মাদরাসার চিলেকোঠায় আমেনা খাতুন (১২) নামে ছাত্রীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধারের পর পুলিশ অভিযুক্ত মাদরাসাপ্রধানসহ ৪ শিক্ষককে গ্রেফতার করেছে। অভিযুক্ত মাওলানা মোস্তফা (৪০) সলিমগঞ্জে অবস্থিত জান্নাতুল ফেরদাউস মহিলা মাদরাসার প্রধান শিক্ষক।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর সলিমগঞ্জে মাদরাসার এক প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগে মামলা হয়েছে। মাদরাসার চিলেকোঠায় আমেনা খাতুন (১২) নামে ছাত্রীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধারের পর পুলিশ অভিযুক্ত মাদরাসাপ্রধানসহ ৪ শিক্ষককে গ্রেফতার করেছে। অভিযুক্ত মাওলানা মোস্তফা (৪০) সলিমগঞ্জে অবস্থিত জান্নাতুল ফেরদাউস মহিলা মাদরাসার প্রধান শিক্ষক।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ২০১৫ সালে প্রতিষ্ঠিত মাদ্রাসায় প্রায় ২০০ ছাত্রী লেখাপড়া করছে। তাদের মধ্যে ৫০ জন ছাত্রী মাদরাসার আবাসিক হোস্টেলে থেকে লেখাপড়া করে। ঘটনার শিকার ছাত্রী আমেনা খাতুন ষষ্ঠ শ্রেণির আবাসিক শিক্ষার্থী। নবীনগরের পার্শ্ববর্তী বাঞ্ছারামপুর উপজেলার কাঞ্চনপুর গ্রামে আমেনাদের বাড়ি। পিতা সৌদীপ্রবাসী মমিনুল ইসলাম। একমাত্র কন্যা আমেনাকে মাদরাসায় শিক্ষা দিতে হোস্টেলে রেখেছিলেন তিনি।
মা সেলিনা খাতুন বলেন, সোমবার সন্ধ্যায় সেলিম মেম্বার নামের ব্যক্তি আমার মেয়ের মৃত্যুর খবর দেন। দ্রুত ছুটে যাই সলিমগঞ্জের মাদরাসায়। সেখানে গিয়ে দেখি মাদরাসার চতুর্থ তলার চিলেকোঠায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় আমার মেয়ের লাশ ঝুলছে। খোঁজ নিয়ে জানতে পারি, মাদরাসার প্রধান শিক্ষক মোস্তফা মাওলানা বিকেলে আমার মেয়েকে ধর্ষণ করেন। মাদরাসার দ্বিতীয় তলায় থাকা তার অফিস কক্ষে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করার সময় মেয়ের মৃত্যু হয়। পরে মাদরাসার একজন পরিচালক ও চারজন শিক্ষকের সহযোগিতায় মেয়ের লাশটিকে চিলিকোঠায় ফাঁসিতে ঝুলিয়ে রাখা হয়।
এদিকে মাদরাসার হোস্টেলে ছাত্রীর মৃত্যু সংবাদ পেয়ে নবীনগর থানার ওসি রনোজিত রায় ও বাঞ্ছারামপুর থানার ওসি সালাউদ্দিন চৌধুরী রাতেই ঘটনাস্থলে ছুটে যান। অভিযোগ শুনে ছাত্রীর লাশ উদ্ধার করে নবীনগর থানায় নেওয়া হয়। এ ঘটনায় ছাত্রীর মা সেলিনা খাতুন বাদী হয়ে ছয়জনের নাম উল্লেখসহ মামলা দায়ের করেন। পুলিশ রাতেই মাদরাসার অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক মাওলানা মোস্তফা (৪০), শিক্ষক মাওলানা আনোয়ার হোসেন (৩০), মাওলানা আল আমীন (২৮) ও হাফেজ মো. ইউনুছ মিয়াকে (৬০) গ্রেফতার করে। তারা সকলে এজাহারভূক্ত আসামি। গ্রেফতারকৃতদের মঙ্গলবার আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
নবীনগর থানার ওসি রনোজিত রায় বলেন, ছাত্রীর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগে মামলা হয়েছে। প্রধান শিক্ষকসহ চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনাটি সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে।
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply