যশোর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে মাসিক আইন শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটির সভায়। যশোর জেলার থানাগুলা অভিযোগ দিলেও মামলা নিচ্ছে না পাচারসহ বিভিন্ন মামলার।
আনোয়ার হোসেন। নিজস্ব প্রতিনিধিঃ যশোর জেলার থানাগুলায় মামলা নিচ্ছে না। পাচারসহ বিভিন্ন অভিযোগ দিলে মামলা হিসাব রেকর্ড না করায় ভুক্তভোগিরা আদালতের দ্বারস্থ হচ্ছে। আদালত মামলা গ্রহণ করে তদন্তের জন্য পিবিআই সহ সিআইডিকে দায়িত্ব দিচ্ছেন। ফলে থানায় মামলার সংখ্যা কম হলেও আদালতে মামলার হার বেড়েছে। থানার ওসিরা মামলার সংখ্যা যাতে বৃদ্ধি না পায় সেজন্য ভুক্তভোগিদের সেবা না দিয়ে ফিরিয়ে দিচ্ছেন। মূলত থানায় গিয়ে মানুষজন হয়রানীর শিকার হচ্ছে।
গতকাল রোববার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে মাসিক আইন শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটির সভায় এইসব অভিযোগ করেন সদস্যরা। সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক আবরাউল হাসান মজুমদার।
সভায় আরও বলা হয়- শহরে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের দৌরাত্য দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। তারা হত্যাসহ এমন কোন অপরাধ নেই যে করছেনা। তাদের হাতে হাতে থাকে চাকু। চলতি মাসেই ৪টি হত্যার ঘটনা ঘটিয়েছে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। পুলিশ কিছু কিশোরকে আটক করলেও আইনের নানা ফাঁক দিয়ে তারা বেরিয়ে আসছে।সদর শহরের মনিহার কে যানজট মুক্ত করতে হলে প্রশাসনের ধারাবাহিক অভিযান চানানোর প্রয়োজন। মনিহার সহ যশোর-নড়াইল যশোর-খুলনা মহা সড়কের বকচর এলাকা পর্যন্ত রাস্তায় বিভিন্ন কোম্পানির বাস দাঁড়িয়ে থাকে। এদের কারণে ঘটছে সড়কে দুর্ঘটনা। ট্রাফিক বিভাগ যেন বাস মালিকদের কাছে অসহায় হয়ে পড়েছে। ফল ব্যবসায়ীরা ভ্যান নিয়ে সড়কের উপর বসছে। অভিযানে গেলে তারা পালিয়ে যায়। প্রশাসন চলে গেলে আবারও সড়কের এসে ফল বিক্রি শুরুকরে। একই সাথে মটর চালিত রিকশা শহরের যানজট বাড়াচ্ছে। এসব মটর বিক্রি বন্ধের উদ্যোগ নিতে হবে। তাহলে আর কেউ রিকশায় মটর লাগাতে পারবেনা।
সভায় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন ও জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি আসাদুজ্জামান মিঠু বলেন- সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তফা ফরিদ আহমেদ চৌধুরী আদর্শ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে নিজ বাড়িতে ডেকে নিয়ে শারীরিক নির্যাতন করেছেন। ওই শিক্ষক ভয়ে বাড়ি থেকে বের হতে পারছেনা। এতে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে। আমরা এর সঠিক তদন্ত করে বিচার দাবি করছি। জনপ্রতিনিধিরা ডিও লেটার দিয়ে বিভিন্ন স্কুল-কলেজে তাদের পছন্দের লোক জনকে সভাপতি বানাচ্ছেন। তারাই সব অনিয়মে জড়িত। বিষয়টি নিয়ে সরকারের ভাবা উচিত।
সভায় আরও বলা হয়েছে- ভৈরব নদীর পাশ দিয়ে নতুন করে একটি হোটেল নির্মাণ করা হয়েছে। ভৈরব হোটেল নামে ওই প্রতিষ্ঠান কিভাবে নদীর জায়গায় হোটেল করেন প্রশাসনের নাকের ডগায় ব্যবসা করছে তা আমাদের বোধগম্য নয়।
সভায় যশোর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বেলাল হোসাইন জানান, আমরা কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের আটকে এবং তাদের কাছ থেকে চাকু উদ্ধার অভিযান শুরু করছি। ইতিমধ্যে সব হত্যার সাথে জড়িতদের পুলিশ আটক করেছে। শহরের মধ্য চুরি ও মাদকের কারবার কমেছে। তবে অপহরণের কিছু মামলা পেন্ডিং রয়ে গেছে। অনেক সময় থানার ওসিরা অভিযোগটি সন্দেহ মনে করলে তিনি তদন্তের উদ্যোগ নেন। যেকারণে সব অভিযোগ মামলা হিসেবে রেকর্ড হয়না।
সভায় অন্যান্যর মধ্যে বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কমলেস মজুমদার, ডেপুটি সিভিল সার্জন ডাক্তার নাজমুস সাদিক রাসেল, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার অনুপ দাস, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাড. মোঃ ইসহক, যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন, যশোর পৌরসভার মেয়র হায়দার গণি খান পলাশ, জেলা স্বেচ্ছসেবক লীগের সভাপতি আসাদুজ্জামান মিঠু, প্রেসক্লাব যশোর সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন, রাইটস যশোরের নির্বাহী পরিচালক বিনয় কৃষ্ণ মল্লিক, দুনীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি মিজানুর রহমান সহ প্রমুখ।
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply