নিজস্ব প্রতিবেদকঃ কক্সবাজারের টেকনাফে পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ উখিয়ার আলোচিত ইউপি সদস্য বখতিয়ারসহ রোহিঙ্গা মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছে। শুক্রবার (২৪ জুলাই) ভোরে টেকনাফের হ্নীলার ওয়াব্রাংয়ে সৌদি প্রবাসী নুর হোসেনের আকাশমনি বাগানে ইয়াবা ও অস্ত্র উদ্ধারে গেলে ‘বন্দুকযুদ্ধের’ ঘটনায় তারা নিহত হয় বলে দাবি করেছেন টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ। এ ঘটনায় ৫টি দেশীয় এলজি, ইয়াবা বিক্রির ১০ লাখ নগদ টাকা, ১৭ রাউন্ড কার্তুজ, ১৩ রাউন্ড কার্তুজের খোসা এবং ৪০ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন ওসি।
তবে, স্থানীয়দের দাবি দুদিন আগে আলাপের কথা বলে বখতিয়ার মেম্বারকে বাড়ি থেকে টেকনাফ থানা পুলিশ ডেকে নিয়ে যায়।
নিহতরা হলেন, উখিয়ার রাজাপালং ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য কুতুপালংয়ের মৃত কালা মিয়ার ছেলে মৌলভী বখতিয়ার (৫৫) ওরফে বখতিয়ার উদ্দিন মেম্বার ও একই এলাকার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ইউছুপ আলীর ছেলে রোহিঙ্গা মো. তাহের (২৭)। বখতিয়ার মেম্বার স্থানীয় ভাবে রোহিঙ্গা রাজা বলে পরিচিত এবং দীর্ঘ তিন বার রাজাপালং ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য নির্বাচিত হয়ে দায়িত্বপালন করে আসছেন। তবে, নিহতরা শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী এবং তাদের বিরুদ্ধে থানায় মাদক মামলা রয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ।
পুলিশ জানায়, রাতে টেকনাফের হ্নীলার ওয়াব্রাংয়ে অভিযান চালিয়ে স্থানীয় বাসিন্দা মো. ইউনুছকে ২০ হাজার ইয়াবাসহ আটক করা হয়। তার স্বীকারোক্তিতে পুলিশ উখিয়ার কুতুপালং ই-ব্লকের ইউচুপ আলীর ছেলে ও স্থলবন্দর ব্যবসায়ী রোহিঙ্গা মো. তাহেরকে আটক করে। তার ভাষ্যমতে, উদ্ধার ইয়াবার প্রকৃত মালিক উখিয়া কুতুপালংয়ের ৯ নম্বার ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মৌলভী বখতিয়ারের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ইয়াবা বিক্রির নগদ ১০ লাখ টাকা এবং ২০ হাজার ইয়াবাসহ তাকে আটক করা হয়।
শুক্রবার ভোরে তাদের নিয়ে মিয়ানমার থেকে আনা হ্নীলার ওয়াব্রাংয়ে আকাশী গাছের বাগানে ইয়াবা ও অস্ত্র উদ্ধারে গেলে তাদের সহযোগী ইয়াবা ব্যবসায়ীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি করে। এ সময় এএসআই মাজহারুল ইসলাম, কনস্টেবল মো. শহিদুল ইসলাম, মো. হাবিব এবং আবু হানিফ আহত হয়। আত্মরক্ষার্থে পুলিশও পাল্টা গুলি করে। পরে অস্ত্রধারীরা পালিয়ে যায়। সেখানে মো. ইউনুছ সুস্থ থাকলেও, ঘটনাস্থল থেকে অপর দুজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে টেকনাফ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের কক্সবাজার প্রেরণ করেন। পরে সেখানকার চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মো. নাসিম বলেন, পুলিশ সদস্যরা তিনজনকে হাসপাতালে নিয়ে আসে। দুজনের শরীরের বিভিন্ন অংশে গুলির চিহ্ন দেখা গেছে। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে কক্সবাজারে পাঠানো হয়। আহত চার পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় পৃথক আইনে মামলা হয়েছে।
সূত্র জানায়, শুক্রবার ভোর পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে ৫৬ জন নিহত হয়েছে। তার মধ্যে ২৬ জন সক্রিয় ডাকাত ছিল। বাকিরা মাদক কারবারি। এদের মধ্যে অধিকাংশই রোহিঙ্গা।
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply