বরিশাল জেলার মূলাদী উপজেলার পূর্ব নাজিরপুর গ্রামে অবস্থিত জয়ন্তী আইডিয়াল ল্যাবঃ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ঐতিহ্য রক্ষায় ৩ জুলাই বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা বীর মুক্তিযোদ্ধা কুতুবউদ্দিন আহমেদ। সংবাদ সম্মেলনে তিনি লিখিত বক্তব্যে বলেন, আমার স্বপ্নভঙ্গকারী দুষ্ট চক্রের মূল হোতা আবু হানিফের খপ্পর থেকে বিদ্যালয়টি উদ্ধারের মাধ্যমে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার জীবনের অর্জন ও স্বপ্ন বাস্তবায়নের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমূন্নত করার জন্য এ সংবাদ সম্মেলন। তিনি বলেন, বরিশাল জেলাধীন মুলাদী উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নে অবস্থিত জয়ন্তী আইডিয়াল ল্যাবরেটরী মাধ্যমিক বিদ্যালয়টির কাগজপত্রাদি সু-কৌশলে হাতিয়ে নিয়ে এবং স্বাক্ষর জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে মোঃ আবু হানিফ, পিতা-আব্দুল জলিল বেপারী নিজেকে সভাপতি ও প্রতিষ্ঠাতা ও তার ভাই মাসুদ বেপারী কে দাতা সদস্য বানিয়ে বরিশাল শিক্ষা বোর্ড থেকে অনুমোদন দিয়েছে। শিক্ষা বোর্ডের উক্ত নির্দেশ বাতিল সহ বিদ্যালয় ও কমিটির সকল কর্মকান্ড স্থগিত করে বীর মুক্তিযোদ্ধা কুতুবউদ্দিন আহমেদকে প্রতিষ্ঠাতা স্বীকৃতি প্রদান পূর্বক নতুন কমিটি গঠনের মাধ্যমে বীর মুক্তিযোদ্ধার স্বপ্ন বাস্তবায়নে সরকার ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরের নিকট ন্যায় বিচার প্রার্থনার জন্য সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে যথাযথ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করছি।
তিনি আরো বলেন, ১০/১১/২০২২ইং তারিখে বরিশাল শিক্ষাবোর্ড চেয়ারম্যান বরাবরে দাখিলকৃত পত্রের ধারাবাহিকতায় গত ১১/০১/২০২৩ইং তারিখ বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবরে পুনরায় লেখা পত্রটি পেশ করি। বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের বরাবরে আবেদন দিয়েও কোন সু-বিচার পাইনি এমনকি পর পর দুইটি আবেদনের পরেও বরিশাল শিক্ষাবোর্ড থেকে কোন জবাব পাইনি। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি আমি ১৯৯৯ইং সালে প্রতিষ্ঠা করি। আমি পাঠদানের জন্য ২০০০ সালে ২টি টিনসেড ঘর নিজ খরচে নির্মান করি। এরপর আমাকে রেজুলেশনের মাধ্যমে দলিলের শর্ত অনুযায়ী প্রতিষ্ঠাতা ও দাতা করা হয় । এরপর আমি ২০০১ সালে বিদ্যালয়ের নামে পাঠদানের অনুমতি করাই স্মারক নং-৯৫০/৩, তারিখঃ ২৫/০৭/২০০১। একাডেমিক স্বীকৃতি তাং-২৯/১১/২০০৫ইং ও ঊওওঘ ঘড়: ১০০৯৯০ সহ যাবতীয় কাজ সম্পন্ন করি । বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা, দাতা ও সভাপতি হিসেবে এর প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে আমি দায়িত্ব পালন করে আসছি। কিন্তু বিদ্যালয়টি চলমান অবস্থায় হঠাৎ করে ২০০৭ সালে ঘূর্ণিঝড়ে পাঠদানের জন্য নির্মিত ঘর ২টি চূর্ণবিচূর্ন হয়ে যায়।এরপর অস্থায়ী ব্যবস্থায় বিদ্যালয়টির কার্যক্রম চালু রাখার চেষ্টা করি যা উপজেলা শিক্ষা অফিসে প্রমানাদি আছে। পরবর্তীতে পুনরায় ২০১৭ সালে বিদ্যালয়টি পূর্ণ উদ্যমে চালুর লক্ষ্যে আমার নিজ খরচায় একটি ঘর (দৈর্ঘ্য ৫৫ ফিট প্রস্থ ১৫ ফিট) এবং ২০২০ সালে ৯ম ও ১০ম শ্রেণী চালুর জন্য আরেকটি ঘর (দৈর্ঘ্য ৪৫ ফিট প্রস্থ ১৫ ফিট) নির্মাণ করে বিদ্যালয়টি শিক্ষার্থীদের পাঠদানের জন্য মোট ২টি ঘর পুনঃ নির্মান করে পাঠদান চলতে থাকে। ২০/০৯/২০১৭ইং তারিখ বর্তমান সভাপতি দাবীদার মোঃ আবু হানিফের পিতা মরহুম আব্দুল জলিল বেপারীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় আমাকে পুনরায় সভাপতি করে এডহক কমিটি পূনঃগঠন করে উপ-পরিচালক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর, বরিশাল অঞ্চল, বরিশালকে নতুন নিয়োগকৃত প্রধান শিক্ষক মিসেস আরজু আক্তারের স্বাক্ষর যুক্ত পত্র প্রদান করি। ৯ম ও ১০ম শ্রেণীর ছাত্র ছাত্রীদের ভর্তির পূর্বে ক্লাস খুলতে আরো জমি প্রয়োজন হলে আমি কুতুব উদ্দিন আহমেদ আমার মেঝ ভাই নিজাম উদ্দিন আহমেদ ৬+৬=১২ শতাংশ জমি বিদ্যালয়ের নামে রেজিষ্ট্রি করে দেই, যার অবস্থান বিদ্যালয় কম্পাউন্টের মধ্যে যাহার দাগ নং- ২৪০ ও ২৪১, দলিল নং-৮৫৫। প্রসঙ্গতঃ উল্লেখ্য যে, বিদ্যালয়টির জন্য দুইটি ঘর নির্মান শিক্ষক নিয়োগসহ পাঠদান পুনরায় চলমান অবস্থায়আগস্ট,২০১৯ইং সালে ঢাকায় অবস্থানকারী এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিদের দ্বারা আমাকে মোঃ আবু হানিফ, পিতা-আঃ জলিল বেপারী, গ্রাম-পূর্ব নাজিরপুর, মুলাদী, বরিশাল অনুরোধ করে যে, যেহেতু বিদ্যালয়টি এখন ও এমপিও ভুক্ত হয়নি, সে কারনে আমরা যারা ঢাকায় আছি বিদ্যালয়টির বিষয় নিয়ে একটি মত বিনিময় সভা করি। সে অনুযায়ী ২০১৯ সালে ১১ই সেপ্টেম্বর একটি সভা ফকিরাপুল ঢাকার মুক্তি হোটেলে অনুষ্ঠিত হয়। ঐ সভায় সিদ্ধান্ত হয় যে, আবু হানিফকে সভাপতি হিসেবে একমত হলে, এরপর থেকে মোঃ আবু হানিফ অত্র বিদ্যালয় সংক্রান্ত যাবতীয় কাজে প্রতিষ্ঠাতা উদ্যোক্তা ও বর্তমান সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা কুতুবউদ্দিন আহমেদকে কমিটিতে অর্ন্তভুক্ত করে ও সাথে নিয়ে তার পরামর্শ ও দিক নির্দেশনা মোতাবেক এবং তাকে গোচরীভূত করে প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করবেন। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের সাথে বলতে হয় যে, এই সভাটি অনুষ্ঠিত হওয়ার পর পরই ৫/৭ দিনের মধ্যে মোঃ আবু হানিফ বিদ্যালয়ের যাবতীয় কাগজপত্র চাইতে থাকে, এমপিও ভূক্তির কাজ শুরু করার জন্য। আমি (কুতুবউদ্দিন আহমেদ) জবাব দেই যে, পূর্বের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সবাইকে নিয়ে মিটিং না করা পর্যন্ত কোন কাগজপত্র দেয়া যাবে না। এর পর কয়েক দিন পরপরই কাগজ পত্র চাইতে থাকে। “এক পর্যায়ে হানিফ বলে কাগজপত্র না দিলে, পরে এমপিও ভুক্ত না হলে আমাকে দায়ি করতে পারবেন না।” সে বলে, উক্ত সিদ্ধান্ত মোতাবেক সভাটি আমরা শিঘ্রই করবো। আমাকে কাজ শুরু করতে সুযোগ দিন। তখন আমি সরল বিশ্বাসে এলাকার নির্বাচিত কাউন্সিলর মোঃ আঃ মালেক বেপারী এর নিকট গচ্ছিত বিদ্যালয়ের সকল কাগজপত্র মোঃ আবু হানিফের প্রতিনিধি মোঃ মোশারফ হোসেনের নিকট হস্তান্তর করি। এরপর ঢাকায় অনুষ্ঠিত সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক উক্ত মিটিংটি সে আর কোন দিনই করেনি বরং এর পর থেকে আবু হানিফ আমার সাথে সকল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয় এবংএই কয়েক বছরের মধ্যে এমপিওভূক্তির ব্যাপারে সে কোন অগ্রগতি করতে পারেনি। ইতি মধ্যে শত শত প্রতিষ্ঠান এমপিও ভূক্ত হয়েছে বিশেষ কোটায় ও বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিও ভূক্ত হয়েছে অথচ মোঃ আবু হানিফ কিছুই করতে পারেনি। উপরোক্ত বিষয় নিয়ে আমার সন্ধেহ জাগ্রত হয়, তখন উপরে উল্লেখিত মধ্যস্থতাকারীদেরকে আমি একটা পত্র দিই তারিখ ১৫/০৮/২০২২ইং। উক্ত পত্র পেয়ে তারা আবু হানিফকে বলেন যে, বিদ্যালয় সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয় নিয়ে তোমাকে ও কুতুব ভাইকে নিয়ে বসতে চাই এবং আলোচনা করতে চাই। তখন আবু হানিফ বলে যে, জয়ন্তী আইডিয়াল ল্যাবরেটরী বিদ্যালয়টি নিয়ে কোন আলোচনার প্রশ্নই উঠে না। কোন অবস্থায়ই এ বিষয় নিয়ে উনি বা আপনাদের সাথে বসতে রাজি নই। এরপর আমার মনে আরো সন্দেহ যাগ্রত হলেবরিশাল শিক্ষা বোর্ড ও বরিশাল মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমকি বোর্ড অফিসে যাই। খোজ নিয়ে দেখি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, উপ-পরিচালকের কার্যালয় মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস, বরিশাল অঞ্চল, বরিশাল স্মারক নং-৩৭.০২.১০০০.০০০.০৬.২০.৪৩৬, তারিখঃ ০৫/০৮/২০২০ইং তারিখের মাধ্যমে একটি এডহক কমিটি অনুমোদন দেয়। উক্ত কমিটির সভাপতি মোঃ আবু হানিফ যাহা এলাকার ছাত্র, অভিবাবক, জনগণ ও মধ্যস্থতাকারীদের অন্ধকারে রেখেস্বাক্ষর জাল জালিয়াতির মাধ্যমে করে, উক্ত অফিস থেকে অনুমোদন নিয়েছে। পুনরায় সে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, বরিশাল থেকে আমি দাতা ও প্রতিষ্ঠাতা এবং এলাকার জনগনকে না জানিয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন ও অনুমোদ করিয়ে নেয়। যাহার স্মারক নং- বশিবো/বিঅ/২০২২/৫৯২৩, তারিখঃ ০৭/০৫/২০২২। সেখানেও মোঃ আবু হানিফ সভাপতি ও প্রতিষ্ঠাতা এবং তার ভাই মাসুদ বেপারী দাতা সদস্য। যেখানে আমি বা আমার পোষ্যদের কোন স্থান নেই। ইতোমধ্যে অত্র বিদ্যালয়ে একতলা বিশিষ্ট একটি ভবন নির্মিত হয়েছে। সেখানে সাইনবোর্ডেও মোঃ আবু হানিফকে প্রতিষ্ঠাতা লেখা হয়েছে। মোঃ আবু হানিফের এহেন ও নিকৃষ্ট কর্মকান্ড এলাকার জনগণের মধ্যে ঘৃণা ও ক্ষোভ ধুমায়িত হয়। তিনি আরো বলেন, আমার বয়স বর্তমানে ৭৫ বছর। পক্ষান্তরে আমি ১৯৯৯ সালে যখন স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করি, তখন আবু হানিফ ছাত্র, জন্ম তারিখ-১৮/১১/১৯৭৯ইং (১৯ বছর)। বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠায় ঘর নির্মানে ও জমি দানে তার কোন অবদান নেই। এমনকি তার ভাই মাসুদ বেপারীর কোন অবদান নেই।তার জন্ম তারিখ ১২/০৭/১৯৮৯ইং (১০ বছর) এবং ঐ সময়ে তাদের পরিবারের আর্থিক অবস্থাও অত্যন্ত করুন ছিল যা এলাকার সবাই জানে। যার কারণে আমার পরিবার তাদের বিভিন্নভাবে সাহায্য করে পরিবারটিকে টিকিয়ে রেখেছে এবং এই হানিফের শিক্ষা অর্জনে বীর মুক্তিযোদ্ধা কুতুবউদ্দিন আহমেদ এর অবদান অনেক। যার ফলে তারা কোন অবস্থাতেই প্রতিষ্ঠাতা ও দাতা সদস্য হতে পারে না এবং বরিশাল শিক্ষাবোর্ডইবা কিভাবে তাদের অবৈধ জাল-জালিয়াতিকে প্রশ্রয় ও অনুমোদন দেয়। বিষয়টি সুরাহার জন্য সংবাদপত্রের মাধ্যমে সরকারের সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য এ সংবাদ সম্মেলন করতে বাধ্য হয়েছি। সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন, নাজিরপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজের প্রতিষ্ঠাতা মোঃ নাসির সিকদার, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব দীপ আজাদ, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা মশিউর রহমান সুমন, এটলাস বাংলাদেশ লিঃ এর সাবেক উপ-মহা ব্যবস্থাপক আনোয়ার হোসেন, সাবেক বেক্সিমকো কর্মকর্তা মোঃ শওকত হোসেন প্রমুখ।
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply