সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনা এবং যুক্তি দিয়ে যিনি চিন্তা করেন তাকেই বুদ্ধিজীবী বলে।
বুদ্ধিজীবী হল কোন ব্যক্তি যিনি সমাজ সম্পর্কিত জটিল চিন্তা, গবেষণা ও প্রভাব-বিস্তারের ন্যায় বুদ্ধিবৃত্তিক কাজে জড়িত থাকেন।
প্রাত্যহিক কর্মে বুদ্ধিজীবী সকল দ্ক্ষতায় যেখানে প্রয়োজন হয় সেখানে বুদ্ধি প্রয়োগ করেন, যেগুলোতে কোন মানসিক শিক্ষার উপাদান রয়েছে,
বুদ্ধিজীবীগণ প্রায়শই অন্যের চিন্তাভাবনা মূল্যায়নের জন্য মানব অনুসন্ধানের বিমূর্ত, দার্শনিক এবং রহস্যজনক দিকগুলি ব্যবহার করে সাংস্কৃতিক মতবাদ এবং লেখনীকে সূক্ষাতিসূক্ষ বিশ্লেষণ করেন।
প্রতিষ্ঠানিক শিক্ষাবৃত্তিধারী এবং বুদ্ধিজীবী উভয়ই পারস্পারিকভাবে সম্পর্কিত হতে পারে, একজন বুদ্ধিজীবী প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষালাভ করতে পারেন এবং কোন পেশার সাথে সম্পৃক্ত থাকতে পারেন।
প্রধানত তিন ধরনের ব্যক্তিত্বগণ বুদ্ধিজীবী হিসেবে সমাজে পরিচিতি পেতে পারেন।
১. বুদ্ধিজীবী একজন ব্যক্তি, যিনি চিন্তা ও কারণকে ব্যবহার করেন। বুদ্ধি এবং সমালোচনা ও বিশ্লেষণাত্মক কারণও তার মানসিক দৃষ্টিভঙ্গীর সাথে সম্পৃক্ত। পেশাদার অথবা ব্যক্তিগত চাহিদায় একজন ব্যক্তি বিমূর্ত, চিন্তাধারা ও তাত্ত্বিক বিষয়ে জড়িত; দর্শনতত্ত্ব, সাহিত্যিক সমালোচনা, সমাজতত্ত্ব, আইন, রাজনৈতিক বিশ্লেষণকারী, তাত্ত্বিক বিজ্ঞানী হিসেবে একজন ব্যক্তির পেশা একান্তই উৎপাদনমূখী ভাবনায় নিমজ্জ্বিত হবে।
২. উল্লেখযোগ্য সাংস্কৃতিক এবং বিশেষজ্ঞ শিল্পবোদ্ধার জ্ঞান যা তাকে জনসমর্থন আদায়ে সক্ষম।
গণবুদ্ধিজীবীরা সমাজের মূল সমস্যাগুলোর সমাধান ও সমাধানের পদ্ধতির প্রস্তাব দিয়ে থাকেন এবং এর মাধ্যমে একজন গণব্যক্ত্বিত্বের স্বীকৃতি অর্জন করেন।
৩. বুদ্ধিজীবীরা সংস্কৃতির জগৎ হতে এসে রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করতে পারেন কোন বাস্তব বিষয়কে রক্ষা বা সমর্থন করার জন্য বা অন্যায়-অবিচারের প্রতিবাদ করার জন্য সৃজনশীল ভাবে কিছু করার বা মধ্যস্ততাকারী হিসেবে, যা তারা করতে পারেন, অথবা কোন মতবাদকে প্রত্যাখ্যান, কিছু করা অথবা সম্প্রসারণের মাধ্যমে, অথবা কোন একটি মুল্যবোধ-ব্যবস্থাকে সমর্থন করার মাধ্যমে।
বুদ্ধিজীবী হলেন একধরনের বুদ্ধিমান ব্যক্তি, যারা কার্যকারণ ও জটিল চিন্তাকে ব্যবহার করেন। বুদ্ধিবৃত্তি বলতে কোন ব্যক্তির নিজস্ব কর্ম, শিক্ষা, জীবনের প্রতিফলন কিংবা দর্শনবোধের মাধ্যমে সমাজকে প্রভাবান্বিত করার চিন্তাধারাকে বুঝানো হয়। এ ধরনের চিন্তাধারায় প্রশ্ন এবং উত্তরের যথার্থতার মাধ্যমে বৈশ্বিক মানদণ্ডে বিচিত্রমূখী ভাবধারার বহিঃপ্রকাশ ঘটে থাকে। তারা প্রধানত বুদ্ধিকে উপজীব্য করে পেশাদারিত্ব অথবা ব্যক্তি উদ্যোগকে কাজে লাগান। অর্থাৎ, সমাজ ও সংস্কৃতি সচেতন এবং জ্ঞান-বিজ্ঞানে দক্ষ সুশিক্ষিত মানুষ হিসেবে স্বীয় বুদ্ধির বলে বা বুদ্ধির কাজ দিয়ে তারা জীবন-জীবিকা নির্বাহ করেন। তারা জ্ঞান বা বুদ্ধিকৌশলকে যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে কাজ সম্পাদন করেন। সাধারণতঃ লেখক, শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক, শিল্পবোদ্ধা ব্যক্তিত্বগণ বুদ্ধিজীবীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। তারা তাদের ধ্যান-ধারণা অথবা সমালোচনাধর্মী চিন্তা-চেতনার যথার্থ প্রতিফলন বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ করে থাকেন। বেশিরভাগ দার্শনিক বুদ্ধিজীবী হিসেবে আখ্যায়িত, পাশাপাশি শিল্পকলা, বিজ্ঞান, সাহিত্য, বাণিজ্য, সমাজকল্যাণ সহ বিভিন্ন শ্রেণী থেকে আগত ব্যক্তি বুদ্ধিজীবী হিসেবে আখ্যায়িত হতে পারে।
মোহাম্মদ আহসান হাবীব
ব্যাবস্থাপনা পরিচালক,
সম্পাদক ও প্রকাশক
দুরন্ত সত্যের সন্ধানে (দুসস)
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply