বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (বিটিএ)’র সাধারণ সম্পাদক এবং ঢাকাস্থ যাত্রাবাড়ী থানাধীন সবুজ বিদ্যাপীঠ স্কুল এন্ড কলেজ এর অধ্যক্ষ শেখ কাওছার আহমেদ কে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে সাময়িক বরখাস্তের প্রতিবাদে ও বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট স্মারকলিপি প্রদান করেছে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (বিটিএ)।
শতবর্ষের ঐতিহ্যবাহী ও এদেশের সর্ববৃহৎ শিক্ষক সংগঠন ‘বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (বিটিএ)’ -এর উদ্যোগে আজ ২১ নভেম্বর ২০২৩ মঙ্গলবার সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সমিতির সিনিয়র সহ-সভাপতি অধ্যক্ষ মোঃ আবুল কাশেম এর সভাপতিত্বে এবং সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ ইকবাল হোসেন এর সঞ্চালনায় মানববন্ধন এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট স্মারকলিপি প্রদান অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ শেখ কাওছার আহমেদ, সহ সভাপতি আলী আসগর হাওলাদার, বেগম নূরুন্নাহার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবু জামিল মোঃ সেলিম, অর্থ সম্পাদক মোস্তফা জামান খান, দপ্তর সম্পাদক মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন, সহ মহিলা বিষয়ক সম্পাদক শাহানা বেগম, কেন্দ্রীয় সদস্য মোঃ নুরুল আমিন রতন, প্রবির রঞ্জন দাস, আজম আলী খান, সোহরাব হোসেন শিকদার, আফতাব উদ্দিন চৌধুরী, ইসরাত জাহান আলো, ওবায়দুর রহমান, নিতাই চন্দ্ৰ দাস, মোঃ আজিম উদ্দিনসহ প্রমুখ শিক্ষক নেতৃবৃন্দ।
বক্তারা বলেন-
বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (বিটিএ)’র সংগ্রামী সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকাস্থ যাত্রাবাড়ী থানাধীন সবুজ বিদ্যাপীঠ স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ শেখ কাওছার আহমেদকে গত ১৩/১১/২০১৩ ইং তারিখে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। আমরা মনেকরি অধ্যক্ষ শেখ কাওছার আহমেদকে সাময়িক বরখাস্ত করার পিছনে বেসরকারি শিক্ষক সমাজের প্রাণের দাবি মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয় করণের দাবিতে বিগত ২২ দিনের সফল আন্দোলনের যারা বিরোধীতা করেছিল তাদের গভীর ষড়যন্ত্র রয়েছে।
অধ্যক্ষ শেখ কাওছার আহমেদ শিক্ষা বোর্ডের ১৫/১০/২০২৩ ইং তারিখের পত্র ৫ এর (চ) মোতাবেক প্রতিষ্ঠান প্রধান হিসেবে এসএসসি পরীক্ষা ২০২৪ এর জন্য নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের ফরম পূরণ বাবদ বিজ্ঞান বিভাগে ২১৪০/- এবং মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে ২০২০/- বোর্ড নির্ধারিত ফি জমাদানের জন্য নোটিশ প্রদান করা স্বত্ত্বেও সভাপতি মহোদয় ভিন্ন নোটিশ প্রদান করে তাঁর মনঃপুত লোক অফিসে বসিয়ে প্রতি শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে ৮১৪০/- ও ৮০২০/- ফি গ্রহণ করেছেন। যার কোন প্রকার রশিদ প্রদান করা হয়নি এবং আদায়কৃত সমূদয় অর্থ তিনি প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবে জমা না দিয়ে প্রায় ১৭,০০,০০০/- (সতেরো লক্ষ) টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
সম্প্রতি বিদ্যালয় অর্থায়নে অত্র প্রতিষ্ঠানে বেশ কিছু শিক্ষক- কর্মচারি নিয়োগ দেয়া হয়। যেখানে স্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়া অনুস্মরণ করা হয়নি। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর সভাপতি মহোদয় স্বজনপ্রীতি ও অনৈতিকভাবে পছন্দের প্রার্থী নিয়োগদানের জন্য নিয়োগ পরীক্ষার উত্তরপত্র পরিবর্তন করে নিয়োগ দিয়েছেন। এমনকি প্রতিষ্ঠান প্রধান কর্তৃক স্বাক্ষরিত নিয়োগপত্র প্রদানের বিধান থাকলেও সভাপতি মহোদয় নিজেই স্বাক্ষর করে নিয়োগপত্র প্রদান করেছেন।
অত্র প্রতিষ্ঠানে বিধিমোতাবেক অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা প্রতিবেদন, প্রতি অর্থ বছরের সিএ ফার্ম কর্তৃক নিরীক্ষা প্রতিবেদন এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শণ ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর কর্তৃক ২০১৫ এবং ২০২১ সনের ২টি নিরীক্ষা প্রতিবেদন থাকা স্বত্ত্বেও সভাপতি মহোদয় ম্যানেজিং কমিটির কোনরূপ সিদ্ধান্ত ছাড়াই সম্পূর্ণ এখতিয়ার বহির্ভূতভাবে নিজের ইচ্ছেমত একটি মনগড়া উদ্দেশ্য প্রণোদিত নিরীক্ষা প্রতিবেদন তৈরি করে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে অধ্যক্ষ শেখ কাওছার আহমেদকে এবং অফিস সহকারি মোঃ এনামুল হক খান কে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করেন ।
কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাব দানের প্রয়োজনে নিরীক্ষা প্রতিবেদনের মূল কপি চাওয়া স্বত্ত্বেও অদ্যবধি উক্ত প্রতিবেদনের মূল কপি না দিয়ে বার বার কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করে যাচ্ছেন এবং প্রায় একমাস যাবৎ অফিস সহকারি মোঃ এনামুল হক খান কে তাঁর দাপ্তরিক কাজ করার জন্য অফিস কক্ষে প্রবেশ করতে দিচ্ছেন না। এমনকি তাকে ভয়-ভীতি ও হুমকী প্রদান করে অফিসের সকল আলমারি ও ফাইল কেবিনেটের চাবি জোরপূর্বক নিয়ে অফিস কক্ষের তালা পরিবর্তন করে নতুন তালা লাগিয়েছেন।
প্রতিষ্ঠানের পানি ও বিদ্যুৎ লাইন সম্পূর্ণ অবৈধভাবে প্রতিষ্ঠানের সামনে সভাপতি মহোদয়ের নিজস্ব ক্রয়কৃত বাড়িতে সংযোগ প্রদান করেছেন। যার বিল প্রতিষ্ঠানের তহবিল থেকে অবৈধভাবে নিয়মিত প্রদান করা হচ্ছে।
অনাগত ভবিষ্যতের সুবিধা-অসুবিধার কথা বিবেচনা করে অত্র প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীগণ ব্যক্তিগত উদ্যোগে নিজস্ব বেতন থেকে চাঁদা প্রদান করে শিক্ষক কল্যাণ পরিষদ নামে একটি ব্যাংক হিসাব খুলে উক্ত চাঁদা জমা রাখছেন। কিন্তু ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মহোদয় নিজের আস্থাভাজন লোক নিয়োগ করে উক্ত কল্যাণ পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও কোষাধ্যক্ষ বানিয়ে পরিষদের তহবিল থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা তছরুপ করেছেন। যার ফলশ্রুতিতে কোষাধ্যক্ষ জনাব মাসুদ রানা বর্তমানে পলাতক রয়েছেন।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি নীতিমালা অনুযায়ী নতুন শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য প্রতিষ্ঠান কর্তৃক ফরম বিক্রি নিষেধ থাকা স্বত্ত্বেও সভাপতি মহোদয়ের নির্দেশে কোন প্রকার রশিদ ছাড়াই বিগত দুই বছর ভর্তি ফরম বিক্রি করে ফরম প্রতি ২০০/- (দুইশত) টাকা এবং শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অনুপস্থিতির জন্য নির্ধারিত জরিমানা ফি রশিদ বিহীন আদায় করে সমূদয় অর্থ সভাপতি মহোদয় আত্মসাৎ করছেন।
বিদ্যালয়ের অর্থায়নে বিভিন্ন প্রকার উন্নয়ন কাজে সভাপতি মহোদয় নিজের আশির্বাদপুষ্ট লোক দিয়ে উপ-কমিটি গঠন করেন এবং কাজ শেষে বার বার তাগিদ দেয়া স্বত্ত্বেও বিল-ভাইচার দাখিল না করে উদ্দেশ্যমূলকভাবে অধ্যক্ষ মহোদয়কে অসহযোগিতা করছেন। যার ফলে নিয়মিত ও সঠিকভাবে হিসাব-নিকাশ হালনাগাদ করা যাচ্ছে না।
সবুজ বিদ্যাপীঠ স্কুল এন্ড কলেজের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হাজী আবুল কালাম অনু মহোদয়ের ধারাবাহিক অনৈতিক কাজে বাধা প্রদান করায় বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (বিটিএ)র সাধারণ সম্পাদক ও জাতীয় শিক্ষক নেতা অধ্যক্ষ শেখ কাওছার আহমেদকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। যার ফলে সারাদেশের শিক্ষক-কর্মচারীগণ আজ উদ্বিগ্ন।
তাই সারাদেশের শিক্ষক-কর্মচারীগণ এই সাময়িক বরখাস্তের প্রতিবাদে এবং সাময়িক বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহরের দাবিতে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (বিটিএ)’র পক্ষ থেকে মানববন্ধন ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছে।
এরপরেও যদি ষড়যন্ত্রমূলক সাময়িক বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহার করা না হয় তাহলে কঠোর থেকে কঠোরতর আন্দোলনের কর্মসূচী ঘোষনা করা হবে।
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply