নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বাংলাদেশি নাগরিকদের বিদেশি পর্যবেক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিয়ে ঢাকায় নিযুক্ত বিভিন্ন দূতাবাস গর্হিত কাজ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ (শনিবার) সকাল ৮টায় ঢাকা সিটি কলেজ কেন্দ্রে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে নিজের ভোটাধিকার প্রয়োগ শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ মন্তব্য করেন তিনি।
বিভিন্ন দূতাবাসের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘তাদের দেশে ভোট কেমন হয় এ রকম কিছু কিছু নমুনা তো আমাদের জানা আছে। তবে একটা কাজ তারা ঠিক করেনি। বিভিন্ন দূতাবাসে বাংলাদেশের অনেক নাগরিক চাকরি করেন, যারা বাংলাদেশের নাগরিক এবং সেখানে চাকরি করেন, চাকরিজীবী। তাদের নির্বাচনে বিদেশি পর্যবেক্ষক হিসেবে তারা নিয়োগ দিয়েছেন, এটা অত্যন্ত গর্হিত কাজ হয়েছে। তারা একজন দেশীয় কর্মকর্তাকে পর্যবেক্ষক হিসেবে পাঠাতে পারেন না, এ কাজটি সঠিক করেননি তারা।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘এখানে অনেক ধরনের… লোক আছে। আমি তাদের চিনি। কারো পিতা ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডের সহযোগী হিসেবে জড়িত ছিল; কেউ ছিল স্বাধীনতাবিরোধী, যারা মুক্তিযুদ্ধের সময় গণহত্যা চালিয়েছে। তাদের উত্তরসূরি- এ রকম বহুজন রয়েছে। রাষ্ট্রদূতদের ওখানে তারা কাজ করে। তাদের নামও কিন্তু তারা তালিকায় দিয়েছে!’
এ প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন এটা কিভাবে গ্রহণ করেন ? নির্বাচন কমিশনের আইনে স্পষ্ট দেয়াই আছে বিদেশি পর্যবেক্ষক মানে তাদের বিদেশি হতে হবে। বিদেশি না হয়ে কিভাবে নির্বাচন কমিশন তাদের নির্বাচনী পর্যবেক্ষক হিসেবে গ্রহণ করেছেন আমি জানি না, কিভাবে তারা এটা গ্রহণ করল ?’
এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপির সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তারা এরকম গুণ্ডাবাহিনী আনবে প্রয়োজনে সন্ত্রাসী আনবে এটাতো তাদের একটা চরিত্রগত অভ্যাস। জনগণের ওপর তারা কিছুতেই আস্থা, বিশ্বাস রাখতে পারে না, ডিজিটাল পদ্ধতির উপরে তারা আস্থা রাখতে পারে না। কারণ তারা জানে যে এই পদ্ধতিতে ভোট কারচুপি করা যায় না। কারচুপির সুযোগ না পেলে তারা এই ধরনের গুণ্ডামি-সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাতে চায়। অতীতে যা করেছে তারা তা আবার করতে চায়।’
বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘এই ধরনের পথ পরিহার করে জনগণের আস্থা অর্জনে সচেষ্ট হোন।’
ঢাকা উত্তর দক্ষিণে নৌকার প্রার্থী জয়ী হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা । সকাল আটটার কয়েক মিনিট আগে ভোটকেন্দ্রে আসেন প্রধানমন্ত্রী। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে আটটা বাজলে তিনি তার ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন।
আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের বিজয় প্রত্যাশা করে তিনি বলেছেন, “আমি অবশ্বই ভোটার হচ্ছি আমাদের ফজলে নূর তাপসের (নির্বাচনী এলাকায়)। তাপসকে আমি ভোট দিয়েছি। আর উত্তরে আমাদের আতিক। সে আমাদের প্রার্থী। আমি আশা করি সেও জয়যুক্ত হবে। ইনশাআল্লাহ, আমরা জয়ী হয়ে ঢাকা শহরবাসীর জন্য পরিচ্ছন্ন, উন্নত একটা শহর গড়ে তুলব।”
প্রধানমন্ত্রী ইভিএমে ভোট দেওয়া অত্যন্ত সহজ এবং সময় বাঁচায় বলে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, “আমি মনে করি পর্যায়ক্রমিকভাবে সমগ্র বাংলাদেশে এই ডিজিটাল পদ্ধতিতে ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা করতে পারবে আমাদের নির্বাচন কমিশন। যাতে দেশের মানুষের ভোটের অধিকার সুনিশ্চিত হয়। কেউ যেন কারো ভোট কেড়ে নিতে না পারে।”
এবারই প্রথম ইভিএমে ভোট হচ্ছে ঢাকার দুই সিটিতে। সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়েছে ভোট গ্রহণ। এই নির্বাচনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে। এরই মধ্যে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ দুই সিটির বিভিন্ন এলাকার ভোটকেন্দ্র থেকে বিএনপির মেয়র প্রার্থী ও কাউন্সিলর প্রার্থী এবং স্বতন্ত্র কাউন্সিলর প্রার্থীর এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে মারধর করে বা জোড় করে বের করে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়াও কিছু কিছু কেন্দ্রে বিরোধী দলের কাউন্সিলর প্রার্থী ও স্বতন্ত্র কাউন্সিলর প্রার্থী ও তাদের সমর্থকদের মারধরের অভিযোগ উঠেছে। আবার কোথাও কাউন্সিলর প্রার্থী ও সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে।
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply