December 28, 2024, 12:00 pm

তথ্য ও সংবাদ শিরোনামঃ
ভারতে অবৈধপথে প্রবেশকালে দুই নারী আটক। ভারতে ৯ মাস সাজা খেটে দেশে ফিরলেন ৬ জেলে। বরিশালে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নথিপত্র ভর্তি দুটি ট্রাক আটক করে স্থানীয় জনতা। আনন্দ উৎসবে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার মাধ্যমে আমরা ৯৭ নারায়ণগঞ্জের আত্মপ্রকাশ ব্যাংকের ঋণ প্রদানে জামিনদার আইন বাতিল ও জামিনদার মোস্তাক আহমেদের মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন। ভালুকায় হাতেম খানের নিজস্ব অর্থায়নে শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণ বিদেশী মদ, ফেন্সিডিল ভারতীয় পণ্য সহ ২ জন আটক। ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের ধলেশ্বরী টোল প্লাজায় যাত্রীবাহী বাসের ধাক্কায় আহত ১০ নিহত ৫ দুর্নীতি থামাতে না পারলে অর্থনীতি আরো ধ্বংস হবে সচিবালয়ে আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যাওয়া অফিস দেখে বিমর্ষ যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ, শান্তনা দিলেন আরেক উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন। বেনাপোল স্থলবন্দর হ্যাল্ডিং শ্রমিক ইউনিয়নের ত্রিবার্ষিক নির্বাচনে নব নির্বাচিত কমিটির শপথ গ্রহণ। ভালুকায় এক বাগানবাড়িতে হামলা ও মালামল লুটের অভিযোগ ভালুকায় শীতার্ত মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ বাংলাদেশে সা’দ পন্থীদের নিষিদ্ধকরণের দাবীতে ভালুকায় মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ ও গণসমাবেশ ভালুকায় আন্ত ক্যাডার বৈষম্য পরিষদও বিসিএস হেলথ ক্যাডার এসোসিয়েশন এর আয়োজনে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ভালুকায় শিল্প কারখানার কর্মকর্তাদের সাথে প্রশাসনের পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী দেলুর সংবাদ প্রকাশের পর তরুন দলের মহানগর কমিটি বিলুপ্ত সচিবালয়ে র আগুন নেভাতে গিয়ে জীবন প্রদীপ নিভে গেল নয়নের বাংলাদেশের মানচিত্র কায়েদে আজম মুহাম্মদ আলী জিন্নাহর অবদান…..নবাব সলিমুল্লাহ একাডেমী বিবৃতি, আন্ত:মন্ত্রণালয় কর্মচারী এসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দ। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের সেমিনারে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ভাবনার দিক দিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর ব্যবধান ঘটে গেছে নানা আয়োজনে সংবর্ধিত করলেন অবরুদ্ধ বাংলাদেশের লেখক সায়েক এম রহমানকে বিএনপি নেতার হস্তক্ষেপে মন্দিরের জায়গা ফিরে পেলেন সনাতন ধর্মাবলীরা। মানব কল্যাণ পরিষদের বিজয় উৎসবে সেলাই মেশিন ও নগদ অর্থ বিতরণ খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা লাঞ্ছিতের ঘটনায় ভাসানী অনুসারী পরিষদের প্রতিবাদ ও নিন্দা চিকিৎসায় বিদেশ নির্ভরতা কমাতে কিডনী, লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্টেশন, ইনফারটিলিটি সেবা কার্যক্রম গতিশীল করার জোর তাগিদ দিল বিএসএমএমইউ প্রশাসন সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে প্রাণচাঞ্চল্য বিএসএমএমইউতে হেপাটোলজি ও গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি বিষয়ে বিদেশী বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের উচ্চতর শিক্ষার লেকচার প্রদান বিএসএমএমইউ সুপার স্পেশালইজড হাসপাতালে পুনরায় শুরু হলো বহুল প্রতীক্ষিত কিডনী প্রতিস্থাপন সচিবালয়ের ৭ নং ভবনে আগুন, সকল নথিপত্র পুড়ে ছাই। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার থেকে লোপাট হলো ১৪,৯৪০ কোটি টাকা।

শরণখোলায় সভ্যতার শুরুতে গড়ে ওঠা করাতি সম্প্রদায় এখন প্রায় বিলুপ্ত!

শরণখোলায় সভ্যতার শুরুতে গড়ে ওঠা করাতি সম্প্রদায় এখন প্রায় বিলুপ্ত!

নইন আবু নাঈম, বাগেরহাটঃ
প্রাচীন যুগে মানুষ বনে-জঙ্গলে, পাহাড়ের গুহায় বসবাস করতো। মধ্যযুগে এসে একটু একটু করে মানুষ যখন সভ্যতা বুঝতে শিখে, তখন বনের কাঠ-বাঁশ, ডালপালা, লতাপাতা দিয়ে ঘর বানাতে শুরু করে। ধীরে ধীরে উন্নয়ন ঘটতে থাকে সভ্যতার। সৌন্দর্যপ্রিয় হয়ে উঠতে থাকে মানবজাতি। উন্নয়ন ঘটে রুচিবোধেরও। আর তখন থেকেই নিরাপদ বসবাসের জন্য শুরু হয় ঘরবাড়ি নির্মাণ। মানুষ একসময় প্রয়োজনবোধ করে ভালো বাড়ি বাননোর। সুন্দর ও মজবুত বাড়ি বানাতে প্রয়োজন পড়ে গাছ কাটার। শুরুর দিকে লোহার করাতের আবষ্কিার বা ব্যবহার না জানলেও গাছ কাটার বিকল্প উপায় বের করে মানুষ। সঠিক দিনক্ষণ জানা নেই। তবে সভ্যতার বিবর্তনে একসময় আবিষ্কার হয়ে যায় লোহার হাত করাতের। এর পর থেকেই প্রচলন হয় করাত দিয়ে কাঠ চেরাইয়ের। করাতি সম্প্রদায় গড়ে ওঠে সমাজে।

কিন্তু সভ্যতার শুরুতে গড়ে ওঠা সেই করাতি সম্প্রদায় এখন প্রায় বিলুপ্ত। সচরাচর দেখা মেলে না এদের। অঞ্চলভেদে করাতি সম্প্রদায়ের হাতেগোণা দু-একটি পরিবার ধরে রেখেছে তাদের এই পুরনো ঐতিহ্য। তবে, যান্ত্রিক করাত কলের বিস্তার ঘটায় এখন তাদের আর আগের মতোন কদর নেই। আগে তাদের মূল পেশাই ছিল এটি। সারাবছর গ্রামে গ্রামে ঘুরে কাঠ চেরাইয়ের কাজ করতো তারা। গ্রামের পথেঘাটে হাটলে প্রায় বাড়িতেই শোনা যেতো হাত করাতের টানের এক অন্যরকম ছন্দ। কিন্ত এখন তা অতীত। দুর্দিন তাই জীবন-জীবীকার তাগিদে অন্য পেশা বেছে নিয়েছে করাতি সম্প্রদায়ের লোকেরা। বর্তমানে অন্যপেশার পাশাপাশি বছরের মাত্র কয়েকমাস এই কাঠ চেরাইয়ের কাজ করে তারা।

সম্প্রতি বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার আমড়াগাছিয়া গ্রামে দেখা মেলে এই ক্ষহিষ্ণু হাত করাতি সম্প্রদায়ের একটি দলের। খুলনার কয়রা উপজেলার মহারাজপুর গ্রাম থেকে এসেছেন তারা। দলের সদস্য তিনজন। এটি এখন আর মূল পেশা নেই তাদের। কৃষি ও অন্যান্য শ্রমিকের কাজ করেন তারা। শুষ্ক মৌসুরে কয়েকমাস করেন এই করাতির কাজ। তারা শরণখোলাসহ উপকূলের মঠবাড়িয়া, পাথরঘাটার বিভিন্ন গ্রামে কাঠ চেরাইয়ের কাজ করছেন গত ১০-১২বছর ধরে।

করাতি দলের বয়োজ্যেষ্ঠ সদস্য বাবর আলী গাজী ১২বছর বয়েস থেকেই এই পেশায়। এখন তার ৭০। তিনি বলেন, আমার বাপ-দাদারা এই কাজ করতেন। আমি কাজ শুরু করি মামা হাসিব মল্লিকের সঙ্গে। তখন সাতক্ষীরা, খুলনা, কুষ্টিয়া, গোপালগঞ্জ, যশোর অঞ্চলে কাজ করতাম। সেসময় সারাবছরই কাজ হতো। বাপ-দাদার পুরনো পেশা ধরে রাখতেই এখন বছরে দু-চারমাস করি। অন্য সময় এলাকায় কৃষি কাজ করি।

বাবর আলী হতাশা প্রকাশ করে বলেন, কারেন্টের করাত কল গ্রামগঞ্জে ছড়িয়ে গেছে। মানুষ এখন সবকিছু সহজে করতে চায়। তাছাড়া বেশিরভাগ মানুষ পাকা বাড়ি তৈরী করছে। কাঠের ঘর খুবই কম হয়। তাই আমাদের আগের মতোন কদরও নেই। করাতির কাজ করে এখন সংসারও চলে না!
দলের অন্য দুই সদস্য হারুন মল্লিক (৫০) ও আলমগীর মল্লিক (৫৫) বলেন, আগে মজুরি কম হলেও কাজ বেশি হতো। তাতেই পুশিয়ে যেতো। এখন মজুরি বেশি কিন্তু কাজ কম। আগে একটি করাতের দাম ছিল ৭০০টাকা। আর এখন তা সাড়ে তিন-চার হাজার টাকা। অন্যান্য জিনিসপত্রের দামও বেশি। মাসকে মাস বাইরে থেকে খাওয়া খরচও বেশি হয়ে যায়। তাই এই পেশা পরিবর্তন করে আমাদের করাতি সম্প্রদায়ের লোকেরা বেশিরভাগই অন্য পেশায় চলে গেছে। আমাদের এলাকায় বর্তমানে চার-পাঁচটি পরিবার এই পেশায় নিয়োজিত আছে।

যান্ত্রিক করাত এবং হাত করাতে কাঠ কাটার গুণগত কোনো পার্থক্য আছে কি না জানতে চাইলে তারা বলেন, হাত করাতে কাঠের আশ ধরে কাটা হয়। একারণে কাঠ মজবুত হয়। মালের পরিমানও বেশি হয়। আর কারেন্টের মিলে কাটলে কাঠের অপচয় হয় বেশি। মিলে যেভাবে খুশি সেভাবেই কাটার ফলে দেখতে সুন্দর হলেও আশ কেটে কাঠ দুর্বল হয়ে যায়। তাছাড়া, হাত করাত পরিবেশ বান্ধব। আগের যুগে হাত করাত দিয়ে কাটা কাঠের ঘর একশ’-দেড়শ’ বছর বয়স পেতো। কিন্তু এখন বছর যেতে না যেতেই কাঠের ঘর ভেঙে পড়ে। যারা হাত করাতে কাটার গুনাগুণ সম্পর্কে জানে-বোঝে তারাই আমাদেরকে ডাকে।

করাতিরা জানান, তাল গাছ কাটা হয় হাত হিসেবে। এক হাত তাল গাছ ১৬০ থেকে ২০০টাকা। অন্যান্য গাছের তৈরী ঘরের খুঁটি, আড়া, কাচপাইড়, পেটি আট হাতি ২০পিচ তিন হাজার টাকা। চটা, রুয়া ও অন্যান্য মালামাল আট হাতি ২০পিচ চেরাই করেন আড়াই হাজার টাকা করে। তিন-চার মাসে সমস্ত খরচ বাদে তারা একেক জন ১৮-২০হাজার টাকা আয় করেন। বাকি সময় এলাকায় অন্য কাজ করে কোনোরকম খেয়েপরে আছেন তারা।

শরণখোলা সরকারি কলেজের সহকারী অধ্যাপক ও সমাববিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান এইচ এম আব্দুল হালিম বলেন, তথাকথিত জমিদাররা বাদে আগের কালে সবাই কাঠ দিয়ে ঘরবাড়ি তৈরী করতো। এজন্য হাত করতিরাই ছিল একমাত্র ভরসা। এখন এই সম্প্রদায় নেই বলেলই চলে। প্রযুক্তির উন্নয়নে হারিয়ে যাচ্ছে সম্প্রদায়টি। হাতে কাঠ কাটতে সময় ও খরচ বেশি। তাই যেটা সহজ সেটাই বেছে নিচ্ছে মানুষ। তবে, হাত করাতি সম্প্রদায় আমাদের গ্রামবাংলার ঐতিহ্য বহন করে। বাঙালী ঐতিহ্যের স্মারক হিসেবে এই সম্প্রদায়কে রক্ষা করা প্রয়োজন বলে আমি মনে করি।

আমাদের প্রকাশিত তথ্য ও সংবাদ আপনার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)

Design by Raytahost.com