জ্বালাও-পোড়াও, জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িকতাসহ দেশি-বিদেশি নানা ষড়যন্ত্র, বাধা ও চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে শেখ হাসিনার হাত ধরে এগিয়ে চলছে বাংলাদেশ। বতর্মান সরকারের সময়ে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিদ্যুৎ, যোগাযোগ, তথ্যপ্রযুক্তি, ক্রীড়া, পরিবেশ, কৃষি, খাদ্য, টেলিযোগাযোগ, সংস্কৃতি, সামাজিক নিরাপত্তা, মানবসম্পদ উন্নয়ন এমন কোনো খাত নেই যে খাতে অগ্রগতি সাধিত হয়নি। শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে গত কয়েক বছরে দেশে অবকাঠামো উন্নয়ন, দারিদ্র্য বিমোচন, পুষ্টি, মাতৃত্ব এবং শিশু স্বাস্থ্য, প্রাথমিক শিক্ষা, নারীর ক্ষমতায়ন ইত্যাদি ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। যা দেশের গন্ডি পেরিয়ে প্রশংসিত হয়েছে আন্তর্জাতিক মহলেও।
নিজস্ব অর্থায়নে প্রমত্তা পদ্মার ওপর ৬ দশমিক ১ কিলোমিটার দির্ঘ সেতু নিমার্ণ করার সাহস দেখিয়েছে বাংলাদেশ। বিশ্বব্যাংক অথার্য়ন থেকে সরে যাওয়ার পর বিশাল এ প্রকল্প হাতে নেয়ার ঘটনা অনেক দেশ ও সংস্থার সন্দেহ ও বিস্ময় প্রকাশ করলেও সে স্বপ্ন এখন দৃশ্যমান। ২০৪১ সালে উন্নত দেশে উন্নীত হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে দ্বিতীয় পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগও চলমান। রয়েছে মহাকাশ জয়ের লক্ষ্য। দেশের প্রথম স্যাটেলাইট ‘বঙ্গবন্ধু-১’ মহাকাশে উৎক্ষেপণ করা হয়েছে। এ ছাড়া মেট্রোরেল, এলিভেটেট এক্সপ্রেস, কর্ণফুলী ট্যানেলসহ কিছু বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার। দেশের প্রথম ৬ লেনের ফ্লাইওভার নিমার্ণ কাজ নির্ধারিত সময়ের আগেই সম্পন্ন হয়েছে।
শেখ হাসিনা সরকারের শাসনামলেই কোনো রকম যুদ্ধ-সংঘাত বা বৈরিতা ছাড়াই দুই প্রতিবেশী ভারত ও মিয়ানমারের বিপক্ষে সমুদ্র বিজয় নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ। বঙ্গোপসাগরে ১ লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ বগির্কলোমিটারের বেশি টেরিটরিয়াল সমুদ্র, ২০০ নটিক্যাল মাইল এলাকায় একচ্ছত্র অথৈর্নতিক অঞ্চল এবং চট্টগ্রাম উপকুল থেকে ৩৫৪ নটিক্যাল মাইল পযর্ন্ত মহীসোপান এলাকার প্রাণিজ ও অপ্রাণিজ সম্পদের ওপর সার্বভৌমত্ব অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এ ছাড়া স্বাধীনতার পরপর ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে যে স্থল সীমান্ত চুক্তি হয়েছিল সম্প্রতি তা বাস্তবায়নের মাধ্যমে ছিটমহল সমস্যার সমাধান করা বাংলাদেশের বড় অজর্ন বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। সর্বশেষ রোহিঙ্গা ইস্যুতেও আন্তর্জাতিক ভাবে প্রশংসা পেয়েছে বাংলাদেশ। জাতিসংঘসহ বিশ্বের প্রায় সব দেশ ও সংস্থা এই ইস্যুতে বাংলাদেশের ভূয়সি প্রশংসা করে পাশে রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পেয়েছেন ‘মাদার অফ হিউম্যানিটি’ উপাধি। তলাহীন ঝুড়ির বাংলাদেশ আজ ১০ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেয়ার পাশাপাশি খাদ্য, বস্ত্র-চিকিৎসার দায়িত্বও পালন করছে।
পিপলস অ্যান্ড পলিটিকস, বিশ্বের পাঁচজন সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানকে চিহ্নিত করেছেন, যাদের দুর্নীতি স্পর্শ করেনি, বিদেশে কোনো ব্যাংক একাউন্ট নেই, উল্লেখ করার মতো কোনো সম্পদও নেই। বিশ্বের সবচেয়ে সৎ এই পাঁচজন সরকারপ্রধানের তালিকায় তৃতীয় স্থানে আছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ ছাড়াও কাজের অবদানের জন্য তাকে নানা পুরস্কারে ভূষিত করা হয় আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার পক্ষ থেকে।
২০১৪ সালে ইউনেস্কো তাকে ‘শান্তির বৃক্ষ’ ও ২০১৫ সালে ওমেন ইন পার্লামেন্টেস গ্লোবাল ফোরাম নারীর ক্ষমতায়নের জন্য তাকে রিজিওনাল লিডারশিপ পুরস্কার এবং গ্লোবাল সাউথ-সাউথ ডেভেলপমেন্ট এক্সপো-২০১৪ ভিশনারি পুরস্কারে ভূষিত করে। বাংলাদেশের কৃষির উন্নয়নে অব্যাহত সমর্থন, খাদ্য উৎপাদনে সয়ম্ভরতা অজর্ন এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নয়নে অবদানের জন্য আমেরিকার কনের্ল বিশ্ববিদ্যালয় ২০১৫ সালে তাকে সম্মাননা সনদ প্রদান করে। জাতিসংঘ পরিবেশ উন্নয়ন কমর্সূচি দেশে এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পরিবেশ এবং টেকসই উন্নয়নে অসামান্য অবদান রাখার জন্য লিডারশিপ ক্যাটাগরিতে শেখ হাসিনাকে তাদের সবোর্চ্চ পুরস্কার ‘চ্যাম্পিয়ন অব দ্যা আর্থ-২০১৫’ পুরস্কারে ভূষিত করেছে।
টাইম ম্যাগাজিনের বিবেচনায় বিশ্বের প্রভাবশালী ১০ নারী নেত্রীর একজন মনোনীত হয়েছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। একজন জাতীয়তাবাদী নেতা হিসেবে শেখ হাসিনা সবসময় নিজেকে প্রমাণ করেছেন। মধ্যপ্রাচ্যের শীষর্স্থানীয় দৈনিক খালিজ টাইমস রোহিঙ্গাদের সংকট মোকাবেলায় শেখ হাসিনার মানবিক দৃষ্টিভঙ্গির জন্য তাকে ‘নিউ স্টার অব দ্য ইস্ট’ বা ‘পূর্বের নতুন তারকা’ হিসেবে আখ্যায়িত করে।
বিগত বছরে দেশজুড়ে যতসব প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে তার সব কৃতিত্ব বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার। তাই বাস্তবায়নাধীন প্রকল্প শেষ করার জন্য এবং দেশের উন্নয়নে আরও নতুন নতুন প্রকল্প নেয়ার জন্য আবারও শেখ হাসিনাকে দেশবাসীর প্রয়োজন। তাই তারা তার দল আওয়ামী লীগকে বিপুল ভোটে জয়ী করবে। সম্মানিত ভোটাররা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়ন এবং শান্তির পক্ষে অবস্থান গ্রহণ করবে।
সরকারের ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করার জন্য জনগণ নৌকায় ভোট দিয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার দলকে নির্বাচিত করবে। তিনিই বিশ্বের দীঘর্স্থায়ী নারী সরকারপ্রধান। তাকে আমাদের প্রাণঢালা অভিনন্দ।
মোহাম্মদ আহসান হাবীব,
সাংবাদিক, মানবাধিকার কর্মী, সংগঠক, লেখক ও গবেষক,
ব্যাবস্থাপনা পরিচালক, দুরন্ত সত্যের সন্ধানে-দূসস
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply