আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ সব ডাক্তার এবং রোগতত্ববিদদের মতে করোনা-ভাইরাস এ আক্রান্ত নিউইয়র্কের চূড়ান্ত ভয়াবহ বিপর্যয়ের এখনো কয়েক দিন বা সপ্তাহ বাকি, অথচ এরই মধ্যে অধিকাংশ পাবলিক হাসপাতালগুলোর প্রয়োজনীয় মেডিক্যাল সরঞ্জামাদি এবং পার্সোনাল প্রোটেক্টিভ ইকুইপমেন্ট বা পিপিই এর সংকট দেখা দিয়েছে। তাছাড়া করোনাতে চরমভাবে আক্রান্ত রোগীদের শাসকষ্টজনিত জটিলতা রোধের সবচেয়ে প্রয়োজনীয় উপকরণ ভেন্টিলেটর এর চরম ঘাটতি রয়েছে অঙ্গরাজ্যটিতে। অনেকেই শঙ্কা প্রকাশ করেছেন আগামী পাঁচ দিনের মধ্যে পর্যাপ্ত পরিমান ভেন্টিলেটর জোগাড় করা না গেলে অনেক রোগী বিনা চিকিৎসায় মারা যেতে পারে।
এমনি এক পরিস্থিতিতে নিউইয়র্কের গভর্নর এন্ড্রো কুমো জানিয়েছেন প্রাইভেট হাসপাতালগুলোর মজুদে যেসব পিপিই ও ভেন্টিলেটর রয়েছে, সেগুলো জনস্বার্থে তিনি জরুরি ক্ষমতাবলের আদেশ দিয়ে করায়ত্ত করবেন এবং সরকারি হাসপাতালগুলোতে আক্রান্ত রোগীদের সেবায় ব্যবহার করবেন। তিনি বলেন, “এতে তারা আমার বিরুদ্ধে যদি মামলা করে, করুক। তবুও জনগণের জীবন বাঁচাতে আমি এই ভেন্টিলেটর এবং পিপিই গুলো ব্যবহার করবো।”
এদিকে নিউইয়র্কে চারিদিকে হতাশার মাঝে আশার আলো নিয়ে পাশে এসে দাঁড়িয়েছে চীন। চীন নিউইয়র্কের এই দুর্দিনে ১ হাজার ভেন্টিলেটর সরবরাহ করবে বলে জানিয়েছে। তাছাড়া ওরিগন অঙ্গরাজ্য থেকে আরো ১৪০ টি ভেন্টিলেটর আসবে বলে জানানো হয়েছে।
নিউইয়র্কের গভর্নর এন্ড্রো কুমো শনিবার তার নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন সামনের দিনগুলোর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ইতিমধ্যে তিনি তার ক্ষমতাবলে মেডিক্যাল ছাত্রদের (যারা এখনো গ্রাজুয়েশন শেষ করেনি) ডাক্তারদের সহায়তা করার জন্য জরুরি প্রজ্ঞাপনে স্বাক্ষর করেছেন।
আশঙ্কা করা হচ্ছে আগামী ২৪ ঘন্টায় নিউইয়র্কে প্রায় ১ হাজার মানুষ করোনাতে আক্রান্ত হয়ে মারা যাবে। প্রবাসী বাংলাদেশী কমিউনিটির মাঝে ইতিমধ্যে বেশ উদ্বেগ এবং উৎকণ্ঠা পরিলক্ষিত হচ্ছে। নিউইয়র্কের স্টাটেন আইলেন্ড, কুইন্স, এস্টোরিয়া প্রভৃতি বাংলাদেশী অধ্যুসিত অঞ্চলগুলোতে প্রচুর মানুষের আক্রান্তের সংবাদ পাওয়া যাচ্ছে। আরটিভি অনলাইন ইতিমধ্যে ৬৫ জন প্রবাসী বাংলাদেশির মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করতে পেরেছে যার মাঝে নিউইয়র্কে মারা গিয়েছেন ৬০ জন। তাছাড়া শনিবার নিউইয়র্কে করোনাতে আক্রান্ত হয়ে শতাধিক বাংলাদেশির হাসপাতালে ভর্তির সংবাদ আমরা পেয়েছি। এদের মাঝে অধিকাংশই কুইন্স এর বাসিন্দা। তাছাড়া নিউইয়র্কের পার্শবর্তী অঙ্গরাজ্য নিউ জার্সিতেও শতাধিক বাংলাদেশী আক্রান্ত হয়েছেন বলে আমরা নিশ্চিত হতে পেরেছি। আক্রান্তদের অধিকাংশই নিম্নবিত্ত শ্রেণীর এবং ঘন্টা চুক্তিতে বিভিন্ন গ্রোসারি স্টোরে বা গ্যাস স্টেশন এ কাজ করেন বলে জানা গিয়েছে।
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply