশ সরকার বিপুল পরিমাণ অর্থ ছিটিয়ে দুশ্চরিত্র আব্দুল ওহাব নজদীকে দিয়ে ইসলামের মধ্যে ভ্রান্ত একটি দল সৃষ্টি করিয়েছে! যাহা ওহাবী মতবাদ বা দল নামে পরিচিত। আর তাবলীগী মতবাদ বা দল ওহাবী মতবাদ বা দলেরই একটি অংশ।কেননা ল্যাংড়া মৌলভী ইলিয়াছ মেওয়াতী ওহাবী গুরুঠাকুর রশীদ আহমদ গাঙ্গুয়ীর শিষ্য ছিলেন।
ওহাবী মতবাদীরা তাবলীগীদের দিয়ে মুসলমানদের মধ্যে একটা ভেড়ার দল সৃষ্টি করিয়েছে। ভেড়ার দল চলার পথে একটা ভেড়া যদি কোথাও লাফ দেয়, তাহলে সমস্ত ভেড়াগুলিও সেখানে লাফ দেয়। পেছনের ভেড়াগুলি পর্যবেক্ষণ করে না যে, সামনে আসলেই কিছু আছে কিনা। তাবলীগের অধিকাংশ অনুসারীরা সেই ভেড়ার দলের মত আচরণ করে। তাবলীগে গিয়ে তারা কোন অনুসন্ধান না করেই সবাই যা করে সেও তাই করে।
১৯২৫ খ্রিস্টাব্দে (বাংলা ১৩৪৫) সালে তাবলীগ জামাতের যাত্রা শুরু হয়। ভারতের উত্তর প্রদেশের মেওয়াত অঞ্চলের মৌলভী ইলিয়াছ মেওয়াতী এই ভ্রান্ত তাবলীগ আবিস্কার করে স্বপ্নের মাধ্যমে। স্বয়ং ইলিয়াছ মেওয়াতি বলে! “আজকাল খাবমে মুঝপর উলুমে সহীহাকা এলকা হোতা হায়” ! অর্থাৎ আজকাল স্বপ্নে আমার উপর ওহী বা ঐশী বাণীর আগমণ ঘটেছে!
যখন এই স্বপ্নে প্রাপ্ত তাবলীগ নিজ অঞ্চলে প্রচার করতে থাকে, তখন মেওয়াত অঞ্চলের আলেম-ওলামা ও সাধারণ মানুষ ইহা প্রত্যাখ্যান করেন। মেওয়াত অঞ্চলের আলেমগণ বলেন, ইহা ইসলামের পরিপন্থী এবং ইসলাম বহির্ভূত কাজ, তার কাছে ওহী আসছে! তার অর্থ এই যে, সে নিজেকে নবী দাবী করছে।
ইলিয়াছ মেওয়াতী বলতো, তোমরা আমার স্বপ্নের কথাটুকুই অন্তত বিশ্বাস কর। “উস তাবলীগ কা তরীকা ভি মুঝপর খাবমে মুনকাশিফ হুয়া” অর্থাৎ আমার কর্তৃক স্বপ্নযোগে একটি তাবলীগ ধারা উদঘাটিত ও বিকশিত হচ্ছে (মালফুজাত গ্রন্থের ৫০ নং পৃষ্ঠা)। সেজন্য সে যাতে বেশী বেশী করে ঘুমাতে পারে তার ব্যবস্থা করতে হবে (মালফুজাত গ্রন্থের ৫০ নং পৃষ্ঠা)।
পরবর্তীতে ইলিয়াছ মেওয়াতীকে মেওয়াত অঞ্চল হতে আলেমগণ ও সাধারণ মানুষ বের করে দেয়। এজন্য ইলিয়াছ মেওয়াতী তার নিজ অঞ্চলের মানুষগণকে মুশরিক হতে অধম বলতো, (মালফুজাত গ্রন্থের ১৬৩ নং পৃষ্ঠা)। এরপরে সে অন্য অঞ্চলে গিয়ে তার এই ভ্রান্ত মতবাদ প্রচার করতে থাকে।
স্বপ্ন শরিয়ত ভিত্তিক কোন দালিল নয়। স্বপ্ন অবচেতন মনের বহিঃপ্রকাশ। স্বপ্ন ইবলিস শয়তানের পক্ষ থেকেও হয়েথাকে।
যেমন ইলিয়াছ মেওয়াতীর ভক্ত মাওলানা জাকারিয়া নিজেই ‘ফাজায়েলে হজ্জ’ নামক গ্রন্থের ১৫৩ নং পৃষ্ঠায় উল্লেখ করেছে, ‘হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর হুকুম বা নিষেধ যদি স্বপ্নে দেখা যায় তাহলে সেটাকে কুরআন-হাদীসের সামনে পেশ করতে হবে। যদি তা কুরআন-হাদীসের খেলাফ হয় তাহলে বুঝতে হবে যে, স্বপ্নে শয়তানী প্রভাব আছে।
যেহেতু ৬ উসুল তাবলীগ কুরআন হাদীস বিরোধী, তাই মাওলানা জাকারিয়ার ভাষ্য অনুযায়ী ইলিয়াছ মেওয়াতীর স্বপ্নে শয়তানী প্রভাব রয়েছে। তাই ইলিয়াছি তাবলীগ সম্পূর্ণভাবে ইলিয়াছ মেওয়াতির মনগড়া মতবাদ।
এর আরও প্রমান পাওয়া যায় মাওলানা জাকারিয়া কর্তৃক লিখিত ‘ফাজায়েলে তাবলীগ’ কিতাবে। উক্ত কিতাবের ১৫ নং পৃষ্ঠায় সে উল্লেখ করে, “দ্বীন ও দ্বীনের বিধানসমূহ উপেক্ষা করিয়া নিজের মনগড়া চিন্তা ধারার মাধ্যমে দ্বীনের উন্নতি কামনা করা হইতেছে। তাই ইলিয়াছি তাবলীগ যে মনগড়া, এতে কোন সন্দেহ নেই।
মূলতঃ ইলিয়াছ মেওয়াতীর মনের ইচ্ছা ছিল সে একটি নতুন মত নতুন দল গঠন করবে। ইলিয়াছ মেওয়াতী তার শিষ্য জহিরুল হাসানকে লক্ষ্য করে বলে, “আমার একটি নতুন দল সৃষ্টি করতে হবে (সূত্রঃ তাবলীগী দর্পণ)।“
১৯৩৮ সালের ১৪ই মার্চ সৌদি আরবের তৎকালীন বাদশাহর সাথে ইলিয়াছ মেওয়াতী ৪/৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদলসহ সাক্ষাত করে। সেখানে আব্দুল ওহাব নজদীও উপস্থিত ছিল। সে এই সাক্ষাত ও আলোচনার পর থেকেই “তাবলীগ জামাতের” কার্যক্রম ব্যাপকভাবে শুরু করে।
মূলত তাবলীগ একটি নতুন ভ্রান্ত মতবাদ ও নতুন দল। এর প্রধান কার্যালয় হচ্ছে ভারতের দিল্লীর নিজামউদ্দিন আউলিয়া রহমতুল্লাহি এর মাজার সংলগ্ন মসজিদ। দ্বিতীয় কেন্দ্র হচ্ছে পাকিস্তানে এবং তৃতীয় প্রচারকেন্দ্র হচ্ছে বাংলাদেশের কাকরাইল মসজিদ।
কাকরাইল মসজিদ তাবলীগীদের থাকার জন্য আবাসিক হোটেল নামে পরিচিত। কাকরাইল মসজিদে গেলে এটা যে মসজিদ তাহা বোঝার উপায় নেই। শুধু কাপড়-চোপর টানানো এবং মাছ বাজারের মত লোকজনের চিল্লাচিল্লী।
এই হল বৃটিশদের কর্তৃক সৃষ্ট বাতিল ভ্রান্ত মতবাদ বা ফিরকার উৎপত্তি। যাহা রাসুল হজরত মোহাম্মদ (সঃ) কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত ইসলাম হতে বহু দূরে। এই ভ্রান্ত বাতিল ফেরকা বা মতবাদ বর্জন করুন।
সুফি মোহাম্মদ আহসান হাবীব
০৫ জানুয়ারী ২০২৩ খ্রীষ্টাব্দ
বৃহস্পতিবার ১০:৪৫ অপরাহ্ন
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply