November 21, 2024, 12:17 pm

তথ্য ও সংবাদ শিরোনামঃ
বেনাপোল ধান্যখোলা সীমান্তে ৩৬ কেজি গাঁজাসহ ১টি মোটরসাইকেল উদ্ধার। টঙ্গীবাড়ীতে বীজ আলু ও সার ব্যাবসায়ী দের সাথে ইউএনওর মত বিনিময় সভা। বেনাপোল দিয়ে ভারতে পাচার হওয়া ২৪ জন কিশোর ও কিশোরী দেশে ফিরেছে। আ.লীগ নেতার জবর দখলে থাকা সরকারি ১২ বিঘা জমি উদ্ধার। রাজধানীতে কলেজ ও সিটি কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ। ১৫ বোতল ফেন্সিডিল সহ ০১ জন আসামী গ্রেফতার। যশোর পর্যটন খাতেও ব্যাপক ভূমিকা রাখতে পারে বাস্তবায়নে উদ্যোগ নেয়া হবে। উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ বেনাপোল বন্দর দিয়ে শুল্কমুক্ত সুবিধায় ভারত থেকে চাল আমদানি শুরু। বেনাপোলের শহীদ আব্দুল্লাহর কবর জিয়ারত করলেন উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করার দাবিতে মহাখালীতে সড়ক ও রেলপথ অবরোধ। প্রধান উপদেষ্টার ভাষণে নির্বাচনের রূপরেখা না থাকায় আশাহত হয়েছে বিএনপি। ভালুকায় দ্রব্যমূল্য স্বাভাবিক রাখতে বাজার মনিটরিং ধনবাড়ী উপজেলার নব নিযুক্ত নির্বাহী অফিসারের সাথে ধনবাড়ী উপজেলা মডেল প্রেসক্লাবের সদস্যদের সৌজন্য সাক্ষাৎ। নওগাঁ পত্নীতলার ডিগ্রি চতুর্থ বর্ষের ছাত্র সুমন হোসেন কে হত্যা করে গলায় ফাঁসি দিয়ে কাঁঠাল গাছের ঝুলিয়ে রহস্য জনক মৃত্যু। শার্শায় ৪ যুগ ধরে খবরের কাগজের ফেরিওয়ালা সিরাজ আর নেই। রাজনৈতিক গুরু হিসেবে মওলানা ভাসানীকে স্বীকৃতি দিতে হবে …… অধ্যক্ষ এম শরিফুল ইসলাম বেনাপোল হ্যান্ডলিং শ্রমিক ইউনিয়ন ৯২৫ এর বিশেষ সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত। যশোর যৌনকর্মী প্রেমিকাকে নিয়ে দ্বন্ধে হেলপার বাপ্পি খুন। মওলানা ভাসানীকে অপমান করায় আওয়ামী লীগ বিলুপ্ত প্রায় বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে সাহিত্য ও সংস্কৃতির সংস্কার চাই – রেজাবুদ্দৌলা চৌধুরী। ভালুকায় জমি দখল ও খেতের ধান কেটে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ মওলানা ভাসানীকে স্বাধীনতার স্বপ্নদ্রষ্টা হিসেবে অন্তর্ভূক্ত করার দাবি …. বীর মুক্তিযোদ্ধা মোয়াজ্জেম হোসেন খান মজলিস। দেশপ্রেমিক লোকদের সঠিক প্রক্রিয়ায় যাচাই বাছাই করে নিয়োগ দিতে হবে …… অধ্যাপক ড. সায়েদা ওবায়েদ যশোর বেনাপোল পোর্ট থানা পুলিশের কর্তৃক ৩০ বোতল ফেন্সিডিল ও ১ কেজি গাঁজা সহ ০১ জন আটক। ওষুধের দাম কমানোর আহ্বান ……এম এ আলীম সরকার গাজীপুর কোনাবাড়ীতে আবাসিক হোটেলে চলছে নারী ও মাদকের রমরমা ব্যবসা যশোর যাত্রীবাহী বাসের ভেতর থেকে রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার। সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন ঢাকাই সিনেমার একসময়ের জনপ্রিয় চিত্রনায়ক রুবেল। কোটায় চাকরিপ্রাপ্তদের তালিকা যাচাই-বাছাই করছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। গলি থেকে রাজপথ শ্যামবাজারের রক থেকে উঠে প্রাসাদে মিঠুন চক্রবর্তী

নিসচা’র ৩০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও সড়ক নিরাপত্তা লায়ন মো. গনি মিয়া বাবুল

নিসচা’র ৩০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও সড়ক নিরাপত্তা লায়ন মো. গনি মিয়া বাবুল

১ ডিসেম্বর ২০২৩ শুক্রবার নিরাপদ সড়ক চাই’র (নিসচা) ৩০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে (নিসচা) রাজধানীসহ দেশব্যাপী নানা কর্মসূচি পালন করবে। নিসচা’র প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন এর নেতৃত্বে ১ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে নয়টায় কাকরাইলস্থ নিসচার কেন্দ্রীয় কার্যালয় প্রাঙ্গন থেকে জাতীয় প্রেসক্লাব পর্যন্ত বণ্যাঢ্য র‌্যালি অনুষ্ঠিত হবে। এরপর সকাল ১১ টায় জাতীয় প্রেসক্লাবে আব্দুস সালাম মিলনায়তনে সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে সহায়তা প্রদান করা হবে। এছাড়া ১ ডিসেম্বর থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত নিসচার কেন্দ্রীয় ও শাখা সংগঠনসমূহ সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে হাঁস, মুরগী ও মাতৃছাগল বিতরণসহ বিভিন্ন মানবিক কর্মসূচি পালন করবে।

দেশব্যাপী ক্রমবর্ধমান সড়ক দুর্ঘটনা নিরসনে সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টির প্রয়োজনে এবং কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবিতে ১৯৯৩ সালে চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনের নেতৃত্বে গঠিত হয় ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ (নিসচা) নামে একটি সংগঠন। সড়ক দুর্ঘটনামুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে গঠিত নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) তার কার্যক্রমের মধ্যদিয়ে প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই দেশের সর্বস্তরের মানুষের সমর্থনে ধন্য হয়ে ওঠে। নিরাপদ সড়ক চাই প্রতিষ্ঠার এই ৩০ বছরের মধ্যে জনকল্যাণমুখী সংগঠন হিসাবে তার ব্যাপক কর্মতৎপরতায় দেশের সীমানা ছাড়িয়ে ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক পর্যায়েও পেয়ে গেছে যথেষ্ট পরিচিতি। নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) এখন একটি সফল সামাজিক আন্দোলনের নাম। ১৯৯৩ সালের ২২ অক্টোবর মারাত্মক সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে মর্মান্তিকভাবে নিহত হন চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনের স্ত্রী জাহানারা কাঞ্চন। স্ত্রী বিয়োগের শোককে শক্তিতে রূপান্তর করে চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনের নেতৃত্বে নিসচার কার্যক্রম বর্তমানে সর্বস্তরে প্রশংসিত হচ্ছে।

উল্লেখ করা যেতে পারে, এরও আগে ১৯৮৮ সালে চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন স্বয়ং মারাত্মক সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়েছিলেন। নিজের জীবনের মর্মান্তিক অভিজ্ঞতা এবং স্ত্রী বিয়োগের বেদনার বাস্তবতা, তারকা নায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনকে উদ্বুদ্ধ করে, সড়ক দুর্ঘটনায় স্বজন হারানো এবং ক্ষতিগ্রস্ত পঙ্গু মানুষের পাশে দাঁড়াতে। ক্রমবর্ধমান সড়ক দুর্ঘটনা নিরসনে সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে এবং কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবিতে ১৯৯৩ সালের ১ ডিসেম্বর বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন সংস্থা থেকে জাতীয় প্রেসক্লাব পর্যন্ত ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ শীর্ষক এক পদযাত্রায় সামিল হন তিনি। সে দিনের সেই পদযাত্রা এবং নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনকে সাংগঠনিক পর্যায়ে রূপদানের পরামর্শ এবং অনুপ্রেরণা যুগিয়েছিলেন দেশের সাংবাদিক সমাজসহ বিশিষ্টজনেরা। ইলিয়াস কাঞ্চনের নেতৃত্বে ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ শীর্ষক প্রথম পদযাত্রায় বিভিন্ন সংগঠনসহ সর্বস্তরের মানুষের ব্যাপক অংশগ্রহণই তাকে এই আন্দোলনে ব্যাপক উৎসাহ যোগায়। প্রথম পথযাত্রা শেষে জাতীয় প্রেসক্লাবের সম্মুখে বিশাল জনসমাবেশে ইলিয়াস কাঞ্চন চালক-মালিক-যাত্রী তথা জনসাধারণের এবং সরকারের উদ্দেশ্যে ২২ দফা সুনির্দিষ্ট দাবি উত্থাপন করেন।

সড়কের মড়ক থেকে জাতিকে উদ্ধারের জন্য চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন ঢাকায় ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ শীর্ষক পদযাত্রা করেই ক্ষান্ত হলেন না; তিনি তার দাবি নিয়ে ছুটে বেড়াতে থাকলেন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। আয়োজন করতে থাকলেন পথযাত্রার। তুলে ধরতে থাকলেন তার দাবিসমূহ। নায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন তার নিরাপদ সড়ক চাই দাবিকে সংগঠনে রূপান্তরিত করলেন। ১৯৯৩ সালের ১ ডিসেম্বর এফডিসি থেকে প্রেসক্লাব পর্যন্ত পদযাত্রার মধ্যদিয়ে যে আন্দোলনের যাত্রা শুরু সাংগঠনিক রূপ পাওয়ার আগেই সেই আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে সারাদেশে। শুধু ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ পদযাত্রাই নয়, পদযাত্রার শুরুতে অথবা শেষে সমাবেশে ২২ দফা প্রস্তাব উত্থাপন, সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে নিরাপদ সড়কের দাবিতে জনসচেতনতা সৃষ্টির প্রচেষ্টা সবকিছু মিলিয়ে ইলিয়াস কাঞ্চন এবং তার নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলন তথা নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) সংগঠন সামাজিক সংগঠন হিসাবে পেতে থাকে দৃঢ়ভিত্তি।
জাতীয় পর্যায়ে নিরাপদ সড়ক দিবস পালনের দাবি উত্থাপনের পাশাপাশি নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা)-এর পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রতিবছর ২২ অক্টোবর নিরাপদ সড়ক দিবস পালনের উদ্যোগ নেওয়ার জন্য জাতিসংঘের কাছে প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। এই বিষয়ে জাতিসংঘ আন্তর্জাতিকভাবে নিরাপদ সড়ক দিবস পালনে নিমিত্তে ২০০৪ সালের ৭ এপ্রিল এক সভার আয়োজন করে এবং সেই সভাতে নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা)-এর প্রতিনিধিকে উপস্থিত থাকার জন্য আমন্ত্রণ জানান।

উল্লেখ্য, জাতিসংঘের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২০০৬ সাল থেকে ‘২২ হতে ২৯ এপ্রিল’ নিরাপদ সড়ক সপ্তাহ প্রতি বছর পালিত হচ্ছে।

সড়ক দুর্ঘটনা শতকরা ৫০ ভাগ কমিয়ে আনার লক্ষ্যে জাতিসংঘ ২০১০ থেকে ২০২০ সালকে সড়ক নিরাপত্তা দশক ঘোষণা করে। কিন্তু এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হওয়ায় সময়সীমা ২০৩০ পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়। এই সময়ে মধ্যে সড়ক দুর্ঘটনা শতকরা ৫০ ভাগ কমিয়ে আনতে বাংলাদেশ অঙ্গীকারাবদ্ধ।

জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা)-এর এসব সাফল্য সড়ক সন্ত্রাস থেকে দেশকে মুক্ত করার জন্য নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা)-এর উদ্যোগ এবং কর্মৎপরতাকে আরও উৎসাহ যোগায়। ২২ অক্টোবরকে আন্তর্জাতিকভাবে নিরাপদ সড়ক দিবস হিসাবে পালনের ঘোষণা হলে নিসচার আন্দোলন সার্থক হবে বলে বিজ্ঞমহল মনে করেন। নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা)-এর পক্ষ থেকে পদযাত্রা, সংবাদ সম্মেলন, সেমিনার, আলোচনা সভা, জনসভার মতো কর্মসূচির পাশাপাশি দাবি বাস্তবায়নে স্মারকপত্র পেশ করা হয়েছে। পাশাপাশি সড়ক দুর্ঘটনায় আহতদের দ্রুত চিকিৎসা সেবা প্রদানের লক্ষ্যে দেশের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক-এর প্রয়োজনীয় স্থানে হাসপাতাল প্রতিষ্ঠারও পরিকল্পনা রয়েছে। উল্লেখ্য যে, নিসচার উদ্যোগে এসএসসি পাস বেকার যুবকদের দক্ষ চালক হিসেবে গড়ে তুলতে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে “নিসচা ড্রাইভিং ট্রেনিং ইনস্টিটিউট”। এই ইনস্টিটিউটে বিনামূল্যে ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। ১৯৯৩ সাল থেকে নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) আন্দোলনের শুরু সাংগঠনিক রূপ দেওয়ার পর কেন্দ্রীয় সংগঠনের পাশাপাশি সারাদেশে গড়ে উঠেছে এর অসংখ্য শাখা সংগঠন। নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) এর দাবির প্রেক্ষিতে ২০১৭ সালের ৫জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠকে ২২ অক্টোবরকে জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও অনুমোদন করা হয়। ২০১৭ সালের ২২ অক্টোবর ‘সাবধানে চালাবো গাড়ি, নিরাপদে ফিরবো বাড়ি’ প্রতিপাদ্যে বাংলাদেশে প্রথমবারের মত সরকারিভাবে জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস পালন করা হয়।

প্রতিবছর দিবসটিকে ঘিরে সড়ক দুর্ঘটনারোধে জনসচেতনতা বাড়ানোর লক্ষ্যে সরকারিভাবে ও বেসরকারি বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যোগে নানা কর্মসূচি পালন করা হলেও ক্রমবর্ধমান সড়ক দুর্ঘটনা নিরসন করা সম্ভব হচ্ছে না।
এ বছর সরকারিভাবে ৭ম বারের মত দিবসটি পালন করা হয়। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ছিল ‘আইন মেনে সড়কে চলি, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলি’ । জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস ২০২২ উপলক্ষে সরকারিভাবে রাজধানীসহ প্রতিটি জেলায় ও উপজেলায় বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়। সড়ক দুর্ঘটনা বন্ধের দাবিতে সোচ্চার নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা)-এর উদ্যোগে ১ অক্টোবর থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত মাসব্যাপি বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়। উল্লেখ্য যে, নিসচা দিবসটি উপলক্ষে মাসব্যাপি সচেতনতামূলক সেমিনার, আলোচনা, র‌্যালি, চালক প্রশিক্ষণ, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময়, নিরাপদ নামে স্মরণিকা, পোষ্টার-লিফলেট প্রকাশ ও বিতরণ প্রভৃতি কর্মসূচি সফলভাবে পালন করেছে।

সামাজিক অলাভজনক সংগঠন হিসেবে নিসচা দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে সড়ক দুর্ঘটনারোধে মানুষকে সচেতন করে আসছে। নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) সফলতার ৩০ বছর পেরিয়ে চলতি বছরের ১ ডিসেম্বর ৩১ বছরে পদার্পণ করছে। নিসচার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি প্রয়াত জাহানারা কাঞ্চনকে, যাঁর আত্মত্যাগে নিরাপদ সড়ক চাই সংগঠনের সূচনা। তাঁর আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি। নিসচার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্যদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। তাদের প্রতি শ্রদ্ধা, শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জ্ঞাপন করছি। নিসচার সঙ্গে বর্তমানে সংশ্লিষ্ট বাংলাদেশে ও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সড়ক দুর্ঘটনারোধে যারা কাজ করছেন তাদেরকেও জানাই আন্তরিক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা।
বর্তমান পর্যায়ে নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা)-এর কার্যক্রম যেমন সাফল্যের মুখ দেখেছে, তেমনি সড়ক দুর্ঘটনামুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা)-এর কার্যক্রম আরও প্রসারিত ও গতিশীল করে তোলার বিষয়টিও হয়ে উঠছে জরুরি। সঙ্গত কারণেই আর্থিক পৃষ্ঠপোষকতার বিষয়টিও হয়ে উঠছে অতীব গুরুত্বপূর্ণ। কার্যক্রম পরিচালনায় আর্থিক সহায়তা প্রাপ্তির লক্ষ্যকে সামনে রেখে ইতোমধ্যে নিসচা সমাজকল্যাণ অধিদফতর ও এনজিও ব্যুরোর অনুমোদন পেয়েছে। সকলের সম্মিলিত প্রয়াসের মাধ্যমে সড়ক দুর্ঘটনা নিরসন কিংবা শূন্যমাত্রায় নিয়ে আসা সম্ভব।

সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম কারণগুলো হচ্ছে, চালকের অসতর্কতা, অসচেতনতা, বেপরোয়া বা অনিয়ন্ত্রিত গতিতে গাড়ি চালানো ইত্যাদি। এ ছাড়া চালকরা অনেক সময় ক্লান্ত-পরিশ্রান্ত অবস্থায় গাড়ি চালায়। ফলে একসময় নিজের অজান্তেই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটিয়ে ফেলে। তাই চালকদের এ ব্যাপারে সচেতন হতে হবে। কোনোভাবেই অসুস্থ বা ক্লান্ত-পরিশ্রান্ত অবস্থায় গাড়ি চালানো যাবে না। প্রত্যেক মানুষেরই পর্যাপ্ত ঘুম ও বিশ্রাম প্রয়োজন। অন্যদিকে সড়ক দুর্ঘটনার আরও একটি অন্যতম কারণ চালকদের ওভারটেকিং প্রবণতা। সাধারণত রাস্তায় ধীরগতির গাড়িগুলোকে ওভারটেকিংয়ের প্রয়োজন পড়ে। এ সময় হর্ন বাজিয়ে সামনের গাড়িকে সংকেত দিতে হয়। কিন্তু অনেক সময় সংকেত না দিয়ে একজন আরেকজনকে ওভারটেক করার চেষ্টা করে, যার ফলে সামনের দিক থেকে আসা গাড়ি বের হতে না পেরে মুখোমুখি সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। সড়ক দুর্ঘটনার আরেকটি কারণ হলো ত্রুটিপূর্ণ সড়কব্যবস্থা। মহাসড়কগুলোতে বাঁক থাকার কারণে সামনের দিক থেকে আসা গাড়ি দেখতে না পেয়ে অনেক চালক দুর্ঘটনা ঘটিয়ে থাকে। রাস্তার পাশে হাট-বাজার স্থাপন এবং ওভারব্রিজ না থাকাও দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

বর্তমানে বাংলাদেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত। যোগাযোগের ক্ষেত্রেও বর্তমান সরকারের সাফল্য প্রশংনীয়। পদ্মাসেতু নির্মাণ, মেট্রোরেল নির্মাণ, কর্ণফুলি ট্যানেল নির্মাণ, ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, নতুন নতুন ওড়াল সেতু নির্মাণ, প্রায় সকল মহাড়কগুলো ৪ লেনে উন্নীতকরণ, রেলপথে ব্যাপক উন্নয়নসহ বর্তমান সরকারের নানা অর্জন থাকলেও নিরাপদ সড়ক প্রতিষ্ঠায় আশানুরূপ সফলতা অর্জন করা সম্ভব হয়নি। সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে এবং নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করার জন্যে নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে। সংশ্লিষ্টদেরকে তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে।

আমরা সড়কে আর মৃত্যু দেখতে চাই না। এজন্য সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে হবে। অনিয়মকে কোনোভাবেই প্রশ্রয় দেওয়া যাবে না। দেশের সড়ক-মহাসড়কে নিরাপদ যাত্রা নিশ্চিত করতে পারলে দুর্ঘটনার হার যেমন কমবে, তেমনি দেশে আহত ও পঙ্গু মানুষের সংখ্যা কমে আসবে। সড়ক দুর্ঘটনার মতো অভিশাপ থেকে দেশকে মুক্ত করতে হলে সবার আগে প্রয়োজন সকলের সদিচ্ছা।
সড়ক দুর্ঘটনা কমানোর লক্ষ্যে সরকার সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ প্রণয়ন ও গেজেট আকারে প্রকাশ করেছে। সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের থেকে প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে এই আইন ২০১৯ সালের ১নভেম্বর থেকে কার্যকর হয়েছে। কিন্তু আইন পাস হওয়ার পাঁচ বছর পূর্ণ হলেও আইনটি পুরোপুরি এখনও কার্যকর করা সম্ভব হয়নি। সড়কের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে ও জীবনের নিরাত্তার জন্যে বিদ্যমান আইনের যথাযথ প্রয়োগ এবং সময়োপযোগী নতুন “সড়ক নিরাপত্তা আইন” প্রণয়ন ও কার্যকর বাস্তবায়ন করতে হবে। সড়ক দুর্ঘটনারোধে চালক যাত্রীসহ সংশ্লিষ্ট সবার সচেতনতা ও সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন।

লেখক পরিচিতি ঃ
লায়ন মো. গনি মিয়া বাবুল
(শিক্ষক, গবেষক, কলাম লেখক ও সংগঠক)
যুগ্ম-মহাসচিব, নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা)
৭০ কাকরাইল, ঢাকা ১০০০।
মোবাইল ঃ ০১৫৫২৬৩১১১৮, ০১৮৪২৬৩১১১৮

আমাদের প্রকাশিত তথ্য ও সংবাদ আপনার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)

Design by Raytahost.com