টাঙ্গাইল প্রতিনিধিঃ টাঙ্গাইলের মধুপুরে একই পরিবারের স্বামী-স্ত্রী ও তাদের ছেলে-মেয়েকে নৃশংসভাবে গলা কেটে হত্যা করে গেটে তালা ঝুলিয়ে রেখে যায় দুর্বৃত্তরা। তিন-চার দিন ধরে কোনও সাড়া-শব্দ ছিল না বাড়িটিতে। কারও আসা-যাওয়াও চোখে পড়েনি। বাড়ির গেটে ঝুলছিল তালা। হঠাৎ পঁচা দুর্গন্ধ বের হওয়ায় এলাকাবাসী পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে গেটের তালা ভেঙে বাবা-মা, ছেলে-মেয়ের অর্ধগলিত ক্ষতবিক্ষত গলা কাটা লাশ উদ্ধার করে। লাশের সারা শরীর ছিল আঘাতে ক্ষতবিক্ষত। হয়তো উপর্যোপরি আঘাতের পর গলা কেটে হত্যা করা হয় তাদের। এমনটাই ধারনা করছেন পুলিশ ও স্থানীয়রা। বাড়ির কর্তা আব্দুল গনি মিয়া ছিলেন রিকশাভ্যান চালক। কেন একটি সাধারন পরিবারের সব সদস্যকে এমন নৃশংসভাবে হত্যা করা হলো, বলতে পারছেন না কেউই। প্রাথমিক তদন্তে বিশেষ কোনও ক্লুও পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ। শুক্রবার (১৭ জুলাই) সকালে টাঙ্গাইলের মধুপুরে এই চার জনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহতরা হলেন, ওই এলাকার ভ্যান রিকশা চালক আব্দুল গনি মিয়া (৪৫), তার স্ত্রী তাজিরন বেগম ওরফে বুচি (৩৭), ছেলে তাইজুল (১৬) ও মেয়ে সাদিয়া (১০)। মধুপুর পৌর এলাকার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তরা আবাসিক এলাকার (মাস্টারবাড়ি) একতলা একটি বাসা থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়। মধুপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তারিক কামাল বলেন, ‘কিছু দিন আগে আব্দুল গনি মিয়া এখানে একতলা একটি বাড়ি করে পরিবার নিয়ে বসবাস শুরু করেন। গত তিন-চারদিন ধরে তাদের কোনও সাড়াশব্দ পাওয়া যাচ্ছিলো না। বাইরে থেকে তাদের বাসার গেট তালাবদ্ধ ছিল। আজ সকালে বাসার ভেতর থেকে দুর্গন্ধ আসা শুরু হলে স্থানীয়রা বিষয়টি পুলিশকে জানায়। পরে পুলিশ গিয়ে তালা ভেঙে তাদের লাশ উদ্ধার করে।’ তিনি আরও বলেন, ‘ধারণা করা হচ্ছে দুই-তিন দিন আগে দুর্বৃত্তরা তাদের গলা কেটে হত্যার পর লাশ রেখে গেছে। নিহত চার জনের মধ্যে তিন জনের লাশ খাটের ওপর ও একজনের লাশ মেঝেতে পড়ে ছিল। কী কারণে তারা খুন হয়েছেন এখনও তা জানা যায়নি। সিআইডির ক্রাইম সিনের সদস্যরা এসে বাড়িটি ঘিরে রেখেছেন। আরও তদন্তের পর হত্যার কারণ জানা যাবে।’ ইতোমধ্যে জেলা পুলিশের ঊধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এদিকে ঘটনাস্থলে উৎসুক জনতার ভিড় সৃষ্টি হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে হিমশিম খেতে হচ্ছে। টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায় ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর বলেন, ‘ঘটনাস্থলে একটি কুড়াল পাওয়া গেছে। নিহতদের শরীরে কুড়ালের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। লাশগুলো ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হবে। ঘটনাস্থলে সিআইডির ক্রাইম সিনের সদস্য, ডিবি, র্যাবসহ গোয়েন্দা পুলিশ রয়েছে। তারা ঘটনা উদঘাটনে কাজ করছে। আশা করছি খুব দ্রুতই খুনের কারণ জানা যাবে। এছাড়াও দ্রুতই অপরাধীদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হবো।
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply