মানস বন্দ্যোপাধ্যায় ( ব্যানার্জি) দিল্লি থেকেঃ আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে। পুতিনের অপরাধ, রাশিয়া ইউক্রেনের যুদ্ধে ইউক্রেনের শিশুদের অবৈধ যুদ্ধে জড়িয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এমনই সব অভিযোগে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত। এই অভিযোগকে সম্পূর্ন অস্বীকার করা হয়েছে মস্কোর তরফে। আইসিসির এই পদক্ষেপকে অন্যায় এবং অর্থহীন বলেছে রাশিয়া।
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত তথা ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইম কোর্ট বা আইসিসি তৈরি হয় ২০০২ সালে। বিশ্বের ১২৩ টি দেশ এর সদস্যভুক্ত রয়েছে। এর মধ্যে বেশি মাত্রায় সক্রিয় ইউক্রেন ছাড়াও, আফ্রিকার উগান্ডা, ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অফ কঙ্গো, কেনিয়া, ল্যাটিন আমেরিকার ভেনিজুয়েলা, এশিয়ার মায়ানমার এবং ফিলিপাইনের মতো ১৭ টি দেশ।
মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ, যুদ্ধাপরাধ, গণহত্যা এবং আগ্রাসনের অপরাধ বিচার করার জন্য আইসিসি বা ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্ট তৈরি করা হয়েছিল ২০০২ সালে। এটি সদস্য রাষ্ট্রের নাগরিকদের বা তাদের ভূখণ্ডে অন্য দেশের দ্বারা সংগঠিত অপরাধের বিচার করতে পারে।
তবে আশ্চর্যের বিষয়, আন্তর্জাতিক আদালতে সমর্থন করলেও বেশ কিছু শক্তিধর দেশ এর সদস্যপদ গ্রহণ করেনি। রাষ্ট্রসংঘ এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের বহু দেশ এই আদালতকে সমর্থন করলেও আমেরিকা, চিন এবং রাশিয়ার মতো বহু দেশ এখনও আইসিসির সদস্য নয়। এপর্যন্ত বেশকটি মামলা ও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। আইসিসির ওয়েবসাইট অনুসারে এখনও পর্যন্ত আদালতে ৩১ টি মামলা হয়েছে। সেখানকার বিচারকরা এখনও পর্যন্ত ৩৮ টি গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন। এদের মধ্যে ২১ জনকে আইসিসির ডিটেনশন সেন্টারে রাখা হয়েছে এবং আদালতে হাজির করানো হয়েছে। ১৪ জনকে পলাতক দেখানো হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে দারফুরে গণহত্যায় অভিযুক্ত প্রাক্তন সুদানী নেতা ওমর আল বশির।
আর মৃত্যুজনিত কারণে পাঁচজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে নেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে বিচারকরা ১০ জনকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন এবং ৪ জনকে অভিযোগ মুক্ত করেছেন।
আইসিসির ওয়েবসাইট অনুসারে ইউক্রেন নিয়ে তদন্ত শুরু করা হয়েছিল ২০২২-এর ২ মার্চ। ২০১৩ সালের নভেম্বর থেকে ইউক্রেনের সংঘটিত অপরাধের কথা সেখানে বলা হয়েছে। প্রসঙ্গত ২০১৩ সালে ইউক্রেনের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ভিক্টর ইয়ানুকোভিচেকের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু হলে তিনি ২০১৪ সালে রাশিয়ায় পালিয়ে যান।
কী হতে পারে সর্বোচ্চ শাস্তি? যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের কারণে যে পাঁচজনকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে, তাদের মধ্যে রয়েছেন ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অফ কঙ্গো, মালি ও উগান্ডার অস্ত্রধারী নেতারা। শান্তি হিসেবে ৯ থেকে ৩০ বছরের জেল আর সর্বোচ্চ শাস্তি হল যাবজ্জীবন কারাদণ্ড।
আরেকটি উল্লেখযোগ্য খবর হলো, রাষ্ট্রসংঘ ইউক্রেনের ওপর যুদ্ধ বন্ধ করার প্রস্তাব দিয়েছে। এই প্রস্তাবের ভোট দান কালে ভারত ও চিন ভোটদানে বিরত থেকেছে।
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply