কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে লাঞ্ছনার ঘটনায় দেশব্যাপী ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে। বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষোভ জানিয়েছেন অনেকে।
মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাইকে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আজ সোমবার প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ চিফ অ্যাডভাইজার জিওবির এক পোস্টে এ নিন্দা জানানো হয়।
পোস্টটিতে বলা হয়, ‘রোববার চৌদ্দগ্রামে মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাইকে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানাই। পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনকে এই ঘটনার তদন্ত শুরু করতে এবং অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনতে বলা হয়েছে। স্থানীয় পুলিশ জানিয়েছে যে, আব্দুল হাই হত্যাসহ নয়টি মামলায় অভিযুক্ত। আমরা সবাইকে আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।’
উল্লেখ্য, কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের বাতিসা এলাকায় আবদুল হাই কানু নামে এক মুক্তিযোদ্ধাকে লাঞ্ছনার ভিডিও এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। আগস্টের গণআন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত শনিবার নিজ এলাকা লুধিয়ারায় ফিরে আসেন আবদুল হাই কানু। এরপর গতকাল রোববার স্থানীয় কয়েকজন তাঁকে লাঞ্ছনা করে এলাকা থেকে বের করে দেয় বলে জানা গেছে।
মুক্তিযোদ্ধাকে লাঞ্ছনার ঘটনাটি গতকাল রোববার দুপুরে চৌদ্দগ্রাম উপজেলার কুলিয়ারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে ঘটেছে বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা। এ ঘটনার ভিডিওতে দেখা যায়, কয়েকজন মিলে মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই কানুকে জুতার মালা পরিয়ে এলাকা ছেড়ে যেতে বলছেন। এ সময় গ্রামবাসীর কাছে তাঁকে ক্ষমা চাওয়ার জন্যও বলতে শোনা যায়। জুতার মালা পরানো ও এলাকা ছাড়ার নির্দেশ দেওয়ার ১ মিনিট ৪৬ সেকেন্ডের এই ভিডিওটি ফেসবুকে ভাইরাল হয়।
লাঞ্ছনার ঘটনার বিষয়ে জানতে মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই কানুর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে তাঁকে পাওয়া যায়নি।
স্থানীয়রা জানায়, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকার প্রথমদিকে শীর্ষ নেতৃবৃন্দের সঙ্গে তাঁর ভালো সম্পর্কের কারণে এলাকায় প্রভাব বিস্তার করেন। স্থানীয় এক জামায়াত নেতাকে এলাকা ছাড়া করার অভিযোগও রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। কিন্তু পরে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃবৃন্দের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতির কারণে এলাকায় থাকতে পারেননি কানু। এমনকি হত্যা মামলায় আসামিও হয়েছেন।
আবদুল হাই কানুকে লাঞ্ছনায় নেতৃত্ব দেওয়া ব্যক্তিরা জামায়াতে ইসলামীর সমর্থক বলে দাবি করেছেন স্থানীয় অনেকে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা জামায়াতের আমির মো. মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘এ ঘটনার সঙ্গে স্থানীয় জামায়াতের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। প্রবাসী আবুল হাসেম আমাদের দলের কেউ না। তবে সমর্থক কিংবা অনুসারী হলেও হতে পারে। এ বিষয়ে খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে।’
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply