আনোয়ার হোসেন নিজস্ব প্রতিনিধিঃ কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে কারফিউ, ইন্ডিয়ান ভিসা জটিলতা, ইমিগ্রেশন চত্তরে যাত্রী হয়রানীর কারণে বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন দিয়ে ভারতে যাত্রী পারাপার অর্ধেকে নেমে এসেছে। এতে প্রায় দুই কোটি টাকার রাজস্ব আয় কম হয় গেছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র নিশ্চিত করেন।
ভারত ভ্রমণ শেষে দেশে ফিরে যশোরের দিনুবন্ধু মজুমদার জানায়, ‘ভারতে যাওয়ার দিন পেট্রাপোল ইমিগ্রেশনে কাজের ধীরগতির কারণে দুই ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে। অব্যবস্থপনা ও যাত্রীদের বারবার হয়রানির কারণে এ পথ দিয়ে যাত্রীদের সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে।’
চিকিৎসা, ব্যবসা-বাণিজ্য ও ভ্রমণের জন্য বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বেনাপোল চেকপোস্ট থেকে কলকাতা ৮৩ কিঃমিঃ হলেও দর্শনা ও ভোমরা যাত্রী হয়রানী অনেক কম হওয়ার কারণে এই পথে বিমুখ হচ্ছে পাসপোর্টযাত্রী।
বেনাপোল স্থলবন্দরের পরিচালক ( ট্রাফিক ) রেজাউল করিম বলেন, ‘বেনাপোল চেকপোস্টে আন্তর্জাতিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল নির্মাণসহ অবকাঠামগত উন্নয়ন করার পর এই স্থলবন্দর দিয়ে প্রতিদিন সাত থেকে আট হাজার যাত্রী ভারতে যাতায়াত করে থাকেন। গত এক সপ্তাহ ধরে যাতায়াত একটু কম মনে হচ্ছে। আশা করছি, খুব শিগগিরই যাত্রী চলাচল স্বভাবিক হবে।
উল্লেখ্য বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনে আগত পাসপোর্টযাত্রীদের দীর্ঘদীন ধরে অব্যবস্থাপনা সহ যাত্রী হয়রানির অভিযোগ রয়েছে যা দেশের সনামধন্য প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ায় একাধিক বার প্রকাশিত হয়েছে। তবুত স্টেশনটির চিত্র বদলায়নি।
বেনাপোল ইমিগ্রেশেনে কতিপয় অসাধু কাস্টমস কর্মকর্তা,নিরাপত্তাকর্মী,পুলিশ প্রশাসন,স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ,কথিত সাংবাদিক মানি এক্সচেন্জ ব্যবসায়ী,পরিবহন ব্যবসায়ী সমন্বয়ে গড়ে ওঠেছে একটি শক্তিশালী চক্র। যারা বিভিন্ন সময়ে কৃত্রিম যাত্রী জট তৈরী করে,জাল ভ্রমণকর সরবারহ করে, ল্যাগেজ ব্যবসায়ীদের শুল্ককর ফাঁকি দিতে সাহায্য করে প্রতিনিয়ত লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।এদের কবলে পড়ে নিয়ত সাধারন যাত্রীদের বিড়ম্বনাসহ দূর্ভোগ পোহাতে হয়,আর সে থেকেই বেনাপোল ইমিগ্রেশন দিয়ে ভারত গমনাগমনে যাত্রীরা নিরুৎসাহিত হচ্ছে বলে জানা গেছে।ইমিগ্রেশন দিয়ে অন্যান্য সময় প্রতিদিন আট থেকে দশ হাজার যাত্রী ভারতে যাতায়াত করতেন। এখন সেখানে প্রতিদিন যাতায়াত করছেন গড়ে সাড়ে তিন থেকে চার হাজার যাত্রী বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনে দায়িত্বরত পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ( ওসি ) আযহারুল ইসলাম জানান, গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত সময়ে চার হাজার নয়শ’ একচল্লিশ পাসপোর্টধারী যাত্রী পারাপার হয়েছেন।এ নিয়ে গত ২২ জুলাই থেকেগত ২৮ শে জুলাই পর্যন্ত এ বন্দর দিয়ে ২৪ হাজার একশ তেত্রিশ জন যাত্রী যাতায়াত করেছেন। আগে স্বাভাবিক সময়ে প্রতিদিন আট দশ হাজার পাসপোর্ট যাত্রী দুই দেশের মধ্যে যাতায়াত করতেন। বর্তমানে যাত্রীর সংখ্যা কিছুটা কমে যাওয়ায় প্রতিদিন গড়ে সাড়ে তিন হাজার থেকে চার হাজার যাত্রী যাতায়াত করছে। সোনালী ব্যাংকের বেনাপোল শাখা ব্যবস্থাপক মহসিন আলী বলেন, বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে আগের তুলনায় যাত্রী যাতায়াত অনেক কমে গেছে। পাসপোর্ট যাত্রী যাতায়াত কমে যাওয়ায় ভ্রমণ করের ট্যাক্স এখন অনেক কম আদায় হচ্ছে।যাহার ফলে সরকারের ট্রাভেল ট্যাক্সের মাধ্যমে রাজস্ব আহরণের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না। গত এক সপ্তাহের হিসাব মতে, প্রায় দুই কোটি টাকার ভ্রমণ কর আদায় কম হয়েছে।
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply