ময়মনসিংহ প্রতিনিধি ঃ ময়মনসিংহের ত্রিশালে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার নুর মোহাম্মদের বিরুদ্ধে একই কর্মস্থলে বছরের পর বছর দায়িত্বে থেকে অনিয়ম ও ঘুষ বাণিজ্যসহ নানান অপকর্মের অভিযোগ উঠেছে । রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের মাধ্যমে গড়ে তুলেছেন শক্তিশালী ঘুষ-দুর্নীতির সিন্ডিকেট । বদলি বাণিজ্য, শিক্ষকদের হয়রানি, ভয়াবহ আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতি । সুন্দরী শিক্ষিকাদের পৌর এলাকার আশেপাশে পোস্টিং অপরদিকে বয়স্ক ও প্রবীন শিক্ষকদের দুর্গম এলাকায় পোস্টিং দেয়া নিয়েও রয়েছে তার বিরুদ্ধে আলোচনা সমালোচনা ।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে তার নিয়োজিত রয়েছে কয়েকজন দালাল । এই দালালদের মাধ্যমে ফাইল না গেলে কোন কাজই তিনি করেন না । হংকার দেন, এখানে আমার খুঁটির জোড় শক্ত। আমাকে কেও বদলী করতে পারবে না। একবার করেছিল আবার চলে এসেছি। ত্রিশালের স্কুলগুলিতে দেয়ালে অংকন করার নামে অর্থ আত্বসাত, মনগড়াভাবে অসহায় শিক্ষকদের অর্থ বরাদ্দের নামে রুপালি ব্যাংকে একাউন্ট খুলেন। স্লিপ বরাদ্দ নিয়েও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নুর মোহাম্মদ কোনো রকম নিয়মকানুনের তোয়াক্কা করেন না । তার কথামত যে শিক্ষকরা ঘুষ দেননা তাদের টাকা আটকে রাখেন।
বেপরোয়া হয়ে অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতা চালিয়ে যাচ্ছেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নুর মোহাম্মদ । জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস , ভূক্তভোগী শিক্ষক, অভিভাবকসহ বিভিন্ন মহল সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সাল থেকে অদ্যাবধি পর্যন্ত বহাল তবিয়তে দায়িত্ব পালন করছেন নুর মোহাম্মদ । এরআগেও তিনি ত্রিশালে ২০১২ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত দায়িত্বে ছিলেন । সেমসয় তার অপকর্ম , সিন্ডিকেট বানিয়ে ঘুষ দুর্নীতি অনিয়মের প্রেক্ষিতে তাকে কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় বদলী করা হয়।
২০১৬ সালে ত্রিশাল উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার হিসাবে সৈয়দ আলী নামের একজন দক্ষ ও সৎ কর্মকর্তা যোগদান করেন । এই সৈয়দ আলীকে ত্রিশাল থেকে বিতারিত করতে নানা ফন্দি ফিকির আটেন নূর মোহাম্মদ । এরই ধারাবাহিকতায় বেনামে সৈয়দ আলীর বিরুদ্ধে নানান বানোয়াট অভিযোগ করে তাকে বদলী করান । আবারও কি মধু আর কি মজা ! যা নিতে ত্রিশালে যোগদান করেন নুর মোহাম্মদ সাবেক জেলা শিক্ষা অফিসারের যোগসাজশে শিক্ষকদের হয়রানি করতেন। এসব করে হাতিয়ে নেন মোটা অংকের টাকা । যদিও তিনি অফিসে আসেন অনিয়মিত। কালে ভদ্রে অফিসে আসলেও বেলা ১২টার পর। শিক্ষকদের ফোন রিসিভ করেন না। মাঝে সাঝে ফোনে পাওয়া গেলেও জানিয়ে দেন তিনি ব্যস্ত আছেন জেলা শিক্ষা অফিসারের সাথে মিটিংএ অথবা রাজনৈতিক কর্মকান্ডে ব্যস্ত আছেন।
অভিযোগ রয়েছে তিনি রাজনৈতিক পরিচয়ে রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে দাঁপিয়ে বেড়ান। যদিও এব্যাপারে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের দাবি যেখানে মিটিংই হয়নি তিনি মিটিংএ থাকেন কিভাবে ?
খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেছে, টাঙ্গাইল জেলা সখিপুর উপজেলা সদরের বাসিন্দা নূর মোহাম্মদ। দুর্নীতি অনিয়মের মাধ্যমে সখিপুরে কোটি টাকার ফিসারি গড়ে তুলেছেন , কিনেছেন জমি জমাও। ত্রিশালে যাতায়াত করেন কমপক্ষে ৩৫ লাখ টাকা দামের প্রাইভেটকারে । এমন গাড়ি শীর্ষ কর্মকর্তারাও ব্যবহার করেন না । সূত্রের দাবি ত্রিশালে ২ বারে কমপক্ষে ৩ কোটি টাকা দুর্নীতি করেছেন নুর মোহাম্মদ । ইতিমধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, শিক্ষা অধিদপ্তর, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে । যার তদন্ত চলছে ।
এব্যাপারে নুর মোহাম্মদের বক্তব্য নিতে তার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও পাওয়া যায়নি।
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply