পরিবার নিয়ে মানহানিকর বক্তব্যের প্রতিবাদে কাশিমপুরে জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন গাসিক ৫ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর দবির উদ্দিন সরকার।

আওয়ামী পরিবার নিয়ে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের সাময়িক বরখাস্ত মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের দেওয়া মানহানিকর বক্তব্যের প্রতিবাদে সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন গাসিক ৫ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আলহাজ্ব দবির সরকার। রোববার (১৯ মার্চ ২০২৩) বিকেলে মহানগরীর কাশিমপুরস্থ সূরাবাড়ী এলাকায় তার নিজ কার্যালয়ে এ সাংবাদিক সম্মেলন করেন।

কাউন্সিলর দবির সরকার বলেন, গত শনিবার (১৮ মার্চ) মহানগরীর জহুরা বেগম স্কুলে বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দিতে গিয়ে সাময়িক বরখাস্ত মেয়র জাহাঙ্গীর আমার পরিবার ও আমাকে নিয়ে এবং আওয়ামী পরিবারের সম্মানিত ব্যক্তিদেরকে নিয়ে বিভিন্ন রকমের বাজে মন্তব্য করে বক্তব্য দিয়েছেন। যা আমার পরিবার ও আমার দৃষ্টিগোচর হয়েছে এবং আমার পরিবারের মানক্ষুন্ন হয়েছে। তিনি বলেন, ওই বক্তব্য যদি প্রত্যাহার না করে তাহলে তার (জাহাঙ্গীর) বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

কাউন্সিলর দবির সরকার আরো বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কে নিয়ে অনৈতিক মন্তব্য করার অপরাধে গাজীপু মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক থেকে বহিষ্কার ও গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত হওয়া জাহাঙ্গীর আলম বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গিয়ে আওয়ামী পরিবারের সম্মানিত ব্যক্তিদেরকে নিয়ে সম্মানহানিকর বক্তব্য দিচ্ছেন যা অত্যন্ত দুঃখজনক।

সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে কাউন্সিলর তার পরিবারের সদস্যদের কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, আমার দাদা মরহুম সবেদ আলী সরকার দীর্ঘ দিন কাশিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন, সাভার থানা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন। আমার বাবা মরহুম গিয়াস উদ্দিন সরকার কাশিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন এবং বঙ্গবন্ধুর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ছিলেন। আমার চাচা সোহরাব উদ্দিন সরকার ১০ বছর কাশিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। আমার বড় ভাই শওকত হোসেন সরকার কাশিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের ১১ বছর চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। আমার ছোট ভাই কবির হোসেন সরকার আশুলিয়া থানা আওয়ামী যুব লীগের আহ্বায়ক হিসাবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। আমি দবির সরকার গাজীপুর মহানগরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের পর পর দুই বার নির্বাচিত কাউন্সিলর এবং কাশিমপুর থানা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক-১ হিসাবে দায়িত্ব পালন করে আসছি।

সাংবাদিক সম্মেলনে জাহাঙ্গীর আলমকে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে কাউন্সিলর বলেন “আপনার দাদা কী ছিলেন? আপনার বাবা কী ছিলেন? আপনি মেয়র হওয়ার আগে কী ছিলেন? আপনার বংশের পরিচয় কী? আপনার সৎ সাহস থাকলে মিডিয়ার সামনে আপনার পরিচয় তুলে ধরবেন। আমরা গাজীপুরবাসী জানি আপনার বাবার বাড়ী কালীগঞ্জে। আপনার বাবা কানাইয়া গ্রামে ঘর জামাই ছিলেন। আপনি মামার বাড়ীতে আশ্রিত ছিলেন। আপনার বাবা মরহুম মিজানুর রহমান ও আপনি নিজে কানাইয়া বাজারে ঠোঙ্গা বিক্রেতা ছিলেন। সেসময় আপনি ঠোঙ্গা জাহাঙ্গীর নামে পরিচিত ছিলেন। আপনি জাহাঙ্গীর আলম উল্কা সিনেমা হলে ব্ল্যাকে টিকিট বিক্রি করতেন। চৌরাস্তা আরিফ ইলেকট্রনিক্সের দোকানে কর্মচারী ছিলেন। এছাড়াও ৯ কেজি গান পাউডার নিয়ে জেএমবি মামলায় জেল খেটেছেন। ঝুট ব্যবসার নামে ফ্যাক্টরির দামি দামি জিনিসপত্র চুরি করে অনেক ফ্যাক্টরি ধ্বংস করে দিয়ে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। তার বাস্তব উদাহরণ কোনাবাড়ীর এনটিকেসি ফ্যাক্টরি। আপনি মানুষের সাথে বাটপারি করে এবং অসহায় মানুষকে ধ্বংসের পথে ঠেলে দিয়ে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। আপনি মানুষের কাছ থেকে আত্নসাৎ করা টাকা দিয়ে নির্বাচন করে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র হয়েছিলেন। মেয়র হয়ে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি করে মানুষের কাছে সমালোচনার পাত্র হয়েছেন এবং আপনার নামে মামলা চলমান রয়েছে। জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মহান মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কটুক্তি করে দল থেকে বহিষ্কৃত হয়েছিলেন এবং অনিয়মের কারণে মেয়র পদ হারিয়েছেন। সবকিছু হারিয়ে এখন আপনি উন্মাদের মত আবোল তাবোল বলছেন। যেখানে সেখানে গিয়ে সম্মানিত লোকদের অসম্মান করে কথা বার্তা বলে আপনি যে আগে ঠোঙ্গা জাহাঙ্গীর বা টোকাই জাহাঙ্গীর নামে পরিচিত ছিলেন সেই পরিচয় আবার নিজেই তুলে ধরছেন। শান্তিপ্রিয় গাজীপুরবাসীকে অশান্ত করার মিশনে নেমেছেন।”

কাউন্সিলর দবির সরকার বলেন, “আমার পরিবারের উপর বাজে মন্তব্য করে যে বক্তব্য দিয়েছেন তা অনতিবিলম্বে প্রত্যাহার করে ক্ষমা না চাইলে আমি আপনার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবো।”