করোনা পরিস্থিতির পর সীমান্ত বাণিজ্য শুরু হলেও বেনাপোল দিয়ে শুধু ভারতীয় পণ্য আমদানি হচ্ছে। আর বাংলাদেশের রফতানি পণ্যগুলো প্রবেশে অনুমতি দিচ্ছে না ভারত। একপেশে এমন বাণিজ্যের প্রতিবাদে বুধবার (১ জুলাই) সকাল থেকে বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারতীয় পণ্য আমদানি বন্ধ করে দিয়েছে বন্দর ব্যবহারকারী সংগঠনগুলো।
দেখা গেছে, বেনাপোল বন্দরে আটকা পড়েছে শতাধিক রফতানি পণ্য বোঝাই ট্রাক। গত তিন মাস ধরে এসব ট্রাক আটকে আছে এই বন্দরে। দীর্ঘ ৩ মাস বন্ধ থাকার পর গত ৭ জুন বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি বাণিজ্য চালু হলেও বাংলাদেশের রফতানি পণ্য গ্রহণে কোনও আগ্রহ নেই ভারতীয় পক্ষের। ভারত সরকার ও সেদেশের ব্যবসায়ীরা ভারতীয় পণ্য বাংলাদেশে প্রবেশের অনুমতি দিলেও বাংলাদেশি রফতানি পণ্য ভারতে প্রবেশের অনুমতি দিচ্ছে না। এ কারণে বেনাপোল চেকপোস্ট এলাকায় সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে আছে তৈরি পোশাক, পাটজাত পণ্যসহ বিভিন্ন রফতানি পণ্যবাহী ট্রাক। দীর্ঘদিন থেকে এসব ট্রাক দাঁড়িয়ে থাকায় রোদ বৃষ্টিতে ভিজে পুড়ে পণ্যগুলো নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
বেনাপোল বন্দরে আমদানি বন্ধের ঘোষণা দেওয়ায় ভারতের পেট্রাপোল বন্দরে আটকা পড়েছে সারি সারি পণ্য বোঝাই ট্রাক।
আর আজ এই ঘোষণা আসায় ভারতের পেট্রাপোল বন্দরেও আটকা পড়েছে বাংলাদেশে প্রবেশের অপেক্ষায় শত শত পণ্য বোঝাই ট্রাক। সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট কর্মচারীরাও বাংলাদেশি রফতানি পণ্য গ্রহণের দাবিতে আমদানি বানিজ্য বন্ধের সিদ্ধান্তের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেন।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আলহাজ মফিজুর রহমান সজন জানান, ভারত আমদানি পণ্য দিলেও তারা বাংলাদেশী রফতানি পণ্য গ্রহন করছে না। যার জন্য রফতানিকারক ব্যবসায়ীরা ভারত থেকে আসা আমদানি পণ্যের বাণিজ্য বন্ধের ঘোষণা দিয়েছেন। বুধবার (১ জুলাই) থেকে ভারতীয় কোনও আমদানি পণ্য বাংলাদেশে প্রবেশ করেনি। বাংলাদেশি রফতানি পণ্য ভারতে ঢুকতে না পেরে মোটা অঙ্কের ট্রাক ভাড়া গুনতে হচ্ছে রফতানিকারকদের।
বেনাপোল কাস্টমস এর কার্গো শাখার সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা শামিমুর রহমান বলেন, রফতানি পণ্য ভারত গ্রহণ না করায় বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা আমদানি বাণিজ্যে বন্ধের ঘোষণা দেয়। যার জন্য থেকে আমদানি বাণিজ্য বন্ধ রয়েছে।
ভারত রফতানি পণ্য না নেওয়ায় আমদানি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বেনাপোল বন্দর সংশ্লিষ্ট সব সংগঠন। ফলে পেট্রাপোল বন্দরের গেট বন্ধ রেখেছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ।
ভারতের পেট্রাপোল বন্দরের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস ওয়েলফেয়ার স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে বাংলাদেশি রফতানি পণ্য নেওয়া হচ্ছে না। বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা যদি মনে করে তারা এই ভাইরাসের কারণে আমদানি পণ্য নেবে না তাহলে সেটা তাদের ব্যাপার। আমাদের বিধি নিষেধ থাকার কারণে আমরা বাংলাদেশ থেকে রফতানি পণ্য নিতে পারছি না।
বেনাপোল বন্দরের উপ-পরিচালক মামুন কবীর তরফদার জানান, বাংলাদেশি রফতানি পণ্য ভারত গ্রহণ না করায় বাংলাদেশি বন্দর ব্যবহারকারী বিভিন্ন সংগঠন সকাল থেকে ভারতীয় পণ্য আমদানি বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে ওপারে শত শত পণ্য বোঝাই ট্রাক আটকে আছে যত্রতত্র। অনুরূপভাবে বেনাপোল বন্দর এলাকায় ও রফতানি পণ্য বোঝাই ট্রাক আটকে আছে ভারতে যাওয়ার অপেক্ষায়।
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply