বিশেষ প্রতিনিধিঃ মিয়ানমারের ঢেকিবনিয়া, নাগপুরা, গদুরা ও বলি বাজারে ৪টি শীর্ষ ইয়াবা পাচারকারী গ্রুপের সংঘবদ্ধ একটি দল অবস্থান নিয়েছে। তারা সেখানে ইয়াবার লেনদেন নিয়ন্ত্রণ করছে বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে। যে কারণে উখিয়া সীমান্তের বেশ কয়েকটি পয়েন্ট দিয়ে রীতিমত অবাক করার মতো ইয়াবার চালান আসছে, ঘটছে গুলিবর্ষণের ঘটনা। তবে বিজিবি কর্মকর্তা বলছেন, তারাও সীমান্ত এলাকা কড়া নজরদারিতে রেখেছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বালুখালীর একজন সাবেক জনপ্রতিনিধি জানান, কাদিরাঘাঁট ঢেকিবনিয়া রহমতের বিল সাইক্লোন সেল্টার, চাকমা কাটা, বালুখালী পূর্ব পাড়া কাটা পাহাড় (চন্দ্র পাড়া), বেতবুনিয়া গোলপাতা বাগানের পয়েন্টসহ ৪টি পয়েন্ট এখন ইয়াবা কারবারিদের নিরাপদ রুট। ওই জনপ্রতিনিধি জানান, বালুখালী কাটা পাহাড় চন্দ্র পাড়া চিংড়ি ঘের দিয়ে গত ১৭ এপ্রিল রাত আড়াইটার দিকে বড় ধরনের একটি ইয়াবার চালান পাচারকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ সময় পূর্ব পাড়া গ্রামের মৃত মোহাম্মদ ছিদ্দিকের ছেলে নাজমুল (২২) গুলিবিদ্ধ হয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এদিকে উখিয়া থানা পুলিশ পরদিন বেলা ১২টার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বেশকিছু আলামত সংগ্রহ করেছে বলে স্থানীয় সাংবাদিকদের জানানো হয়। বালুখালীর নুরুল আবছার মেম্বার জানান, বালুখালী ক্যাম্পে ইয়াবার লেনদেন ব্যবহার ও পতিতাবৃত্তি আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে গেছে। সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসার পরপরই বালুখালীর পরিবেশ অপরাধ জগতের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়। ভয়ানক এ অনৈতিক পরিবেশ এখনই দমন করা না হলে পরবর্তীতে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাকে পরিবেশ সহনীয় পর্যায়ে রাখতে গিয়ে হিমশিম খেতে হবে। উখিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নিহাদ আদনান তাইয়ান উখিয়া সীমান্ত দিয়ে ইয়াবার চালান পাচার হয়ে আসার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ২৭ এপ্রিল শনিবার রাত আড়াইটার দিকে বালুখালী ক্যাম্পের দক্ষিণ পশ্চিমে চিংড়ি ঘের পার হয়ে ব্রিজের উপর দিয়ে ৪/৫ জন ইয়াবা কারবারি ক্যাম্পে ঢুকার চেষ্টা করছিল। এসময় পুলিশ ধাওয়া করলে ইয়াবার বস্তা ফেলে পাচারকারীরা পালিয়ে গেলেও একজন পাচারকারীকে চিহ্নিত করা গেছে বলে তিনি জানান। উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আবুল খায়ের জানান, এ ঘটনায় উখিয়া থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা হয়েছে। কক্সবাজার ৩৪ বিজিবির লেঃ কর্নেল আলী হায়দার আজাদ আহমদ বলেন, সীমান্তের নাফ নদী পার হয়ে চিংড়ি ঘের এলাকা দিয়ে ইয়াবার চালান আসছে। তিনি বলেন, নাফ নদী ও চিংড়ি ঘেরে মাছ ধরে জীবন ধারণের সঙ্গে জড়িত পরিবারগুলোর কথা চিন্তা করে কঠিন সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে না। তথাপিও বিজিবি কঠোর অবস্থানে রয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, এ পর্যন্ত ৪ লাখ পিস ইয়াবা ও ৬০ জন ইয়াবা কারবারিকে আটক করা হয়েছে। এর মধ্যে মারা গেছে তিনজন ইয়াবা কারবারি।
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply