মুজিববর্ষে দেশের প্রতিটি ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘মুজিববর্ষে ২০২০ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে আমরা সব ঘরে আলো জ্বালবো।’ আজ বৃহস্পতিবার (২৭ আগস্ট) ৩১টি উপজেলার শতভাগ বিদ্যুতায়নের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এই কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী একইসঙ্গে দুটি পাওয়ার প্ল্যান্ট, ১১টি গ্রিড সাব-স্টেশন, ছয়টি নতুন সঞ্চালন লাইনও উদ্বোধন করেছেন।
আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে গণভবন থেকে ভার্চুয়াল কনফারেন্সের মাধ্যমে এগুলো উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। এসময় বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ তার মন্ত্রণালয়ের কার্যালয় থেকে অনুষ্ঠানে সংযুক্ত হন। মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং ২৭টি জেলার জনপ্রতিনিধিরাও ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ক্ষমতায় আসার পর আমাদের প্রধান চেষ্টা ছিল রাস্তাঘাটের উন্নয়ন ও বিদ্যুতের ব্যবস্থা। শুধু বাতি জ্বেলে বসে থাকা নয়। বিদ্যুৎ থাকলে কর্মসংস্থানের ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের একটা সুযোগ সৃষ্টি হয়। ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর থেকে আমরা এ পর্যন্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি করতে পেরেছি। বিদ্যুৎ উৎপাদন ও গ্রাহক বাড়িয়েছি।’
সব জায়গায় যাতে বিদ্যুৎ পৌঁছায় সেজন্য সৌর বিদ্যুতের উদ্যোগ নেওয়া হয় বলেও প্রধানমন্ত্রী জানান। ৩১ উপজেলায় শতভাগ বিদ্যুতায়ন উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
২০৪১ সালের মধ্যে দেশে ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী। শহরের পাশাপাশি গ্রামের মানুষও যাতে বিদ্যুৎ পায় সেই ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
মানুষের আর্থিক সক্ষমতা বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য সরকার ভর্তুকিসহ সব ধরনের সহযোগিতা করছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত সরকারের আমলে দেখা যেতো বাজেটের আগে গোপালগঞ্জের জন্য অনেক উন্নয়নের কথা বলা হতো। কিন্তু বাজেটের সময় দেখা যেতো সেই টাকা কোথায় জানি চলে গেছে। গোপালগঞ্জে বিদ্যুৎ পেতাম না। জেনারেটর চালিয়ে বাতি জ্বালতে হতো। আমরা সেভাবে কোনও জেলার উন্নয়ন করি না। তার একটি দৃষ্টান্ত আজ দেখা যাবে। বগুড়া জেলায় ১১০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রের উদ্বোধন করা হচ্ছে। এছাড়া ওই জেলার মহাস্থানগড় ও শেরপুরে বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করা হবে।’
উপকারভোগীদের সঙ্গে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী
গ্রামকে শহরে রূপান্তরিত করা হবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০২০ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে শতভাগ মানুষকে বিদ্যুৎ দেওয়ার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে সরকার। ২০২১ থেকে ২০৪১ সালের মধ্যে ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। সারাদেশে ইকোনমিক জোন করা হচ্ছে, সেখানে বিদ্যুৎ দেওয়া হবে। ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার অংশ হিসেবেই এই উদ্যোগ। গ্রামকে শহরে রূপান্তর করা হবে। সব সুযোগ-সুবিধা যাতে সেখানে পাওয়া যায় সেদিকে নজর দেওয়া হচ্ছে। পল্লি বিদ্যুতের মাধ্যমে ওইসব এলাকায় বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।
বিদ্যুতে ভর্তুকি ও সাশ্রয়ের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘উৎপাদন খরচ কিন্তু বেশি। এখনও ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছে। বিদ্যুৎ উৎপাদনে খরচ যা হয় তার চেয়ে কম দামে সরবরাহ করা হচ্ছে। তাই বলবো বিদ্যুৎ সাশ্রয়ীভাবে ব্যবহার করুন, অপচয় যাতে না হয়। বিলটাও কম আসবে। এটা আমার বিশেষভাবে অনুরোধ। মনে রাখতে হবে সব সময় ভর্তুকি দেওয়া সম্ভব না। তবু উন্নয়নের স্বার্থে এখনও তা দেওয়া হচ্ছে।’
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply