বিশেষ প্রতিবেদক।। যশোর জেলার শার্শা উপজেলাস্থ বেনাপোল পৌরসভার নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী হিসেবে নৌকার মনোনয়ন পেয়েছেন সাবেক বিএনপি নেতার ছেলে এবং জামায়াতে ইসলামী রোকনের ভাতিজা নাসির উদ্দীন।
এ বিষয়ে গত রোববার (১১জুন) প্রধানমন্ত্রী বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. সেলিম রেজা।
অভিযোগে উল্লেখ্য, যশোরের বেনাপোল পৌরসভার নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী হিসেবে নৌকার মনোনীত প্রার্থী নাসির উদ্দীন তার ব্যক্তিগত ও পারিবরিক মূল পরিচয় সুকৌশলে গোপন করে মিথ্যা তথ্য ও ভিত্তিহীন উপস্থাপন করে আওয়ামী লীগ ও মনোনয়ন বোর্ডের সাথে প্রতারণা করার অভিযোগ উঠেছে।
তথ্যমতে, নাসির উদ্দিনের পুরো পরিবার ৭১ এর প্রতিশোধ চরিতার্থ করতেই বর্ণচোরা সেজে কখনও বিএনপি, কখনও জাতীয় পার্টি এবং বর্তমানে নব্য আওয়ামী লীগার হিসেবে নিজেকে উপস্থাপন করছে।
তথ্য উপাত্ত বিচার করে জানা গেছে, তার পিতামহ/দাদা – সরাসরি পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর সহায়তাকারী দোসর মৃত: মোক্তার মৌলভী। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে পাক হানাদার বাহিনীকে সহযোগিতা করেছে এবং ঐ বাড়িতেই পাকিস্তান বাহিনীর নিয়মিত আনাগোনা ছিল। তার স্বাধীনতা বিরোধী কর্মকান্ড নিশ্চিত হয়ে মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে বীর মুক্তিযোদ্ধারা তাকে হত্যা করে।
পিতা-শামসুর রহমান ওরফে গ্রেণেড সামছু, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল করীম হত্যা মামলার চার্জশীট ভুক্ত ১০ নং আসামী। ১৯৭১ সালে বীর মুক্তিযোদ্ধারা তার বাবাকে হত্যা করায় সে প্রতিশোধ নিতে ১৯৭৫ এর ১৫ আগষ্ট পরবর্তী বিএনপিতে যোগদান করে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা মিশনে নামে। যার ধারাবাহিকতায় বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল করীম কে ১৭ জুন ১৯৭৯ হত্যা করে এবং উক্ত হত্যা মামলার চার্জশীটভুক্ত আাসামী। জনাব করীম স্বাধীন বাংলাদেশে বেনাপোল ইউনিয়ন পরিষদের প্রথম চেয়ারম্যান ও উক্ত ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। এছাড়াও বীর মুক্তিযোদ্ধা রওশন আলী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেন মোল্লার হত্যাকান্ডে মদদ দাতা রয়েছে মর্মে জনশ্রুত। জিয়াউর রহমান রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকার ফলে এ সকল হত্যা মামলায় তার কিছুই হয়নি।
বিএনপির কমিটির তালিকা ক্রম নং – ০৩, ২ পাতা, হত্যা মামলার কপি ৭ পাতা।
তার সেজ চাচা – মোঃ বজলুর রহমান, জামায়াত ইসলাম এর রোকন সদস্য,বর্তমানে বেনাপোল ইউনিয়ন পরিষদ এর চেয়ারম্যান এবং যার ছত্রছায়ায় জামায়াত শিবির নেতা কর্মীরা নিরাপদ আশ্রয়ে-প্রশ্রয়ে রয়েছেন। ইতিপূর্বে বেনাপোল ইউনিয়ন পরিষদে জামায়াত সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুর রাজ্জাক এর প্রধান এজেন্ট। জামায়াত ইসলামের রাজনীতির সাথে তার প্রকাশ্যে সম্পৃক্ততা এলাকাবাসী জ্ঞাত। এখন ভাবনার বিষয় জামায়াত নেতা বেনাপোল ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আর তার ভাতিজা নাসির উদ্দিন বেনাপোল পৌরসভার মেয়র হলে দেশের গুরুত্বপূর্ণ বর্ডার এলাকা কতটা নিরাপদ? প্রার্থী নাসির উদ্দিন এর পরিচয়, ২০১২ সালে হঠাৎ নিজেকে বেনাপোল পৌরসভা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ভূয়া পরিচয় দেয়, যে কমিটি যশোর জেলা ও শার্শা উপজেলা আওয়ামী লীগ কর্তৃক কোন অনুমোদন নাই। দলের নিয়ম কানুন পদদলীত করে নিজেই নিজের কমিটি স্বাক্ষর করে নিজেকে পৌরসভার সাধারণ সম্পাদক হিসেবে পরিচয় দিয়ে পোর্ট এলাকায় নানা অনৈতিক কাজ করায় দলীয় ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে। ইতিপূর্বে বিরোধী দলে থাকা অবস্থায় কোন রাজনৈতিক কর্মকান্ডে তাকে কেউ দেখেছে মর্মে জানা যায় না। কপি সংযুক্ত: ০১ পাতা
আসন্ন বেনাপোল পৌরসভা নির্বাচনে নানা অসত্য তথ্য সরবরাহের মাধ্যমে মেয়র প্রার্থী হিসেবে আওয়ামী লীগ এর দলীয় মনোনয়ন পাওয়ায় সাধারণ জনগন শঙ্কিত ও উদ্বিগ্ন। যেহেতু ভারত আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষীয় রাষ্ট্র আর জামায়াত ভারত বিরোধী পাকিস্তানের পক্ষে সেহেতু ভারত বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এলাকায় পাকিস্তানপন্থী জামায়াত পরিবারের সদস্যদের জনপ্রতিনিধি বানিয়ে বৈধ লাইসেন্স দেওয়া আত্মঘাতী সিদ্ধান্তের শামিল বলে মনে করছে স্থানীয় জনসাধারণ।
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply