নিজস্ব প্রতিনিধিঃ আনোয়ার হোসেন যশোর।
যশোর বেনাপোলে কেশবপুর বিএনপির নেতাকর্মীদের উপর হামলা করে আহত সহ ভাংচুরের অভিযোগ উঠেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। পৃথক দুটি ঘটনায় উপজেলা বিএনপির প্রায় ৩০ নেতাকর্মী গুরুতর জখম হয়ে হাসপাতাল ও বাড়িতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
গতকাল সোমবার দুপুরে প্রেসক্লাব যশোরে জেলা বিএনপির ব্যানারে সংবাদ সম্মেলনে এমন দাবি করেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু। এই ঘটনায় বিএনপির নেতাকর্মীরা পুলিশকে অবহিত করলেও কোন প্রতিকার মেলেনি। এমনকি পুলিশ মামলাও নিচ্ছে না বলে অভিযোগ নেতাদের।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেন, হামলাও ভাঙচুরের ঘটনায় পুলিশকে অবহিত করলেও কোন প্রতিকার মেলেনি। এমনকি তারা মামলাও নিচ্ছে না।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত ২১ আগস্ট রোববার রাতে যশোর বেনাপোলে কেশবপুর উপজেলা শহরে ৫০-৬০ টি মোটরসাইকেল নিয়ে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা মহড়া চালায়। এ সময় তারা খুঁজে খুঁজে বিএনপি ও যুবদলের নেতাকর্মীদেরকে বেধড়ক মারপিট ও ছুরিকাঘাত করে। এই ঘটনায় অন্তত ১৫ জন আহত হয়। তাদের মধ্যে ৯ জনকে খুলনা ও যশোরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া গত ১৬ আগস্ট সন্ধ্যায় বেনাপোল বাজারে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করে স্থানীয় বিএনপি। এসময় আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা অনুষ্ঠানে হামলা চালিয়ে বেধড়ক মারপিট করে ১১ নেতাকর্মীকে আহত করেন। তারা সকলেই যশোর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। নেতৃবৃন্দ বলেন, জ্বালানি তেলসহ দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির প্রতিবাদে বিএনপি ও তার অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা যখন আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে, ঠিক তখন ত্রাস সৃষ্টির লক্ষ্যে আওয়ামী লীগ হামলা, ভাঙচুর চালাচ্ছেন।
সংবাদ সম্মেলনে বেনাপোল পৌর বিএনপির সভাপতি মোঃ নাজিম উদ্দিন ও কেশবপুর পৌর বিএনপির সভাপতি আব্দুস সামাদ বিশ্বাস নিজ নিজ এলাকায় হামলার চিত্র তুলে ধরেন।
সংবাদ সম্মেলনে জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু বলেন, বতর্মান সরকার রাজনৈতিক সংকটে আবর্তিত হয়েছে। যেকারণে তারা দেশব্যাপী সন্ত্রাসী কর্মকা-ের মহোৎসবে মেতে উঠেছে। সন্ত্রাসীরা একের এক পর অতর্কিত হামলা চালিয়ে অসংখ্য বিএনপি নেতাকর্মীকে গুরুতর জখম করছেন। দেশব্যাপী চালানো তাদের সেই সন্ত্রাসী কর্মকা ধারাবাহিকতায় গেলা ১৬ আগস্ট বেনাপোলে বিএনপির শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি দোয়া মাহফিলে যুবলীগনেতা নেতৃত্বাধীন, যুবলীগ, ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ হামলা চালায়। হামলায় বিএনপি নেতা সাবেক চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান মিলন, বেনাপোল পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আক্তারুজ্জামান আক্তারসহ ১৫ জন আহত হন। সর্বশেষ গত রোববার রাতে কেশবপুর পৌর সদরে গণি শেখের ছেলে জামালের নেতৃত্বাধীন স্থানীয় যুবলীগ, ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের ৭০ থেকে ৮০ জন ৫০ থেকে ৬০ মোটর সাইকেলে অস্ত্রসহকারে মহড়া দেয়। এসময় সন্ত্রাসীরা কেশবপুর পৌর সদরের বিভিন্ন স্থানে বিএনপিসহ দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী দেখা মাত্রই হামলা করে। মারপিট করে পৌর স্বেচ্ছাসেক দলের আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর কবির পলাশের মেরুদন্ড ভেঙে দিয়েছে। আহত হয়েছে অন্তত ১৫ জন। এঘটনায় কেশবপুর পৌর সদর জুড়ে ব্যাপক আতঙ্ক সৃষ্টি হয় এবং ব্যবসীয়ারা ভিত সন্ত্রস্ত হয়ে দোকান ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। গতকাল সোমবার সকাল থেকে আবার সংঘবদ্ধ হয়ে মহড়া অব্যাহত রেখেছে।
তবে জেলা বিএনপির অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা দাবি করে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা শহিদুল ইসলাম মিলন বলেন বিএনপি নেতারা এখন জনগণ থেকে অনেক দূরে। নিজেদের মধ্যে দলীয় কোন্দলে তাদের এই সংঘর্ষ ঘটতে পারে। আমাদের আওয়ামী লীগের কোন নেতাকর্মী বা ছাত্র-যুবলীগ তাদের উপর কোন হামলা চালায়নি।
যশোরের এএসপি জুয়েল ইমরান বলেন, এই বিষয়ে কেউ কোন অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক নার্গিস বেগম, যুগ্ম-আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকন, দলের সাবেক কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক মফিকুল হাসান তৃপ্তি, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবুল হোসেন আজাদ, জেলা আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আব্দুস সালাম আজাদ, মিজানুর রহমান খান, মারুফুল ইসলাম, মুনির আহমেদ সিদ্দিকী বাচ্চু, অ্যাড. হাজী আনিছুর রহমান মুকুল প্রমুখ।
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply